যুবকের প্রেম প্রস্তাব বারবার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন যুবতী সবিতা হালদার। আর তাই বাড়িতে একা পড়াশোনা করার সময় সবিতা হালদারের উপর নেমে এসেছ꧋িল নির♋্মম হামলা। তখন সামনে ছিল তাঁর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। এই যুবক দলবল নিয়ে সবিতার বাড়িতে আসে। যুবকের নাম শঙ্কর মধু। বাড়িতে এসেই আবার প্রেম নিবেদন করছিল। সেটা সরাসরি খারিজ করে দেন সবিতা। আর তার পরই সবিতার দুটো চোখে পেরেক ঢুকিয়ে দেয় যুবক শঙ্কর বলে অভিযোগ। তখন সে মাটিতে রক্তাক্ত অবস্থায় কাতরাচ্ছিল। এটাই ছিল সেদিনের ঘটনা।
এদিকে এমন আক্রান্ত হয়ে দুটো চোখ ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে চিৎকার জুড়ে দেন সবিতা। যা শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। ত🌠খন সেখান থেকে দলবল নিয়ে চম্পট দেয় যুবক শঙ্কর। তারপর নানা চিকিৎসা করা হলেও জন্মেꦰর মতো অন্ধ হয়ে যান সবিতা। তখন থেকেই সবিতা দৃষ্টিহীন। কিন্তু মেয়েটি তাতে থেমে যাননি। ওই অবস্থাতেই কঠোর অনুশীলন করে নিজের পায়ে দাঁড়ান সবিতা। তাই আজ স্টেশনে ট্রেন ধরতে গেলে তাঁর গলা রোজই শুনতে পান যাত্রীরা। কারণ এখন সবিতা হাওড়া ডিভিশনে রেলের ঘোষিকা হিসেবে চাকরি করছেন।
তারপর ঠিক কী ঘটল? অন্যদিকে এই সবিতা হালদারের লড়াইটা অনেক কঠিন ছিল। কারণ দুটো চোখও নেই। আবার মছলন্দপুরের শক্তিনগর গ্রামের মন্মথ হালদার যিনি সবজি বিক্রি করেন তাঁর মেয়ে সবিতা। সুতরাং পরিবারে ছিল দারিদ্রতা। মছলন্দপুর ভূদেব স্মৃতি বালিকা বিদ্যালয় থ𝐆েকে ২০০৭ সালে মাধ্যমিক পাশ করে সবিতা। তারপর একাদশে নেমে এল জীবনে চরম বিপর্যয়। অভিযুক্ত শঙ্কর পরে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। তারপর রবীন্দ্রমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে ২০১৩ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে সবিতা হালদার গোবরডাঙা হিন্দু কলেজ থেকে স্নাতক হন। চাকরির জন্য রেলের পরীক্ষা দেন। রেলের চাকরিও সাফল্যের সঙ্গে পান।
আরও পড়ুন: আঁস൲্তাকুড়ে শিশুকে না ফেলার নিদান, পরিবর্তে বিকল্প জায়গা করল হাসপাতাল
আর কী জানা যাচ্ছে? এখন প্রত্যেকদিন বাড়ি থেকে মায়ের সঙ্গে সবিতা আসেন মছলন্দপুর স্টেশনে। তারপর ট্রেনে করে শিয়ালদা। সেখান থেকে বাসে চেপে পৌঁছতে হয় হাওড়া স্টেশনে। সেখান থেকেই ট্রেনের সময়সূচি ঘোষণা করেন। আর যাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা প্রচারও করেন সবিতা হালদার। ঘোষণার বিষয়বস্তু ফোনে পেয়ে যান সবিতা। এখন অনেকটাই সড়গড় হয়ে গিয়েছে। তাই সবিতা হালদার বলেন, ‘আমার ঘোষণায় যাত্রীরা এখন রেল সফর করেন। ভাল লাগে। আমার কাছে ব্রেইল বোর্ড আছে। এটা আমা𒆙র কাজে লাগে। সহকর্মীরাও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।’