এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতে জয়ী হয়েছেন নবদ্বীপের সবজি বিক্রেতা গৌরাঙ্গ ঘোষ। তবে তারপরও তিনি নিজের অতীতকে ভুলে যেতে চান না। আর তাই পেশা পরিবর্তনও তিনি করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গরীব ঘর থেকে উঠে আসা গৌরাঙ্গ আজ জনপ্রতিনিধি। তারপরও তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে ♉সবজি বিক্রেতা হিসাবেই থাকতে চান। বৈভবের জীবনযাপনে তিনি বিশ্বাসী নন। ভোটে একবার জিতলেই ৫ বছরের জন্য ভাল আয়ের পাকা রাস্তা তৈরি। পঞ্চায়েত ꦚনির্বাচন নিয়ে মামলার শুনানিতে এমনই মন্তব্য করেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। কিন্তু বাস্তবে সবাই যে সেই পথে হাঁটে না তা নিজের কাজ দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন গৌরাঙ্গ ঘোষ।
এবার গৌরাঙ্গ ঘোষ তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে নবদ্বীপ ব্লকের মাজদিয়া–পানশিলা গ্রাম পঞ্চায়েতের ২১০ নম্বর বুথ থেকে জিতেছেন। তারপর থেকে রাতারাতি তিনি হিরো। যদিও তিনি সাধারণ মানুষকে বার্তা দিয়েছেন যে, গৌরাঙ্গ এখনও সবজি বিক্রেতাই আছেন। বরং ভোটের জন্য কয়েকদিন বাজারে বসতে পারেননি। এখন ভোট মিটে গিয়েছে। ব্যস, তিনি আবার বাজারে বসছেন। তাই সাতসকালেই নবদ্বীপ শহরের গোঁসাই বাজারে সবজি বিক্রি করতে হাজির তিনি। এই ঘটনা দেখে স্থানীয় মানুষজনের চোখ কপালে উঠেছে। এ🌱 কি কাণ্ড! জনপ্রতিনিধি রাস্তায় বসে সবজি বিক্রি করছেন। আবার কেউ বললেন, এমন সাধারণ লোকই গ্রামে চাই। যাঁকে প্রয়োজনে যখন–তখন কাছে পাওয়া যাবে।
কিন্তু কে🦩ন সবজি বিক্রি করবেন গৌরাঙ্গ? অনেকেই এই প্রশ্ন করতে শুরু করেছেন। তবে দলের পক্ষ থেকে কোনও বাধা আসেনি। এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে গৌরাঙ্গ ঘোষ বলেন, ‘আমার মতো পঞ্চম শ্রেণি পাশ সবজি বিক্রেতাকে দল প্রার্থী করেছে। আর গ্রামের মানুষ 🔯আমাকে জিতিয়েছে। তাই জনপ্রতিনিধি হয়েছি। এটাই তো বড় পাওনা। এখন এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়ানোই আমার কর্তব্য। পঞ্চায়েতে জিতে অনেকে অন্যপথে চলে যান। আর আমাকে রোজ সকালে বাজারেই মানুষ পেয়ে যাবেন। ফলে সেখানেই অভাব–অভিযোগ জানাতে পারবেন। কয়েক ঘণ্টা বাজারে বসে সবজি বিক্রি করতে পারলেই আমার সংসার চলে যাবে। বাকি সময় মানুষের কাজ করব। এভাবেই জনসংযোগ হয়ে যাবে।’
আরও পড়ুন: এগ চাউমিন খাওয়ার আবদার করলেন কুন্তল ঘোষ, জেল কর্তৃপক্ষ কোন পথে হাঁট𝕴লেন?
আর কী জানা যাচ্ছে? এবার প্রথম নির্বাচনে দাঁড়িয়েই জিতেছেন গৌরাঙ্গ ঘোষ। তাঁর বাড়ি নবদ্বীপের গাজনতলায়। গ্রামের মানুষ তাঁকে আগাগোড়াই পরোপকারী বলে জানেন। আর এখন গৌরাঙ্গ বলছেন, ‘দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল।’ একসময় যে সবজি বিক্রেতার কেউ খোঁজও নিত না, আজ তাঁকে সবাই ডাকাডাকি করছে। এই পরিবর্তন তিনি লক্ষ্য করেছেন। তবে গৌরাঙ্গ মনে করেন, ‘আজ যে সম্মান পাচ্ছি সেটা দলের জন্য। এখান♍ে আমার কোনও কৃতিত্ব নেই। পরিচিত–অপরিচিত অনেকেই এখন খুশি হয়ে বলছেন একদিন খাওয়াতে হবে। আমি তাঁদের নিজের হাতে খিচুড়ি–সবজি রান্না করে খাওয়াব সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’