হেনরি, বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক জীবিত কুমির। ১৬ ডিসেম্বর ১২৪ বছরের জন্মদিন পালন করল। দক্ষিণ আফ্রিকার কুমির বিশ্ব সংরক্ষণ কেন্দ্রে এদিন তার জন্মদিন পালন করা হয়েছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হল এত বছর কীভাবে বেঁচে থাকতে পারে একটা কুমির, এটাই ভেবে পাচ্ছেন না বিজ্ঞানীরা।
জানা গিয়েছে নরখাদক নীল কুমির হেনরি ১৬ ডিসেম্বর, ১৯০০ সালে জন্মগ্রহণ করে এবং ১৯০৩ সালে বতসোয়ানার ওকাভাঙ্গো ডেল্টায় নিয়ে আসা হয় তাকে। আর গত তিন দশক ধরে ক্রোকওয়ার্ল্ড সংরক্ষণ কেন্দ্রে বসবাস করছে হেনরি।
কীভাবে কুমিরের নাম হেনরি হল
১৯০০ সাল থেকে ১৯০৩ সাল পর্যন্ত, হেনরির হাতে বহু প্রাণ গিয়েছে, একাধিক মানুষ ও শিশুকে শিকার করেছে। এর দরুণ রেগে গিয়ে স্থানীয়রা তাকে হত্যা করার জন্য উঠেপড়ে লাগেন। একজন বিখ্যাত শিকারীকে ডেকে আনা হয়। সেই শিকারির নাম ছিল স্যার হেনরি নিউম্যান, যিনি কুমিরটিকে মারেননি বরং এটিকে ধরে, কয়েক বছর পর কুমির সংরক্ষণ কেন্দ্রে রেখে দিয়ে যান। তারপর থেকে হেনরি এই সেন্টারে বসবাস করছে। একই শিকারীর নামানুসারে কুমিরটিরও নাম এখন হেনরি।
জেনে অবাক হবেন যে হেনরি ২০০, ৩০০ নয় বরং ১০,০০০ সন্তানের পিতা এবং তার ছয় সঙ্গী রয়েছে। সেই অনুযায়ী, হেনরি তার পুরো পরিবার নিয়ে ক্রোকওয়ার্ল্ড কনজারভেশন সেন্টারে থাকেন। এই বয়স্ক কুমিরটির ওজন প্রায় ৭০০ কেজি, সে ১৬.৪ ফুট লম্বা। আর হেনরির দৈর্ঘ্য তুলনা করলে, সে একটি জিপের সমান হতে পারে।
হেনরির দীর্ঘায়ু একটি রহস্য রয়ে গিয়েছে
হেনরির দীর্ঘায়ু বিজ্ঞানীদের অবাক করেছে। আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী স্টিভেন অস্তাদ হেনরির বয়স সম্পর্কে লাইভ সায়েন্সের সঙ্গে কথা বলেছেন , হেনরি স্পষ্টতই বৃদ্ধ। তবে ১২৪ বছর পর্যন্ত একটি কুমিরের জন্য বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। অস্তাদ আরও বলেন, হেনরির জীবনধারাই হয়তো তার দীর্ঘায়ুর কারণ হয়ে থাকতে পারে।
বলা বাহুল্য, হেনরির দীর্ঘায়ু নির্ধারণ করা বিজ্ঞানীদের পক্ষে এখনও কঠিন। বিজ্ঞানীদের একাংশ বিশ্বাস করেন যে হেনরির ইমিউন সিস্টেম এবং অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম এত শক্তিশালী যে তারা তার দীর্ঘজীবনে অবদান রাখছে। কেউ কেউ বলে যে হেনরির রক্তে ব্যাকটেরিয়ারোধী বৈশিষ্ট্য থাকতে পারে, যা তাকে সংক্রমণ এবং রোগ থেকে নিরাপদ রাখে। এ কারণে হেনরির আয়ুষ্কাল দীর্ঘ।