করোনাভাইরাস কেড়ে নিল বাংলা সাহিত্যজগতের এক প্রবাদপ্রতিম নক্ষত্রকে। চলে গেলেন কবি, কথাসাহিত্যিক, অনুবাদক ও অধ্যাপক মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার জেরে দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী ছিলেন। সম্প্রতি তাঁকে দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁর করোনা পরীক্ষা করান চিকিৎসকরা। সোমবার রিপোর্ট এলে জানা যায়, তিনি কোভিড পজিটিভ। মঙ্গলবার রাত ৮টা নাগাদ প্রয়াত হন মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় (৮২)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। বিশ্বসাহিত্যের অমূল্য ভান্ডার, যা একসময় ছুঁয়ে দেখা ছিল দুরূহ, সে সব বাংলার পাঠক দরবারে পৌঁছে দিয়েছেন মানবেন্দ্রবাবু। ১৯৩৮ সালের ২৫ এপ্রিল বাংলাদেশের সিলেটে তাঁর জন্ম। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রেসিডেন্সির কৃতী ছাত্র তাঁর কৃতিত্বরে ছাপ রাখেন কানাডার টরোন্টো বিশ্ববিদ্যালয় ও পোল্যান্ডের ভাসভি বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রথম অধ্যাপনা মায়ানমারের ইয়াঙ্গনে। পরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন তিনি। তাঁর অনুবাদে ‘কর্নেলকে কেউ চিঠি লেখে না’ পড়েই বাঙালি চেনে ল্যাটিন সাহিত্যিক গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের ম্যাজিক রিয়্যালিজমকে। তাঁর লেখায় বাংলায় আসে জুল ভের্ন, এডগার অ্যালান পো থেকে লাতিন আমেরিকা ও পূর্ব ইউরোপের সাহিত্য সম্ভার।শিশুসাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় পেয়েছেন খগেন্দ্রনাথ মিত্র স্মৃতি পুরস্কার ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিদ্যাসাগর পুরস্কার। অনুবাদে তাঁর অবদানের জন্য ভারতীয় সাহিত্য একাডেমি তাঁকে দেয় বিশেষ অনুবাদ পুরস্কার।