পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়া নিয়ে ধুন্ধুমার কাণ্ড বেঁধে গেল বোলপুরে। ভোটলুঠের অভিযোগ ঘিরে তৃণমূল—বিজেপির সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল গোটা এলাকা।দু’দলের কর্মীদের মধ্যে প্রথমে বচসা শুরু হয়। তারপর তা গড়ায় ধ্বস্তাধস্তিতে শেষে মারামারিতে তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা।তৃণমূলের বিরুদ্ধে অবাধে ভোট লুঠের অভিযোগে সরব হয়েছে বিজেপি। বোলপুরের ওই বুথে ভোট বাতিলের দাবি তুলেছে বিজেপি নেতৃত্ব। নির্বাচন কমিশনে অভিযোগও জানিয়েছে তারা। ওদিকে তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপির লোকেরাই আগে সেখানে গিয়ে ঝামেলা করেছে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত করেছে তারাই।স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বোলপুরের ওই ভোট কেন্দ্রে পোস্টাল ব্যালট গোছানোর কাজ সারছিলেন ভোটকর্মীরা। সেখানে ভোটের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক—শিক্ষিকারাও ভোট দিতে এসেছিলেন। বিজেপির অভিযোগ, সেই সময় ওই বুথে শুধু রাজ্য পুলিশ থাকলেও কোনও কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল না। সেই সুযোগে পুলিশের সামনেই তৃণমূলের অঙুলিহেলনে ভোট দেওয়া চলছিল বলে অভিযোগ। এমনকী ভোটবাক্সেও তালা না দিয়ে সেই অবস্থাতেই জমায়েত করে ভোটপর্ব চলছিল বলে অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি জানাজানি হতেই ওই বুথে পৌঁছে যান স্থানীয় বিজেপি নেতা-কর্মীরা। ঘটনাস্থলে পৌঁছন বোলপুরের বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায় ও তাঁর অনুগামীরা। বুথে ঢুকে আগে নিজেদের এজেন্টের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। এভাবে কীকরে ভোট করানো হচ্ছে, সেই নিয়ে ভোটকর্মীদের কাছে জানতে চান ওই বিজেপি প্রার্থী। তখনই সেখানে উপস্থিত তৃণমূলের এজেন্ট ও কর্মীদের সঙ্গে হাতাহাতি শুরু হয় তাঁদের। এরপর তৃণমূল কর্মীদের টানতে টানতে বুথের বাইরে নিয়ে এসে মারধর করার অভিযোগও ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। এমনকী বিজেপির ওই প্রার্থী নিজের সমর্থকদের তাঁদের কর্মীদের মারধর করার নির্দেশ দেন বলেও অভিযোগ করেছে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে ওই বুথে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়াই বন্ধ হয়ে যায়। এই প্রসঙ্গে বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ বলেন, ‘ভোটবাক্সে তালা না দিয়েই ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছিল। এজেন্টের কাছ থেকে জানতে পেরে এখানে এসেছি আমি। এর কোনও ব্যাখ্যাই পাচ্ছি না আমি। বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী নেই। শুধু রাজ্য পুলিশ রয়েছে। আমরা বিশেষ পর্যবেক্ষককে বিষয়টি জানিয়েছি। ভোট বাতিল করতে অনুরোধ করেছি। কমিশনকেও বিষয়টি জানিয়েছি।’অন্যদিকে, ভোট লুঠের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘বিজেপি অশান্তি সৃষ্টি করতে চাইছে। ওঁদের প্রার্থীই ওই স্কুলে গিয়ে ঝামেলা করেছেন। আমাদের কর্মীদের মারধর করার নির্দেশ দিয়েছেন। আর ছাপ্পা ভোট হবে কী করে? পোস্টাল ব্যালটে ভোট হয়েছে। অন্যের খাতে কী করে যাবে? এখানে ছাপ্পাভোটের কোনও প্রশ্ন নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘ শুধু শুধু ওখানে গিয়ে সিআরপিএফকে দিয়ে লাঠিচার্জ করালেন। আমরা এফআইআর দায়ের করব।’