করোনাভাইরাস আবহে প্রতিমা নিরঞ্জনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট এবং টাকিতে। সোমবার সকাল থেকেই নিয়ম–নীতি মেনে ভাসান হচ্ছে ইছামতীর ঘাটে। বারোয়ারির পুজোর ক্ষেত্রে ইছামতীর ঘাটে গিয়ে নিরঞ্জন করে দেওয়া হচ্ছে প্রতিমা। ভারত–বাংলাদেশের মিলনক্ষেত্র হল বসিরহাটের টাকির ইছামতী তীর। কারণ এখানে বিজয়া দশমীতে প্রতিমা ভাসানকে কেন্দ্র করে মিলনোৎসবের আবহ রচিত হয়। তবে এবার বন্ধ।বিএসএফ এবং বসিরহাট পুলিশ জেলার প্রশাসনিক তৎপরতা দেখা গিয়েছে চোখে পড়ার মতো। অতীতের ইতিহাস বলছে, কয়েকবছর আগেও এই দশমীর দিনে বিপুল মানুষের সমাগমে বিপর্যস্ত হয়ে গিয়েছিল টাকি। এবার সব নিয়ন্ত্রণে। কিছু প্রতিমার ভাসানের ক্ষেত্রে করা হয়েছে নৌকার বন্দোবস্ত। অন্যান্য বছরের মতো নৌকা করেই ভাসান করবে তারা। সেক্ষেত্রে মানা হয়েছে করোনা স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিধি মেনে পুরসভার সিদ্ধান্ত। সামান্য কিছু সংখ্যক লোক নিয়ে ভাসান করবে তারা।এবারে করোনার আবহে পুরনো ধারা নেই বললেই চলে। কারণ সেই ভিড় নেই, জনসমাগম অতি অল্প, সেই উল্লাস নেই, নেই সেই প্রাণের টানও। এবার ইছামতী নদীর বক্ষে যে প্রাচীন ঐতিহ্য দুই বাংলার প্রতিমা বিসর্জন অনেকটাই ফিকে। ইছামতী নদীতে প্রতিমা বিসর্জন গুটিকয়েক নৌকা ছাড়া কিছুই নেই। জিরো পয়েন্টে চলছে এপার বাংলা এবং ওপার বাংলায় বিএসএফ এবং বিবিজির টহল। আর নদীর ঘাটগুলিতে কড়া নিরাপত্তা রয়েছে।টাকিতে বিকেলেই ভাসান হয়। এবার নির্দেশ রয়েছে, বিকেল পাঁচটার মধ্যেই সাঙ্গ করতে হবে নিরঞ্জন। সব মিলিয়ে ঝুঁকি নিতে চাইছে না প্রশাসন। বসিরহাট–টাকি পৌরসভার পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্বের মধ্যে দিয়ে বিসর্জন হবে। কোনও দর্শনার্থীদের নৌকা নদীতে নামবে না। শুধুমাত্র প্রতিমা বিসর্জনের নৌকাই নামার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ইছামতীর ঘাটে গিয়ে দেখা গেল, বেয়ারার কাঁধে চড়ে প্রতিমা এল টাকি রাজবাড়ির ঘাটে। ঐতিহ্য আর বনেদিয়ানার মধুর স্পর্শ নিয়ে বেঁচে থাকবে বাঙালি সংস্কৃতি।