‘মেক ইন ইন্ডিয়ার’ কলঙ্ক! চিনা সরঞ্জাম ব্যবহার করায় ৪০০টি ড্রোন কেনার চুক্তি বাতিল করে দিল ভারত সরকার। সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্রশস্ত্র কেনার যে বিধি আছে ভারতীয় সেনার, সেটার আওতায় দক্ষিণ ভারতের একটি সংস্থার সঙ্গে ২০২৩ সালের তিনটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। মোট ৪০০টি ড্রোন কেনার পরিকল্পনা ছিল। যে তালিকায় ছিল ২০০টি মাঝারি-উচ্চতার ড্রোন, ১০০টি হেভিওয়েট এবং ১০০টি লাইট-ওয়েট ড্রোন। তিন ধরনের ড্রোনের জন্য তিনটি চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে সেই তিনটি চুক্তিই বাতিল করে দেওয়া হয়েছে বলে ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
কেন তড়িঘড়ি চুক্তি বাতিল করা হল?
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, তড়িঘড়ি ওই সংস্থার সঙ্গে তিনটি চুক্তি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে, কারণ চিন এবং পাকিস্তান সীমান্ত বরাবর গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, নজরদারি মিশনের জন্য ড্রোন মোতায়েন করার সময় 'অপারেশনাল' ব্যর্থতার কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। গত বছর অগস্টে জম্মু ও কাশ্মীরের রাজৌরি সেক্টরে একটি ড্রোনের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিল সামরিক বাহিনী। সেটি ঢুকে পড়েছিল পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে।
অপর একটি সূত্র উদ্ধৃত করে ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, রাজৌরি সেক্টরের ঘটনার প্রেক্ষিতে তদন্ত চালানো হয়েছিল। তলব করা হয়েছিল ড্রোন নির্মাণকারী সংস্থাকেও। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে যে ড্রোনে কিছু যান্ত্রিক গোলযোগ ছিল। এরকম প্রায় ১৮০টি ড্রোন ব্যবহার করছে সেনা। তাতে মোটের উপরে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া মিলেছে। অগস্টে যা হয়েছিল, সেটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা হতে পারে।
আরও পড়ুন: LAC-তে নিঃসাড়ে সেনা-শক্তি, পরিকাঠামো জোরালো করছে চিন! দিল্লি-বেজিং কূটনৈতিক কথার মাঝেও সক্রিয় PLA
নজরদারি বাড়ানো হবে আরও
তবে বিষয়টি নিয়ে কোনওরকম ঝুঁকি নিচ্ছে না ভারত। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, এবার থেকে যখন ড্রোন কেনা হবে, তখন আরও খুঁটিনাটি পরীক্ষা করা হবে। বাড়ানো হবে নজরদারির মাত্রা। সূত্রের খবর, যাতে ড্রোনে কোনওরকম চিনা সরঞ্জাম বা বিপজ্জনক কিছু না থাকে, তা নিশ্চিত করার জন্য নজরদারি ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে।
চিনা সরঞ্জাম নিয়ে কেন সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে?
সূত্র উদ্ধৃত করে ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর জন্য যে ড্রোন তৈরি করছে, তাতে দুর্ভাগ্যজনকভাবে কয়েকটি ভারতীয় সংস্থা চিনা সরঞ্জাম ব্যবহার করছে। যা সাইবার সুরক্ষার ক্ষেত্রে বড়সড় ঝুঁকির ব্যাপার। সুরক্ষা ও অভিযান সংক্রান্ত তথ্য ফাঁসের আশঙ্কা থেকে যায়। যা অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। বিশেষত প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) বরাবর ভারত-চিন সীমান্তে সেই ড্রোন মোতায়েনের পরিকল্পনা ছিল। সেই আবহে কোনওরকম ঝুঁকি নেওয়া হচ্ছে না।