ভোটের চোটে ৪৮ ঘণ্টা বন্ধ হয়ে গেল উত্তর কলকাতার ৩৬টি ভ্যাকসিন সেন্টার। শুধু তাই নয়, প্রায় সমসংখ্যক করোনা টেস্টিং সেন্টারও বন্ধ রাখার নির্দেশ দিল কলকাতা পুরসভা।অষ্টম দফা ভোটের আগে পুরসভার এই সিদ্ধান্তে উদ্বেগে চিকিৎসামহল।মঙ্গলবার কলকাতা পুরসভার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সুব্রত রায়চৌধুরী জানিয়েছেন, ভোটগ্রহণ কেন্দ্র অথবা পোলিং সেন্টারের ১০০ মিটারের মধ্যে থাকা সমস্ত করোনা টেস্টিং ও ভ্যাকসিন সেন্টারগুলো আগামী দু’দিনের জন্য বন্ধ রাখা হচ্ছে। অন্য দিকে, টেস্টিং কিটেও টান পড়েছে শহরে। এতেই উদ্বেগ বেড়েছে শহরবাসীর। দু’দিন ধরে পুরসভার অধীনে থাকা এত সংখ্যক হেলথ সেন্টারের ভ্যাকসিন ও টেস্টিং সেন্টার বন্ধ থাকায়, করোনা রোধ প্রকল্প জোর ধাক্কা খাবে বলেই মনে করছেন চিকিৎসা মহল। পাশাপাশি কোভিড শনাক্তকরণও টানা দু’দিন শহরের উত্তরে অনেকখানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে স্বীকার করেছেন পুর চিকিৎসকরাও।এই প্রসঙ্গে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের প্রিন্সিপাল চিকিৎসক অনিতা হালদার বলেন, ‘ ভোট তো একদিনের। সেক্ষেত্রে ২৪ ঘণ্টা বন্ধ করলেও না—হয় ঠিক ছিল, যদিও ক্ষতি তো অবশ্যই হবে। তবে দু’দিন বন্ধ রাখলে, কি হবে তা জানা নেই।’উল্লেখ্য, গত ২৬ এপ্রিল দক্ষিণ কলকাতার চার কেন্দ্রে ভোটের জন্য ২২টি ভ্যাকসিন সেন্টার ও লালারস সংগ্রহ কেন্দ্র বন্ধ ছিল। তবে হরিদেবপুরের ধারা পাড়ায় পুরসভার হেলথ সেন্টারের দুই চিকিৎসকই এদিন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। স্বাভাবিকভাবে ওই সেন্টারও এদিন বন্ধ করে দিয়েছে পুরসভা।অন্য দিকে, ভোটগ্রহণ কেন্দ্র চালুর জন্য ধর্মতলায় পুরসভার সদর দফতরের বড় টিকাদান কেন্দ্রটিও আজ থেকে বন্ধ থাকবে। স্বভাবতই এই কেন্দ্রে এতদিন ধরে পুর কর্মচারী ও সরকারি কর্মীদের যে টিকাদান চলছিল, তা দু’দিন বন্ধ থাকবে। শুধু তাই নয়, পোলিং সেন্টার তৈরি হওয়ায়, বাগবাজারের সেন্ট্রাল স্টোর থেকে ভ্যাকসিন সরবরাহ বন্ধ রাখতে হবে। যদিও স্বাস্থ্য আধিকারিকরা আশ্বাস দিয়েছেন, আগে থাকতে অন্যত্র ফ্রিজারে সংরক্ষণ করা হবে। শহরের যে সেন্টারগুলি চালু থাকবে, সেগুলিতে নির্দিষ্ট সময়ে টিকা পৌঁছে দেওয়া হবে। বিভিন্ন ব্লক হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টেস্ট করা হলেও তার নির্দিষ্ট সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, প্রতিটি ব্লক হাসপাতাল থেকে গড়ে ৩০ থেকে ৪০ টির বেশি টেস্ট করা সম্ভব হচ্ছে না। আচমকাই বাংলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। আগের তুলনায় মৃত্যুর হারও বেড়েছে। কোনওরকম উপসর্গ দেখা দিলে, আতঙ্কিত মানুষ আর ঘরে বসে থাকতে চাইছেন না।