এবারও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে হচ্ছে না বসন্ত উৎসব। বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিজেদের মতো করে ৩ মার্চ বসন্ত–বন্দনা করবে। সাধারণ মানুষের প্রবেশে জারি থাকবে নিষেধাজ্ঞা। এই বসন্ত–বন্দনায় শুধুমাত্র বিশ্বভারতীর পড়ুয়া, কর্মী এবং অধ্যাপকদের মধ্যেই পরিসর সীমিত রাখা হয়েছে। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বিশ্ববিদ্যালয়ের পেনশনার, প্রাক্তনী এবং আশ্রমিকদের। এমনকী স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদেরও প্রবেশাধিকার থাকবে না। শুক্রবার এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে।
এদিকে প্রথা ভেঙে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বছর নিজস্ব বসন্তোৎসব পালিত হবে ৩ মার্চ ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্তে শুরু হয়েছে বিতর্ক। প্রথা ভাঙা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কর্তৃপক্ষের এই আচরণে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ সকল স্তরের মানুষজন। ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ দেখা গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। অভিযোগ, এতে প্রচুর ক্ষতির মুখে পড়ছেন হোটেল ব্যবসা এবং পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা। এই পরিস্থিতির জন্য অনেকে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে দায়ী করেছেন। তাঁর আমলে আগাগোড়া বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে বিশ্বভারতীর মতো ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। উপাসনা গৃহ ও অন্যান্য মঞ্চ ব্যবহার করে প্রাক্তনী, আশ্রমিকদের কটাক্ষ করেন তিনি। এমনকী নানা কারণে এলাকাবাসীর সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক মধুর নয়। তাই বসন্ত–বন্দনায় সংশ্লিষ্টদের উপেক্ষা করেছেন তিনি।
অন্যদিকে হোলির চারদিন আগে ৩ তারিখে বিশ্বভারতী বসন্ত–বন্দনার মধ্যে দিয়ে বসন্ত উৎসব পালন করবে। ৭ মার্চ দোল উৎসব। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ যে সূচি প্রকাশ করেছে সেখানে দেখা যাচ্ছে, ২ মার্চ সন্ধ্যায় লোক সংস্কৃতি অনুষ্ঠান হবে। ৩ মার্চ ভোরে বৈতালিক এবং সন্ধ্যা ৭টায় শোভাযাত্রা। সেখানে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষেধ। শুধু উপস্থিত থাকতে পারবেন বিশ্বভারতীর কর্মী, অধ্যাপক ও পড়ুয়ারা। দোলের দিন ৭ মার্চ গৌরপ্রাঙ্গণে পূর্ণদাস বাউলের গানের অনুষ্ঠান রয়েছে। সাধারণত, ফাল্গুন মাসের প্রথমদিনে ঋতুরাজকে স্বাগত জানিয়ে পাঠভবনের কচিকাঁচারা ‘বসন্ত আবাহন’ উদযাপন করে। দোলের আগের দিন সন্ধ্যায় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ‘বসন্ত বন্দনা’ ও দোলের দিন ‘বসন্ত উৎসব’ উদযাপন করে বিশ্বভারতী। কিন্তু এবার বসন্ত উৎসবের পরিবর্তে ‘বসন্ত বন্দনা’ নাম রাখা হয়েছে। এভাবে ঐতিহ্যবাহী উৎসবের নাম নিয়ে কাটাছেঁড়া করা হওয়ায় সমালোচনা চরমে উঠেছে।