Covid-19 এর প্রতিষেধক হিসেবে সম্প্রতি বিশ্বে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন-এর চাহিদা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। আর সেই প্রসঙ্গেই ফের সংবাদ শিরোনামে জায়গা করে নিয়েছে উত্তরবঙ্গের সিঙ্কোনা চাষ এবং কালজয়ী ওষুধের আবিষ্কর্তা আ🥃চার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়র অবদান।
মূলত ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন, যার সিন্থেসাইজড সংস্করণ কুইনিন হিসেবে পরিচিত, তার প্রধান উপাদান সিঙ্কোনা গাছের ছাল। উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং জেলার পাহাড়ি শহর মংপু ও তার সংলগ্ন অঞ্চলে প্রায় ৯,৬০০ একর জমিতে চাষ হয় সিঙ্কোনার। এখানে একদা💝 কুইনিন তৈরির তিনটি কারখানাও চালু ছিল, যদিও বেশ কয়েক বছর হল সেগুলি বন্ধ পড়ে রয়েছে।
দেশে হাইড্রক্সিক্লোরোকু🤪ইন তৈরির পꦯথিকৃৎ এবং বর্তমানে রাজ্য সরকারের অধীনস্থ একমাত্র কুইনিন প্রস্তুতকারী সংস্থা বেঙ্গল কেমিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাকিউটিক্যালস লিমিটেড। তবে সেখানেও কয়েক দশক আগে এই ওষুধ তৈরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। চাহিদা বাড়ায় এবার কুইনিন উৎপাদনের উদ্দেশে লাইসেন্সের জন্য আবেদন জানাতে চলেছে বেঙ্গল কেমিক্যালস।
পাশাপাশি, উত্তরবঙ্গে কুইনিন উৎপাদন করার বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। এই বিষয়ে কত দ্রুত ওই অঞ্চলে কুইনিন প্রস্তুত করা যায়, তা জানাতে কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি-কে (সিআইআই) রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে রাজ্য প্রশাসন। এই বিষয়ে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ও সিকিমের বিশে🎃ষজ্ঞদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিআইআই-এর উত্তরবঙ্গীয় আঞ্চলিক কাউন্সিলের চেয়ারম্য꧟ান সঞ্জিত সাহা।
১৯৩৪ সালে ক্লোরোকুইন আবিষ্কৃত হয়। ম্যালেরিয়াপ্রবণ বাংলায় তার🎐 উৎপাদন চালু হয় রসায়নবিদ আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের উদ্যোগে। একনজরে দেখে নেওয়া যাক বেঙ্গল কেমিক্যালার অবদানের পিছনে প্রাণপুরুষ প্রফুল🏅্লচন্দ্রের স্মরণীয় ভূমিকার কিছু মাইলফলক।
১৮৬১ সালের ২ অগস্ট জন্মগ্রহণ করেন প্রফুল্লচন্দ্র রায়। ১৮৮৭ সালে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিএসসি ডিগ্রি অর্জন করে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে তিনি রসඣায়নশাস্ত্রে অধ্যাপনা শুরু করেন।
১৮৯২ সালে বাংলার তরুণ উদ্যো🐼গপতিদের কথা মাথায় রেখে মাত্র ৭০০ টাকা পুঁজি সম্বল করে একটি ল্যাবরেটরিতে বেঙ্গল কেমিক্যালস প্রতিষ্ঠা ꩲকরেন প্রফুল্লচন্দ্র।
১৮৯৩ღ সালে কলকাতায় ভারতীয় মেডিক্যাল কংগ্রেসের অধিবেশꦰনে তিনি সংস্থায় প্রস্তুত করা বিভিন্ন ভেষজ পণ্য প্রদর্শনের ব্যবস্থা করেন।
১৯০১ সালে ২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে বেঙ্গল কেমিক্যালস-কে বড় আকারে বেঙ্গল কেমিক্যালস অ্যান্ড ফার্মাকিউটিক্যালস ওয়ার্কস প্রাইভেট লিমিটেড হিসেবে রূপান্তর করেন আচার্য পܫ্রফুল্লচন্দ্র।
অত্যন্ত লাভজনক হিসেবে এই প্রতিষ্ঠানকে দাঁড় করালেও জীবনে কখনও সেই বাবদ কোনও বেতন গ্রহণ করেননি ꧟আচা🦄র্য।
১♎৯০৮ সালের মধ্যে রাজ্যের শিল্পমহলে সাড়া ফেলে দেয় বেঙ্গল কেমিক্যালস অ্যান্ড ফার্মাকিউটিক্যালস, যার ভূয়সী প্রশংসা করেন প্রাবন্ধিক জন🌠 কামিং।
আচার্য প্রফুল্লচন্দ্রের নেতৃত্বে দ্রুত বাড়তে থাকে প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা। ১৯০৫ সালে কলকাতার মানিকতলায় এবং ১৯২০ সালে উত্তর শহরতলির পানিহাটি💖তে কারখানা গড়ার পরে ১৯৩৮ সালে মুম্বইতেও কারখানা তৈরি হয় বেঙ্গল কেমিক্যালসের।
প্রফুল্লচন্দ্র রচিত একাধিক বইয়ের মধ্যে স্মরণীয় Hist♔ory of Hindu Chemistry – From the Earliest Times to♔ the Middle of the Sixteenth Century AD। এই বইয়ে বৈদিক যুগ থেকে ষোড়শ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত ভারতীয় রসায়নশাস্ত্র নিয়ে বিভিন্ন কাজের উল্লেখ ও পর্যালোচনা গ্রন্থিত হয়েছে।
১৮৯৬ সালে নব আবিষ্কৃত রসায়ন যৌগ মারকিউরস নাইট্রাইট সংক্রান্ত একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ সকরেন প্রফুল্লচন্দ্র। এই গবেষণ🐭ার উপর♉ে ভিত্তি করেই পরবর্তীকালে বিভিন্ন ধাতুর অন্তর্নিহিত নাইট্রাইট ও হাইপোনাইট্রাইট নিয়ে গবেষণা হয়েছে।
১৯৩৬ সালে ৭৫ বছর বয়সে অবসরগ্রহণ করেন আচার্▨য প্রফুল্লচন্দ্র রায়। ১৯৪৪ সাল💫ের ১৬ জুন ৮২ বছর বয়সে তিনি প্রয়াত হন।
২০১১ সালে তাঁর ১৫০ তম জন্মবার্ষিকীতে ভারতের চিরস্মরণীয় রসায়ন বিজ্ঞানীর স্মৃতির উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন করে জগদ্বিখ্যাত কেমিক্যাল ল্যান্ডমার্ক ফলক প্রদান করে ব্রিটেনের রয়্যাল সোসাইটি অফ কেমিস্ট্রি। ইউরোপের বাইরে তাঁꦉকেই এই সম্মান প🌜্রদর্শন করা হয়।