আইপিএলে বুমরাহ যতদিন চোটের জন্য মাঠের বাইরে ছিলেন, মুম্বই ইন্ডিয়ান্সও ধারাবাহিকতার ধারে কাছে ছিল না। বলা যায়, তাঁরা পরপর হেরেই চলেছিল। কিন্তু হার্দিক পাণ্ডিয়ার দলে বুমরাহ যোগ দেওয়ার পরই বদলে যায় মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের চিত্রটা। একটা সময় বাংলাদেশের মতো বোলিং অ্যাটাক ছিল এমআইয়ের, কিন্তু বুমরাহ দলে যোগ দিতেই সেটা যেন ২০০৩ বিশ্বকাপের অস্ট্রেলিয়াল বোলিং অ্যাটাকের মতো লাগছে এখন। প্রত্যেকটা ম্যাচেই বুমরাহ-র ওর ৪ ওভারই আইপিএলে পার্থক্য গড়ে দিচ্ছে। এর আগে ২০২৪ টি২০ বিশ্বকাপের প্রায় প্রতি ম্যাচেই তেমনই হয়েছিল। নিখুঁত ইয়র্কারে বুমরাহ যেভাবে নিজের টেকনিক কাজে লাগাচ্ছেন, তাতে ব্যাটাররা কিছুই করতে পারছেন না। আগের ম্যাচে বুমরাহ যদি চার ওভারে ২৭ রান না দিয়ে একটু বেশি রান দিতেন, তাহলেই খেলা ঘুরে যেত। সেই ম্যাচে সব থেকে ইকোনমিকাল বোলারও বুমরাহই। ওয়াসিংটন সুন্দরকে বোল্ড আউট করে কার্যত মাটিতে শুইয়ে দিয়েছিলেন।
বুমরাহ-র এমন পারফরমেন্স দেখেই ভারতীয় দলের প্রাক্ত পেসার বরুণ অ্যারণ বলছিলেন, ‘ও হচ্ছে একটা অ্যান্টিডোটের মতো। এমন একটা ভ্যাকসিন, যে সব রোগই ঠিক করে দিতে পারে, যেটা সব বোলিং অ্যাটাকেরই দরকার। উইকেট লাগলে ও এসে উইকেট এনে দেবে, যদি রান আটকাতে হয়, তাহলে ও এসে রানও আটকে দেবে। কি অনবদ্য একজন বোলার ’।
এরপরই অ্যারন জানান, মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের কোচ মহেলা জয়বর্ধনে বুমরাহকে কোনও উপদেশ দিতে গেলে, সেটাও মুম্বইয়ের পেসার শোনেননা। তাঁর কথায়, ‘বুমরাহ-র নিজের ওপর অগাধ আত্মবিশ্বাস আছে। মহেলা জয়বর্ধনের মতো একজন এমন কোচ চিন্তায় পড়ে গেছে,কারণ ওর বোলাররা রান দিয়ে দিচ্ছে। আর বুমরাহ সেখানে ওকে বোঝানোর চেষ্টা করছে, শান্ত রাখার চেষ্টা করছে। আর বুমরাহ এল, বল করল, একটা ছয় খেল, আর তার পরের বলেই এল সেই উইকেটটা ’।
প্রসঙ্গত, এবারের আইপিএলে টপ থ্রিতে থাকা দলগুলোর বিরুদ্ধে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের পারফরমেন্স ভালো ছিল না গ্রুপ স্টেজে। কিন্তু এখন নকআউটে এসে সেই টপ থ্রির তিনটি দলের বিরুদ্ধে জিতেই রোহিত শর্মা, হার্দির পাণ্ডিয়াদের ষষ্ঠ ট্রফি জিততে হবে। এখনও পর্যন্ত জসপ্রীত বুমরাহ ১৮ উইকেট নিয়েছেন। মুম্বইয়ের হয়ে কোয়ালিফায়ার ২-তে পঞ্জাবের বিরুদ্ধেও বুমরাহ-র পারফরমেন্সই দুই দলের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দিতে চলেছে, সেকথা বলাই যায়।