শুভব্রত মুখার্জি: ২০০০ সালে ভারত সফরে এসেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা দল। তখন সবে মাত্র ভারতীয় দলের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পেয়েছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ঘরের মাঠে সেই সিরিজে টানটান লড়াইয়ের পরে ভারত হারিয়ে দিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে। সিরিজ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেই সামনে এসেছিল এমন একটি তথ্য, যা কার্যত নড়িয়ে দিয়েছিল গোটা ক্রিকেট বিশ্বকে। তৎকালীন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক হ্যান্সি ক্রোনিয়ে মেনে নিয়েছিলেন তিনি ম্যাচ গড়াপেটা করেছেন। আর তাঁর সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছিলেন হার্সেল গিবসের মতন ক্রিকেটারের নামও। সেই ঘটনায় দীর্ঘ দিন চলেছে পুলিশি তদন্ত। মাঝে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন হ্যান্সি ক্রোনিয়ে। সেই ঘটনার ২৪ বছর পরে ওই ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের ম্যাচ গড়াপেটা কান্ডে গঠন হল চার্জশিট।
দিল্লির এক কোর্টের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে চার্জশিট গঠনের জন্য। ক্রিমিনাল কন্সপিরেসি ( ষড়যন্ত্র) এবং চিটিংয়ের কারণে চার জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নিউ দিল্লির এক কোর্টের তরফে। ২০০০ সালে ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের একাধিক ম্যাচ গড়াপেটা করার কারণে ওই চার ব্যক্তির বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠন করা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের মতে, যে চার ব্যক্তির বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠন করা হয়েছে তারা হলেন রাজেশ কালরা, কৃষান কুমার, সুনীল দারা এবং সঞ্জীব চাওলা। এই সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে অ্যাডিশনাল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নেহা প্রিয়ার তত্ত্বাবধানে।
আরও পড়ুন: খেলার হলে খেলো, আমরা টিম পাঠাব না- পাকিস্তানের লাইভ টিভি শো-তে চাঁচাছোলা হরভজন
চানক্য পুরী পুলিশ স্টেশনে বিষয়টি নিয়ে একটি কেস দায়ের করা হয়েছে । সেখানেই দায়ের করা হয়েছে চার্জশিট। বেশ কিছু বিষয়ের উপর ভিত্তি করে কোর্ট এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। পারিপার্শ্বিক নানা পরিস্থিতি, রেকর্ড করা কথোপকথন, অভিযুক্তদের আচার-আচরণের উপর নির্ভর করেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে কোর্ট। প্রমাণের উপর ভিত্তি করে দেখা গিয়েছে এই চার জনের যৌথ প্রচেষ্টায় এই গড়াপেটা করা হয়েছে। যাদের মধ্যে পুরো বিষয়টি নিয়ে স্বর্গীয় হ্যান্সি ক্রোনিয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন চাওলা। কোর্ট তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ৪২০, ১২০ বি ধারায় কেস দাখিল করেছে। বিষয়টি নিয়ে একটি ৬৮ পাতার অর্ডার দেওয়া হয়েছে কোর্টের তরফে। যেখানে দর্শকদের সঙ্গে চিটিংবাজি এবং বিসিসিআই-এর মতন সংস্থার নাম খারাপ করার চেষ্টাকেও সামনে রাখা হয়েছে। ম্যাচের ফলাফল নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থে বদলানোর চেষ্টার চার্জও আনা হয়েছে। ৩১ জুলাই বিষয়টি নিয়ে পরবর্তী শুনানি রয়েছে। এই শুনানিতে ওই চার ব্যক্তির ম্যাচ গড়াপেটার সঙ্গে যোগসাজশের বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখা হবে।