মনোনয়ন পর্ব থেকে ভোট গণনা পর্যন্ত রাজ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ৪০ জনেরও বেশি। কোথাও বোমা ফেটে মৃত্যু হয়েছে শাসকদলের কর্মীর। কোথাও আবার 'প্রতিরোধের' নামে খুন হয়েছেন তৃণমূল সমর্থক। এদিকে বিরোধী দলের কর্মীরাও প্রাণ হারিয়েছেন পঞ্চায়েত হিংসায়। ভোটপর্ব মেটার পর গণনার দিনও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভাঙড়। মৃত্যু হয় তিন যুবকের। এই আবহে বুধবার পঞ্চায়েত মামলার শু💞নানির সময় বড় নির্দেশ দিল হাই কোর্ট। আদালতের তরফে জানানো হল, আগামী ১০ দিন রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের যে পরিকল্পনা রাজ্য সরকার করবে, তার অংশ হতে হবে কেন্দ্রীয় বাহিনীকেও। উল্লেখ্য, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়টি একান্ত ভাবেই রাজ্যের অধীনে। তবে বিগত দিনে বাংলা জুড়ে যে হিংসার চিত🦋্র সামনে এসেছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে উচ্চ আদালত। বর্তমানে রাজ্যে রয়েছে ৫৩০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। তাছাড়াও অন্য রাজ্যের ২৫৫ কোম্পানি সশস্ত্র পুলিশও আছে বাংলায়।
এমনিতে এবারের পঞ্চায়েত ভোট কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় করানোর নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। তবে বাহিনী জটিলতায় হিংসা রোখা সম্ভব হয়নি। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী স্বরাষ্ট্র মন্ত্র🐭কের কাছে চেয়েছিল কমিশন। তবে সময় মতো সব বাহিনী আসেন। এদিকে যে বাহিন𓂃ী এসেছে, তাদেরকেও সঠিক ভাবে কাজে না লাগানোর অভিযোগ উঠেছে কমিশনের বিরুদ্ধে। ভোটের দিন ডানকুনিতে যে বাহিনী এসেছে, তাদের অন্য জেলায় নিয়োগ করা হয়েছে। এদিকে হুগলিতে নিয়োগ করার জন্য খড়গপুর থেকে বাহিনী নিয়ে আসা হয়েছে। এই ধরনের একাধিক অভিযোগ উঠেছে। বিএসএফ কর্তা নিজে অভিযোগ করেছে, কমিশনের তরফে স্পর্শকাতর বুথের তালিকা তুলে দেওয়া হয়নি তাদের হাতে। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে কমিশন। তবে রাজীব সিনহা মেনে নেন, রাজ্যের ১০ শতাংশ বুথেই বাহিনী মোতায়েন সম্ভব হয়েছে। এই আবহে আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছে কমিশনকে।
উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত ভোটে অশান্তি ও পুনর্নিবাচনের দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টে দায়ের করা হয়েছে তিনটি জনস্বার্থ মামলা। শুভেন্দু অধিকারী, প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল এবং ফরহাদ মল্লিক এই মামলাগুলি করেছেন। কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলাগুলির শুনানি হয় গতকাল। সেখানেই আদালতের তরফে জানানো হয়, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে নিয়েই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে প্রশাসনকে। এদিকে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিশেষ কমিটি গড়তে হবে। সেই কমিটিতে থাকবেন রাজ্য পুলিশের ডিজি, এডিজি (আইনশৃঙ্খলা), কেন্দ্রীয় বাহিনীর নোডাল অফিসার হিসেবে নিযুক্ত আইজি (বিএসএফ), কেন্দ্রীয় বাহিনীর অন্যান্য অফিসার। এদিকে আদালত আরও নির্দেশ দিয়েছে, কমিশনের নোডাল অফিসারদের সংশ্লিষ্ট জেলাতেই থাকতে হবে আগামী ১০ দিন। এদিকে গতকাল আদালতে জমা পড়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর রিপোর্ট। সেই রিপোর্টে কেন্দ্রীয় বাহিনী কমিশনের🐻 বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ করেছে। এই আবহে আদালতের পর্যবেক্ষণ, এই রিপোর্ট সত্যি হলে বোঝা যাবে কমিশন ইচ্ছে করেই আদালতের নির্দেশ অমান্য করেছে। এই আবহে রাজ্য সরকার ও কমিশনের থেকে জবাবদিহি চেয়েছে আদালত। এদিকে সব জেলায় যাতে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঠিক ভাবে ব্যবহার করা হয়, সেই দায়িত্ব নবান্নের ঘাড়ে চাপিয়েছে আদালত।