কড়া নাড়ছে লোকসভা ভোট। তার আগে পাহাড়ে ঘর গোছাতে শুরু করেছে একাধিক রাজনৈতিক দল। ইতিমধ্য়ে পাহাড়ের এক বিজেপি বিধায়ক ভূমিপূত্রকে প্রার্থী করার দাবিতে সরব হয়েছেন। তবে এবার লোকসভা ভোটের আগে পাহাড়ে বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে TMC।এবার তাৎপর্যপূর্ণভাবে বিজিপিএম প্রধান অনীত থাপা তৃণমূলকে সমর্থনের কথা ঘোষণা করেছেন। মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের সঙ্গে অনীতের বরাবরই ভালো সম্পর্ক। অন্যদিকে বিমল গুরুংয়ের প্রভাব অস্তমিত গিয়েছে প্রায়। ধূমকেতুর মতো উঠে প্রায় মিলিয়ে গিয়েছে হামরো পার্টি। আর সেই জায়গায় নতুন করে ক্ষমতা নিয়ে ফিরে এসেছে অনীত থাপার দল। কিন্তু দার্জিলিংয়ের লোকসভা ভোট মানেই অনেকেই জানেন পাহাড়ে দেওয়া হয় গোর্খাল্য়ান্ডের আশ্বাস আর সমতলে গাওয়া হয় অন্য় সুর। বছরের পর বছর ধরে কার্যত এই ফরমুলাতেই বাজিমাত করে বিজেপি। কিন্তু এবার সমীকরণটা একটু ভিন্ন।তবে এবার অনীত থাপা অবশ্য় জানিয়েছেন পাহাড়ের ভূমিপুত্রকেই প্রার্থী করতে হবে। তাহলেই তৃণমূলকে সমর্থন। একেবারে সাধারণ পাহাড়বাসীর বক্তব্যকেই তুলে এনেছেন অনীত। কারণ পাহাড়ে প্রতিবারই এমন কেউ সাংসদ নির্বাচিত হন যিনি সেই অর্থে পাহাড়ের মানুষ নন। সেকারণে এবার নতুন স্লোগান, ভূমিপুত্রই হবে প্রার্থী।তবে প্রার্থী নিয়ে সরাসরি হস্তক্ষেপ না করে অনীত জানিয়েছেন, নিজেদের পছন্দের কাউকে তৃণমূল প্রার্থী করতেই পারে। কিন্তু তিনি যেন পাহাড়ের ভূমিপুত্র হন।এদিকে বর্তমানে পাহাড়ে বড় প্রভাব রয়েছে অনীত থাপার। জিটিএ, দার্জিলিং পুরসভার রয়েছে অনীতের হাতে। সেই সঙ্গেই পাহাড়ে সরাসরি গোর্খাল্যান্ডের ধুয়ো না তুলেও পাহাড়ে জনপ্রিয়তা পাওয়া যে সম্ভব সেটা কার্যত হাতে কলমে করে দেখিয়েছেন অনীত। সেই টানা বনধ, দিনের পর দিন ধরে পর্যটকশূন্য় পাহাড় সেই ছবি আর বিশেষ দেখা যায় না। পর্যটনকে কেন্দ্র করে পাহাড়ের জনজীবনের সমৃদ্ধি হয়েছে।এতে খুশি সাধারণ পাহাড়বাসী।এদিকে প্রাক্তন আমলা হর্ষবর্ধন শ্রীংলা। দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে তিনি বিজেপির তরফে প্রার্থী হতে পারেন বলে জল্পনা ছড়িয়েছে। এমনকী তিনি নাকি রাজনৈতিক জমি তৈরির জন্য় ইতিমধ্য়েই শিলিগুড়িতে চলে এসেছেন। রীতিমতো ঘুরেও বেড়াচ্ছেন এ পাড়া থেকে ও পাড়া। লক্ষ্য জনসংযোগ। কিন্তু হর্ষবর্ধনকে কি আদৌ মেনে নেবে পদ্মশিবিরের লোকজন?ইতিমধ্য়েই কার্শিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা সরাসরি দাবি করেন এবার পাহাড়ে ভূমিপুত্রকেই প্রার্থী করতে হবে। পাহাড়ের কাউকে প্রার্থী করার দাবিকে ঘিরে জোরালো সওয়াল করেন তিনি। আর সেটা যদি না হয় তবে তিনি নির্দল হিসাবে দাঁড়িয়ে পড়ার হুমকি দিয়েছেন।বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা বলেন, বছরের পর বছর ধরে বহিরাগতদের নিয়ে এসে পাহাড়ে প্রার্থী করা হচ্ছে। তারা জেতার পরে আর পাহাড়ের দিকে মুখও ফেরান না। এটা যেন একটা খেলার মাঠ হয়ে গিয়েছে।আর শিলিগুড়িতে বিজেপি শিবিরে হর্ষবর্ধনকে ঘিরে অনেকটা সেই অসন্তোষের ছবিই সামনে আসছে। সেই তুলনায় কিছুটা ভালো অবস্থানে তৃণমূল।