তারাপীঠে এসে পুণ্যভূমিকে অপবিত্র করে গিয়েছেন বিজেপি নেতারা। সেই অশুদ্ধ, অপবিত্র দলে রয়েছেন তাঁর স্বামীও। এই দাবি করে শুদ্ধিকরণ যজ্ঞ করলেন বিজেপি নেতা তথা স্বামী সৌমিত্র খাঁয়ের স্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী সুজাতা মণ্ডল খাঁ। গেরুয়া শিবিরকে জবাব দেওয়ার এই কৌশলে রাজ্য রাজনীতিতে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। এই যজ্ঞে বীরভূমের কংগ্রেসের প্রাক্তন জেলা সভাপতি সঞ্জয় অধিকারীর উপস্থিতি রাজনৈতিক জল্পনা বাড়িয়েছে। এখানেই সুজাতা বলেন, ‘বিজেপির সঙ্গে স্বামী সৌমিত্ররও শুদ্ধিকরণের প্রয়োজন।’মঙ্গলবার তারাপীঠ মন্দিরে পুজো দিয়ে এক সভার মাধ্যমে পরিবর্তন যাত্রার সূচনা করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। সেই সভায় আশানুরূপ জনসমাগম না হওয়ায় দলের অন্দরে গুঞ্জন চলছে। তারই মধ্যে বুধবার রাতে তারাপীঠে আসেন সদ্য বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়া সুজাতা খাঁ। তাঁর মতে, বিজেপির নেতারা তারাপীঠে এসে তীর্থভূমির পবিত্র মাটিকে অশুদ্ধ করেছেন। তাই মায়ের কাছে পুজো দেওয়ার পাশাপাশি মহাশ্মশানে মায়ের পাদপদ্মে শুদ্ধিকরণ যজ্ঞ করা হয়েছে। রীতিমতো প্যান্ডেল খাটিয়ে প্রথমে কুমারী পুজো ও পরে রাত ১১টা নাগাদ সেই যজ্ঞ শুরু হয়।এদিন তিনি মুখ্যমন্ত্রীর মতোই বলেন, নড্ডা, চাড্ডা, গাড্ডারা এসে তারাপীঠকে অপবিত্র করেছেন। তাই তিনি শুদ্ধিকরণের জন্য এসেছেন। তিনি তারাপীঠ শ্মশানে যজ্ঞ করেন। তিনি সেখানে কুমারী পুজোও করেন। সুজাতা সাংবাদিকদের আরও বলেন, ‘রটন্তি পুজোয় মহাপূণ্যতিথি। তাই কুমারীকে মা তারা রূপে পুজো করলেন। তারাপীঠের শুদ্ধিকরণ করলেন।’ যজ্ঞে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাতে পুনরায় ক্ষমতায় আসেন ও রাজ্যবাসীর মঙ্গল হয় সেই কামনাও জানানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘সৌমিত্ররও শুদ্ধিকরণ দরকার। উনি ওই দলের নেতা। উনিও তো অশুদ্ধকরণে শামিল ছিলেন।’উল্লেখ্য, ২১ ডিসেম্বর তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। তারপরই সুজাতাকে বিবাহ বিচ্ছেদের নোটিশ পাঠিয়েছিলেন সৌমিত্র খাঁ। সৌমিত্রকে পাল্টা দেওয়া চিঠিতে সুজাতা লিখেছিলেন, সৌমিত্রকে বিয়ে করতে তাঁকে অনেক ঝড়–ঝাপটা সামলাতে হয়েছে। তিনি কিছুতেই ডিভোর্স দেবেন না। বিজেপি তাঁর সংসার ভেঙেছে।এই বিষয়ে বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ বলেন, ‘বিজেপি সোনার বাংলা গড়ে তুলবে। কে কোথায় পুজো করল সেটা দেখে লাভ নেই। জয় শ্রীরাম বলতেই যে দল ভয় পায়, সেই দলে যে নাম লিখিয়েছে তাদের তারাপীঠে যজ্ঞ করা উচিত নয়।’ এদিন সুজাতা মণ্ডল খাঁ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দাদা ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁর মা বলে বর্ণনা করেন।