'সানডে সাসপেন্স' যে শ্রোতাদের কাছে অন্যরকম জায়গা তৈরি করে নিয়েছে সে আর বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রতি সপ্তাহে বাংলা সাহিত্যের নানান মেজাজের দারুণ সব বাছাই করা গল্প নিয়ে হাজির হয় এই অনুষ্ঠান। বছরের পর বছরে এই গল্পপাঠের আসরে বুঁদ হয়ে রয়েছে বিভিন্ন বয়সের ꦍঅগণিত শ্রোতা। আর যতই নামকরা ও জনপ্রিয় বাচিক শিল্পী থাকুক এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে শিল্পী মীরের নাম।
গত রবিবার দুপুরে সানডে সাসপেন্সের আসরে পাঠ করা হয় দেবারতি মুখোপাধ্যায়ের লেখা ‘নীলাম্বরের খিদে’৷ সঞ্চালনার মহাসমুদ্রে বহু ঝড়-জল পেরিয়েও এই বিশেষ গল্পপাঠের সময় দুঃখে,অসহায় কষ্টে কেঁদে ফেলেছিলেন মীর। নিজের সেই অভিজ্ঞতা সোশ্যাল মিডি🧸য়ায় কুন্ঠাহীন ভাবে শেয়ার করার পাশাপাশি জানিয়েছেন তাঁর আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ার কারণ। যা শুনে আপ্লুত নেটপাড়া। ফেসবুকে মীর লিখেছেন গত সপ্তাহে 'নীলাম্বরের খিদে'- গল্পটি পাঠ করেছেন গল্পটি ৷ নির্দেশনায় ছিলেন দীপ ৷ রেকর্ড করতে মীরের সময় লেগেছে সাড়ে চার ঘণ্টা৷ মাঝে বেশ কয়েক বার ব্রেকও নিতে হয়েছে তাঁকে ৷ ধূমপান করেছেন, চুমুক দিয়েছেন চায়ের পেয়ালায়। সঞ্চালক তথা রেডিয়ো জকি হিসেবেও একটানা এই গল্প পড়ে যেতে পারছিলেন না মীর৷
ক🧔িন্তু কেন এই অবস্থা হল মীরের? নিজেই জানিয়েছেন, 'গলা ধরে এসেছে কষ্টে কান্নায় অসহায়তায়'। আসলে জনপ্রিয় লেখিকা দেবারতি মুখোপাধ্যায়ের ওই গল্পের প্রধান চরিত্র কথক ও তার ♔আট বছরের মূক কন্যা, ‘নূপুর'। বিপত্নীক কথকের সবেধন নীলমণি ওই একমাত্র সন্তান। কথক পেশায় পুরাতাত্ত্বিক। বাংলাদেশের রংপুর অঞ্চলের এক প্রত্যন্ত অংশে খননকাজে গেছেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে পড়লেন ভয় ধরানো এক অদ্ভুত অশরীরী পরিস্থিতিতে। যে ধ্বংসাবশেষ খননের কাজে গেছেন কথক সেই রাজ বংশের শেষ রাজার নাম ছিল নীলাম্বর।
ওই রাজার জীবদ্দশায় তাঁর একমাত্র আট বছর বয়সী মেয়ের মৃত্যু তিনি মেনে নিতে পারেননি। তাই মৃত্যুর পরেও রাজার বিদেহী আত্মা ঘুরে বেড়ায়। আর কোনও আট বছর বয়সী মেয়েকে দেখলেই কন্যা হিসেবে নিজের কাছে, নিজের প্রেত জগতে নিয়ে☂ যাওয়ারꦐ চেষ্টা করেন৷ নীলাম্বরের সেই বিদেহী আত্মার হাত থেকে কি নূপুরকে বাঁচাতে পারবেন তার বাবা?
বাস্তবে মীরও তো এক কন্যা সন্তানের জনক। তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পেজ-এ একবার চোখ বললেই টের পাওয়া যায় সেই কথা। মেয়ের সঙ্গে ছবি দেওয়া থেকে শুরু করে তাঁর সাফল্যে গর্বিত বাবা হিসেবে মীরের মন ভালো করা সব পোস্ট মাঝেমধ্যেই নজরে পড়ে নেটিজেনদের। তাই☂ এই গল্পপাঠ করতে করতে একাত্ম হয়ে পড়েছিলেন তিনি। এতটাই যে রানের মনে হয়েছে বাড়ী চলে যাই। গভীর ছাপ ফেলেছে মনে।
মীরের এই পোস্ট চোখে পড়েছে স্বয়ং লেখিকারও। তিনি যে বাকি আর পাঁচজনের মত আপ্লুত ও উচ্ছ্বসিত সেকথাও এই পোস্টের কমেন্ট বক্সে দ্বিধাহীনভাবে জানিয়েছেন। দেবারতি লিখেছেন, 'আমার কাজ ছিল প্রতিমা গড়া, সে আমি মনপ্রাণ ঢেলে গড়েছিলাম। কিন্তু সেই প্রতিমাকে সালংকারা করে চক্ষুদান করেছেন 🍌আপনি। মৃন্ময়ীকে চিন্ময়ী রূপও দিয়েছেন আপনি। আজ আমি নিজেই নিজের গল্প শুনতে শুনতে কখনো কেঁদেছি, কখনো আবেগে গলা ধরে গিয়েছে। আপনার কন্ঠে কখনো নূপুর ... নূপুর ডাক, কখনো গলা ভাঙা আর্তনাদ, হাহাকার, বেদনা আমার মনের তন্ত্রীর প্রতিটি তরঙ্গে মূর্ছনা তুলে গিয়েছে। আমার বহু গল্প অডিও স্টোরি হয়েছে, হবে। কিন্তু এটা একটা অন্য পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে, তা লেখক হিসেবে আমি দ্বিধাহীনভাবে বলতে পারি। আমি মুগ্ধ! ভাল থাকবেন। ইন্দ্রজিৎদা আর দীপদার কাছে আপনার অনেক কথা শুনি, আলাপ হবে একদিন নিশ্চয়ই'।