সম্প্রতি দমদম সেন্ট্রাল জেলের মোড়ে মাটির তলা থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল বিশাল আকৃতির ঐতিহাসিক কামান। সেই কামানকে ঘিরে বাসিন্দাদের উৎসাহের অন্ত নেই। দীর্ঘ প্রায় ১৫দিনের চেষ্টায় মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা হয়েছিল সেই বিশাল আকৃতির কামান। গত ৬ এপ্রিল সেই কামানটিকে মাটির নীচে থেকে তোলা হয়েছিল। এরপর সেটিকে পরীক্ষা করার কাজ শুরু করেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু এবার প্রশ্ন কামানটি ঠিক কত বছরের পুরানো? কামানটির গায়ে কি কিছু লেখা ছিল?সূ্ত্রের খবর, গত কয়েকদিন ধরে কামানটিকে অত্য়ন্ত যত্ন সহকারে পরীক্ষা করা হয়েছে। এরপর কামানের গায়ে একাধিক চিহ্ন খোদাই করা অবস্থায় দেখা গিয়েছে। বন্দুক ও কামান বিশেষজ্ঞ অমিতাভ কারকুন এই কামানটিকে ভালো করে পরীক্ষা করেন। এটা আসলে ঢালাই লোহার কামান। ৩২ পাউন্ড ওজনের গোলা এই কামান থেকে নিক্ষেপ করা যেত। এই ধরনের কামান ইংরেজদের যুদ্ধ জাহাজে বসানো হত বিগত দিনে। কিন্তু দমদমে কামানটি এল কীভাবে?বিশেষজ্ঞদের মতে সম্ভবত সিপাহি বিদ্রোহের পরবর্তী সময়ে কামানটি এখানে আনা হয়েছিল। শহরে সৌন্দর্যায়নের অঙ্গ হিসাবে সম্ভবত কামানটিকে দমদম ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় নিয়ে আসা হয়েছিল। মাটিতে অর্ধেক পুঁতে রাখা হয়েছিল এটাকে। পরবর্তী সময়ে ইংরেজরা বিদায় নেয় ভারত থেকে। কিন্তু কামানটি থেকে যায়। পরবর্তী সময়ে রাস্তা উঁচু হয়েছে। কামানটি আরও মাটির গভীরে চলে যায়। কামানটির কিছুটা অংশ বেরিয়ে ছিল।এদিকে কামানটিতে রানি ভিক্টোলিয়ার মুকুটের প্রতীক খোদাই করা রয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। তবে সময়ের সঙ্গে তা কিছুটা অষ্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গেই কামানটিতে ১৭৯৬ সালটি উল্লেখ করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে মনে করা হচ্ছে কামানটি ওই বছরেই তৈরি করা হয়েছিল।প্রায় ১৫দিনের চেষ্টায় সেই কামানটিকে খুঁড়ে বের করা হয়েছিল। দমদম সেন্ট্রাল জেলের কাছেই যশোর রোডের মোড়ে এই কামানটিকে মাটি খুঁড়ে বের করা হয়। দমদম পুরসভা, ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট ও সিইএসসি এই কামান তুলতে সহযোগিতা করে। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও অ্য়াডমিনিস্ট্রেটর জেনারেল অ্য়ান্ড অফিসিয়াল ট্রাস্টি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল বিপ্লব রায় উপস্থিত ছিলেন।বিপ্লব রায় সেই সময় জানিয়েছিলেন, প্রচুর কামান কলকাতার রাজপথের নীচে রয়েছে। আজ এক আনন্দের দিন। রবার্ট ক্লাইভের বাড়ি থেকে কাছে কামান উদ্ধার হল।তবে এবার সেই কামানের বয়স নির্ধারন করাও সম্ভব হল।