'ভালো ছিলেন। আচমকা একদিনে হঠাত্ কী হয়ে গেল!' সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়লেন মুখ্যমন্ত্রী বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আক্ষেপ, ‘একটা শতাব্দী…আর কেউ নেই।’ সেইসঙ্গে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার এবিপি আনন্দে মুখ্যমন্ত্রী জানান, গতরাতে তাঁর কাছেও খবর এসেছিল। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল। মোটামুটি খাচ্ছিলেন। রক্তচাপ ঠিক ছিল। অত্যন্ত নিয়ম মেনে জীবনযাপন করতেন। করোনাভাইরাস থেকেও সেরে উঠেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর আক্ষেপ, ‘খুব খারাপ লাগছে। এত তাড়াতাড়ি স্বাস্থ্যের অবনতি হয়ে যাবে ভাবতেও পারিনি। আচমকা একদিনে কী হয়ে গেল, জানি না। সেটা পরে বুঝতে হবে।’ সঙ্গে তিনি বলেন, ‘সন্ধ্যাদি হচ্ছেন আমাদের শেষ সুরের ঝঙ্কার।’পরে টুইটারেও শোকপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'বাংলায় সুরের রানি সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে গভীরভাবে শোকাহত। তাঁর প্রয়াণে আমাদের সংগীতের জগত, লাখ-লাখ অনুরাগীদের হৃদয়ে চিরন্তন শূন্যতা তৈরি হল। আমি তাঁকে দিদি হিসেবে দেখতাম। তাঁর প্রয়াণে আমার বড়সড় ব্যক্তিগত ক্ষতি। সাহিত্য অ্যাকাডেমির হৃদয় ছিলেন তিনি। আমরা তাঁকে বঙ্গবিভূষণ (২০১১ সাল), সংগীত মহাসম্মানের (২০১২ সাল) মতো পুরস্কারে ভূষিত করেছিলাম।' রাতের দিকে টুইটারে শোকপ্রকাশ করেছেন মোদীও। টুইটারে তিনি বলেন, ‘গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে আমরা সকলে শোকাহত। আমাদের সাংস্কৃতিক জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। আগামী প্রজন্মও তাঁর সুরেলা কণ্ঠে আবিষ্ট হবে। শোকের এই মুহূর্তে তাঁর পরিবার পরিজন ও গুণমুগ্ধদের সমবেদনা জানাই। ওম শান্তি।’উল্লেখ্য, গত ২৭ জানুয়ারি এসএসকেএম হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছিল সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে। তাঁর করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছিল। তারপর বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে ভরতি করা হয়েছিল। সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল। পরবর্তীতে করোনা মুক্ত হয়েছিলেন। ক্রমশ শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল। কিন্তু আচমকা তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। মঙ্গলবার হাসপাতালের তরফে মেডিকেল বুলেটিনে জানানো হয়েছিল, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থা সংকটজনক। কমে গিয়েছে রক্তচাপ। পেটের যন্ত্রণাও হচ্ছে। তার জেরে প্রখ্যাত সংগীতশিল্পীকে আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। রাখা হয়েছিল ভেসোপ্রেসার সাপোর্টে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ‘মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাতটা ৩০ মিনিট নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। তারপর তাঁর মৃত্যু হয়।’