এই প্রথম রাজ্যের কোনও দুর্গাপুজো কমিটি অনুদানের টাকা ফিরিয়ে দিল রাজ্য সরকারকে। করোনা আবহে সর্বত্র এই টালমাটাল সময়ে এই ‘অতিরিক্ত’ সরকারি অনুদানের কোনও প্রয়োজনই নেই। এ কথা পরিষ্কার জানিয়ে রাজ্য সরকারের নির্দিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে অনুদানের ৫০ হাজার টাকা ফিরিয়ে দিয়েছে হাওড়ার বাজেশিবপুর মিতালী সঙ্ঘ। তাঁদের আবেদন, সরকার গরিব মানুষের পাশে দাঁড়াক।একইসঙ্গে অনুদানের টাকা ফেরত দেওয়ার কথা জনসমক্ষে আনতে পুজো প্রাঙ্গনে ফ্লেক্সও টাঙিয়েছেন ক্লাব কর্তৃপক্ষ। তাতে লেখা, ‘এ অন্ধকারে আড়ম্বর নয়। প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই বাজেশিবপুর মিতালী সঙ্ঘ শুধুমাত্র সভ্যদের কাছ থেকেই অনুদান গ্রহণ করে। তাই, প্রশাসনিক অনুদানের পঞ্চাশ হাজার টাকা আমরা পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে (অ্যাকাউন্ট নম্বর ৬২৮০০১০৪১০৬৬) ফিরিয়ে দিয়েছি।’চলতি বছরে করোনা আবহের মধ্যেও রাজ্যের প্রায় ৩৭ হাজার পুজো কমিটির প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বাজেশিবপুরের ওই ক্লাব কর্তৃপক্ষের মতে, করোনা মহামারীতে সেই লকডাউনের শুরু থেকে অনেকের কাজ নেই। দু’বেলা দু’মুঠো খেতে পারছেন না অনেকে। গোদের ওফর বিষফোড়ার মতো রাজ্যে বয়ে গিয়েছে বিধ্বংসী আমফান। এ অবস্থায় পুজোর নামে এভাবে এতটা টাকা দেওয়া অর্থের অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয়।মিতালী সঙ্ঘের সদস্যরা জানিয়েছেন, তাঁদের তরফ থেকে সরকারি অনুদানের জন্য আবেদন করা হয়নি। পুজোর অনুমোদন নেওয়ার সময় ক্লাবের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর চায় পুলিশ। ওই টাকা অ্যাকাউন্টে ঢুকলে কিছুদিনের মধ্যেই তা রাজ্য সরকারকে ফেরত দেওয়া হয়েছে। কারণ, আমাদের ক্লাবের সদস্যদের অর্থেই এই পুজো হচ্ছে। আলাদা কোনও সরকারি অনুদানের প্রয়োজন নেই।এদিকে, এ ঘটনা সামাজিক দায়বদ্ধতার এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত বলে ফেসবুকে মিতালী সঙ্ঘের প্রশংসা করেছেন বিশিষ্ট আইনজীবী ও সিপিএম সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি লিখেছেন, ‘আমাদের বিশ্বাস, অন্যান্য ক্লাবগুলিও সরকারি টাকা অপব্যয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। ক্লাব সমন্বয় কমিটি দায়িত্ব নিয়ে সব টাকা ফেরত দিয়ে আমফানে বিধ্বস্ত মানুষদের পুনর্বাসনে সাহায্য করে এক গঠনমূলক কাজ করবে।’