'কলেজে যা শিখলাম, তা বাস্তবে খুব একটা কাজে লাগল না,' মত তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী অর্ক বসুর। হাওড়ার এক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছেন। এরপর বছর দুই এক সংস্থায় চাকরিও করেছেন। কিন্তু কর্মক্ষেত্রে দেখলেন, ইলেকট্রিকাল সম্পর্কিত কাজে শূন্যপদ বেশ কম। একটি পদে কেউ ঢুকলে টানা কাজ করতেই থাকেন। এদিকে ততদিনে আইটি-কম্পিউটার সায়েন্সের বন্ধুরা ২-৩টি চাকরি বদলে ফেলেছেন। লাফিয়ে লাফিয়ে দ্বিগুণ হয়েছে বেতন। এমন পরিস্থিতিতে ইলেকট্রিকাল নিয়ে এগনোর পরিকল্পনাই বাতিল করেন অর্ক। কোডিং, SAP, Talend-এর কোর্স শেখার পরিকল্পনা করেন। অনলাইনে সেই কোডিং শিখেই যোগ দেন বেঙ্গালুরুর এক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায়। ইতিমধ্যেই তাঁর বেতন দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। আরও পড়ুন: আগের বাজার আর নেই, বড় প্রযুক্তি সংস🎶্থাগুলিও হাজার-হাজার ছাঁটাই
অর্কর মতোই অভিজ্ঞতা মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ার শুভজ꧟িতের। তাঁর আফশোস, আইটি-সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দিকে গেলে অনেক বেশি কাজের সুযোগ পেতেন। সেই তুলনায় মেকানিকালে🔯 নিয়োগ, বেতন বৃদ্ধির হার কম।
অর্ক, শুভজিতরা যখন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শুরু করেছিল💫েন, তখনও দেশে এত বেশি সফটওয়্যার, কোডিংয়ের চাহিদা বাড়েনি। আবার মেকানিকাল, সিভিলের মতো সনাতন ইঞ্জিনিয়ারিংয়েরও যথেষ্ট চাহিদা ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে আইটি ক্ষেত্রে বুম এসেছে। ২০২০ সাল থেকে ছবিটাই বদলে গিয়েছে। বর্তমানে কিছু মন্দা থাকতে পারে। তা সত্ত্বেও আইটি ক্ষেত্রে চাকরি, বেতন বৃদ্ধির সম্ভাবনা বেশি-ই রয়েছে। সেই বি♓ষয়টি বুঝতে পারছেন সদ্য উচ্চমাধ্যমিক পাশ পড়ুয়ারাও।
স্বাভাবিকভাℱবেই মেকানিকাল, সিভিল, ইলেকট্রনিক্সের পদে পড়ুয়া কমছে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলিতে। সবাই চাইছেন আইটি, কম্পিউটারের দিকে যেতে।ꦿ দেশের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলিতে এই সংকট মোকাবিলার প্রয়োজনীয়তা এবার স্বীকার করল কেন্দ্রও।
'শিল্প-প্রাসঙ্গিক'
অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন (AICTE) চেয়ারপারসন টিজি সীতারাম জানান, সরকার মূল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সগুলিকে আরও আধুনিক ও সার্বিক করার বিষয়ে আলোচনা করছে। কলেজে 'শিল্প-প্রাসঙ্গিক' বিষয়গুলিই যাতে পড়ানো হয়, ℱসেই বিষয়ে জোর দেওয়া হবে।
শুধু আইটি-ই নয়। আগামিদিনে নিম্নলিখিত বিষয়গুলিও দেশের ই🔯ঞ🔯্জিনিয়ারিং কলেজের কোর্স অফারের তালিকায় যুক্ত হতে পারে।
- কমিউনিকেশন অ্যান্ড সিকিউরিটি ইঞ্জিনিয়ারিং
- ম্যানুফ্যাকচারিং ইঞ্জিনিয়ারিং
- ট্রান্সপোর্ট ইঞ্জিনিয়ারিং
- এনার্জি ইঞ্জিনিয়ারিং
- ইনফরমেশন ইঞ্জিনিয়ারিং
- পাবলিক হেলথ ইঞ্জিনিয়ারিং
- হেলথকেয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং
- কম্পিউটেশনাল ইঞ্জিনিয়ারিং
- এনভয়রনমেনটাল ইঞ্জিনিয়ারিং
- জিওম্যাটিক্স টেকনোলজি/জিওইনফরম্যাটিক্স
২০২১ সালের ডিসেম্বরে এক বিশেষজ্ঞ কমিটি꧑ এই বিষয়ে একটি রিপোর্ট জমা দেয়। তাতে দেশে নতুন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ খোলার উপর স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছিল। এর পাশাপাশি সেখানেও দেশের কলেজগুলিতে 'শিল্প-প্রাসঙ্গিক' কোর্স চালুর পরামর্শ দেওয়া হয়। বিশেষজ্ঞ কমিটি আরও জানায়, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, সিভিল ইঞ্জিন🌜িয়ারিং এবং ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো কোর্সগুলির আধুনিকিকরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
উক্ত কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন IIT হায়দ্রাবাদ বোর্ড অফ গভর্নরস-এর চেয়ারম্যান বিভিআর মোহন রেড্ডি। কমিটি আরও সুপারিশ করে যে, এই নতুন শাখাগুলি বাদ দিয়ে যেন কোনও নতুন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ চালু না হয়। আরও পড়ুন: বড় শহর নয়, মফস্বলে থেকে ওয়ার্ক-ফ্রম-হোমেই খু🥂শি অনেকে, জানুন আসল কারণ