টলিউডের প্রথম সারির পরিচালকদের মধ্যে অন্যতম তিনি। তাঁর ছবি 'শব্দ', 'অপুর পাঁচালী', 'অর্ধাঙ্গিনী' বাংলা ছবির দর্শকদের পছন্দের তালিকার প্রথম সারিতে রয়েছে। তাছাড়াও একের পর এক ভালো ভালো ছবি কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় বাংলা ইন্ড্রাস্টিকে উপহার দিয়ে চলেছেন। কিন্তু এই সবের মধ্যেও হঠাৎ সমাজমাধ্যমের পাতায় কেন পরিচালক লিখলেন যে, ‘আমরা সবাই এই পরিস্থিতির ভিকটিম…’? কী এমন ঘটল?
আসলে নন্দিতা রায় ও শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের আসন্ন ছবি আমার বস দেখে এমন কথা লিখেছেন পরিচালক। আর একটু খোলসা করে বলা যাক। বৃহস্পতিবার কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় ‘আমার বস’ দেখার পর তাঁর অনুভূতির কথা ভাগ করে স্যোশাল মিডিয়ায় একটি লেখা পোস্ট করেন।
আরও পড়ুন: দেশের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য হলে মুক্তি পাচ্ছে না রাজকুমারের ছবি! ওটিটি রিলিজ কবে?
পরিচালক লেখেন, ‘উইন্ডোজের থিয়েটারে একা বসে দেখলাম ওদের নতুন ছবি আমার বস। আগামিকালই ছবির শুভমুক্তি। কে কেমন বা কারা আছেন সেসব লিখে দীর্ঘ করব না। আমি চিত্রসমালোচক নই তাই আমার এই লেখায় দর্শকের ও একজন নাগরিকের উচ্চারণই শোনা যাবে। প্রথমেই কৃতজ্ঞতা জানাই উইন্ডোজকে, কারণ ধারাবাহিক ভাবে নানা স্বাদের ছবিতে তারা যে ভাবে সামাজিক দায়িত্ববোধের পরিচয় দিয়ে চলেছেন তার জন্য। বিনোদনের অযুহাতে চোখ ধাঁধানো কোনো ভেল্কি বা ম্যাজিকের পথ তাঁরা নেননি। সরল বিস্তারে অত্যন্ত আধুনিক, জরুরি একটা বিষয়কে সযত্নে রুচিশীল ও পারিবারিক ভাবে তুলে ধরেছেন।’
তারপর অভিনেতা বেলাশেষের প্রসঙ্গ টেনে লেখেন, ‘বেলাশেষে ছবিতে একটা নির্দিষ্ট পরিবারের ইউনিক একটা পরিস্থিতি ছিল, কিন্তু এই ছবি ৯৮% দর্শকের বুকে গেঁথে যাবে। তার মূল কারণ আমরা সবাই এই পরিস্থিতির ভিকটিম। যে বিনোদন মনে ব্যক্তিগত অপরাধবোধ ও অনুশোচনা তৈরি করতে পারে, তার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিতর্কের কোনও অবকাশ নেই। কোনও অনুপ্রেরণা বা অবলম্বনে নয় , এটা বরং বলব অধিকাংশ নাগরিকের বায়োপিক। প্রতিটি সংসারে এই ছবির বিষয়টি অস্থির ভাবে সমাধান খুঁজে মরছে রোজ। ঠিক তখনই আমার বস একটা অসামান্য মডেল তুলে ধরলো কর্পোরেট জগতের সামনে।’
আরও পড়ুন: 'যে অপমান করেছেন তা আমরা সহ্য করতে পারছি না…', কন্নড় ছবি থেকে বাদ পড়ল সোনু নিগমের গান!
তাঁর কথায়, ‘প্রতিদিন কাজের জগৎ ও কাজের ভঙ্গি বদলাচ্ছে, সেই বদলের একটা অপূর্ব প্রস্তাব হয়ে থেকে যাবে এই ছবি। যদি সত্যি কোনও দিন এই ছবি বাস্তব হয়ে ওঠে দেশজুড়ে, সেদিন মা ও মাতৃভূমি একসঙ্গে খুশি হবেই। প্রত্যেকের দেখা উচিত এই ছবি, কারণ জন্ম থেকে আমাদের সবার বস, মা।’
পরিচালক খানিক আবেগপ্রবণ হয়েই তাঁর মায়ের মৃত্যুর যন্ত্রণার কথা উল্লেখ্য করে লেখেন, ‘যাঁদের মা আমার মতো চলে গেছেন, তারা আফসোস করবেন, আর যাঁদের মা এখন আছেন, তাঁরা চোখে জল নিয়ে ভাবতে বসবেন। সৎ ছায়াছবি তার গল্প, নাচ, গান, রসিকতা ও নাটকের মোড়কে যদি এটুকু করতে পারে, ভাবাতে পারে, সেটাই বড় জয়। অভিনন্দন এ ছবির প্রতিটি সদস্যকে। সুপারহিট হোক।’