সামনেই তামিলনাড়ু বিধানসভা ভোট। তার আগেই নাটকীয় পটপরিবর্তন। রাজনীতি থেকে অবসর নিলেন অপসারিত এআইএডিএমকে নেত্রী ভিকে শশীকলা। একদা প্রয়াত জয়ললিতার ছায়াসঙ্গী শশীকলা জানিয়েছেন যে তিনি রাজনীতিতে থাকবেন না। তবে এআইএডিএমকের ক্যাডারদের তিনি আসন্ন ভোটে দলকে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যদিকে প্রধান বিরোধী দল ডিএমকে ও তাদের ছোটো শরিক কংগ্রেসের মধ্যে আসন সমঝোতা নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে। সব মিলিয়ে সরগরম তামিলনাড়ুর ভোট বাজার। এদিন আচমকাই শশীকলা ক্যাডারদের বার্তা দিয়ে বলেন যে যারা প্রয়াত জয়ললিতার সত্যিকারের সমর্থক তাদের একযোগে কাজ করতে হবে যাতে প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রীর সোনার রাজ অব্যাহত থাকে। বিভেদ ভুলে সবাইকে কাজ করতে বলেন তিনি। প্রসঙ্গত দুর্নীতির মামলায় জেলে ছিলেন শশীকলা। জেল থেকে বেরিয়ে সক্রিয় রাজনীতিতে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি। তাঁর জন্য যে এআইএডিএমকে-র দরজা বন্ধ সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী পালানিস্বামী ও উপমুখ্যমন্ত্রী পনিরসেলভাম। তাই মনে করে হয়েছিল হয়তো ভাগ্নে দিনাকরণের দলকেই সমর্থন দেবেন শশীকলা। কিন্তু আপাতত সময় কম বলেই হয়তো সেই পথে গেলেন না তিনি। অন্যদিকে বিরোধী শিবিরেও নানা বিষয় নিয়ে অসন্তোষ। কংগ্রেস চেয়েছে ৪০ আসন, ডিএমকে দিতে চেয়েছিল ১৮। অনেক দর কষাকষির পর ডিএমকে খুব বেশি হলে ২৪ আসন বলে জানিয়েছে। কিন্তু ডিএমকে-র সূত্রে জানা যাচ্ছে যে কংগ্রেস ৩৫-৪০ এর নিচে নামতেই চাইছে না। কংগ্রেসকে খুব বেশি আসন দিতে চায় না ডিএমকে কারণ তাদের ভয় হল যে নির্বাচন জিতলেও পরে না কংগ্রেসের বিধায়কদের ভাঙিয়ে সরকার গড়ে ফেলে বিজেপি। সেই কারণে ডিএমকে কম করে ১৭০-১৮০ আসনে লড়তে চায় যাতে নিজের থেকেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে দল। এআইডিএমকে নয় বিজেপির থেকেই মূল আশংকা বলে দলের সূত্রের খবর। অন্যদিকে কংগ্রেস নেতারা বলছেন যে কম করে ৩০টি আসন দিতে হবে। তাহলে অন্তত মান-সম্মান রক্ষা হবে। গতবার ৪১টি আসনে লড়ে ৮টি জিতেছিল দল। এবার আশা ছিল যে সমসংখ্যক আসনে লড়বে কংগ্রেস। কিন্তু ডিএমকে অতগুলি আসন দিতে রাজি নয়। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক কংগ্রেস নেতা হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছেন যে একসময় দুই দল সমান সংখ্যক আসনে লড়ত। প্রতিটি ভোটেই কমছে আসন সংখ্যা। যদি কুড়ির ঘরে আসন ছাড়ে ডিএমকে, তাহলে একা লড়াই ভালো বলে মনে করছে কংগ্রেস রাজ্য নেতৃত্ব। রাহুল গান্ধীর প্রচারের পর রাজ্যে দলের অবস্থা অনেক উন্নতি হয়েছে বলে কংগ্রেসের মূল্যায়ন। দলের তরুণ নেতারা চায় আলাদা লড়তে। তবে প্রবীণরা সেটা চান না। ২০০৪ সাল থেকে দুই দল জোটবদ্ধ। মাঝে শুধু ২০১৩-২০১৬ আলাদা ছিল দুই দল। ২০১৪ লোকসভায় আলাদা লড়ে দুই দল, কিন্তু একটি আসনেও জিততে পারেনি। গত বিধানসভা ভোটে একসঙ্গে লড়লেও জয় পায় এআইএডিএমকে জোট। এবার অবশ্য নিজের জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী স্ট্যালিন। সেই কারণেই কংগ্রেসকে বেশি আসন ছাড়তে রাজি নয় ডিএমকে।