মহানায়ক উত্তর কুমারের সঙ্গে ‘প্রতিশোধ’ ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি, দীর্ঘদিন ধরে বাংলা রঙ্গমঞ্চের পরিচিত মুখ, এমনকি কাজ করেছেন ছোট পর্দাতেও। তবে করোনা মহামারীর জেরে কাজ হারিয়ে পথে ব♊সেছেন টলিগঞ্জের প্রবীণ অভিনেতা শঙ্কর ঘোষাল। অভিনেতার আর্থিক সমস্যা এতটাই খারাপ যে হাতিবাগানের মতো জনবহুল এলাকায় ভিক্ষা পর্যন্ত করেছেন স্ত্রী ও পরিবারের বাকি সদস্যদের মুখে দু মুঠো খাবার তুলে দিতে। ফেসবুকের দেওয়ালে শনিবার একথা জানান, ‘মহাপীঠ তারাপীঠ’ ধারাবাহিকের ‘সাধক বামাক্ষ্যাপা’ সব্যসাচী চৌধুরী এবং তাঁর বিশেষ বন্ধু অভিনেত্রᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚ𒀱ᩚᩚᩚী ঐন্দ্রিলা শর্মা। যিনি নিজে ক্যানসারের মতো মারণরোগের সঙ্গে লড়াই চালাচ্ছেন।
দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টে সব্যসাচী লেখেন, শঙ্কর ঘোষালের দীর্ঘ এবং বর্ণময় অভিনয় কেরিয়ারের কথা, যা প্রায় পাঁচ দশক ধরে বিস্তৃত। সব্যসাচী জানান, শেষবার ‘সৌদামিনীর সংসার’ধারাবাহিকে কাজ করেছেন শঙ্কর ঘোষাল। তা বন্ধ হওয়ার পর স্টুডিওপাড়ায় কোনও কাজ পাননি। মহাপীঠ তারাপীঠ ধারাবাহিকে সব্যসাচীর সঙ্গে তিনদিন অভিনয় করেছিলেন ছোট একটি চরিত্রে তবুও শঙ্করবাবুর অভিনয় মন ছুঁয়ে গিয়েছে তাঁর। সব্যসাচী শুরুতেই জানান, ‘মানুষটির অনুমতি নিয়েই কথাগুলো লিখছি, অনুমতি চাওয়াতে বললেন -আমি বহুদিন আগেই লজ্জা পাꦛওয়া ছেড়ে দিয়েছি ভাই, তবে নিজেকে মাঝেমধ্যে ছোট লাগে, তবু ভাবি অন্যায় তো করছি না, চেয়ে খাচ্ছি এই যা'।
সব্যসাচী আরও জানান, তিনি ও ঐন্দ্রিলা শর্মা ইতিমধ্যেই তাঁকে সাহায্য করেছেন যৎসামান্য। খাবার ও অনান্য প্রয়োজনীয় জিনিস পৌঁছে দিয়েছেন। তবুও যাঁরা ইচ্ছুক তাঁদের শঙ্করবাবুকে সাহায্যের জন্যএগিয়ে আসতে অনুরোধ জানান পর্দার বামাক্ষ্যাপা। নিজের বিশেষ বান্ধবীর উদাহরণ টেনে সব্যসাচী লেখেন- ‘ক্যান্সারে আক্রান্ত একটা মানুষ যদি কেমো চলাকালীন কাউকে সাহায্য করতে চেয়ে, ღআমায় জিনিসের লিস্ট বানিয়ে জোর করে টাকা হাতে ধরিয়ে দিতে পারে, আমি বিশ্বাস করি এইটুকু অনেকেই পারবে’।
শঙ্কর ঘোষালের এই জীবন-যন্ত্রণার কাহিনি ঐন্দ্রিলাও ভাগ করে নিয়েছেন তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায়। সব্যসাচী-ঐন্দ্রিলার ডাকে সারা দিকে বহু মানুষ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন। সব্যসাচী সেই কথাও ফেসবুকে ভাগ করে নিয়েছেন। তিনি জানান, গত ১২ ঘন্টায় শঙ্🌠করদার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রায় ৪০ হাজার টাকা ঢুকেছে। সব থেকে বড় ব্যাপার একটি কাজের সুযোগও হয়েছে তাঁর। ফের একবার লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনের জগতে ফেরবার বন্দোবস্তও হয়েছে প্রবীণ অভিনেতার। উচ্ছ্বসিত শঙ্কর ঘোষাল শুধু বলছেন- ‘কবে ডাকবে গো কিছু জানো? যেই শুনলাম কাজ এ ডাকবে, কিরকম ডাঙায় ওঠা মাছের মতন লাগছে নিজেকে, আবার অভিনয় করবো ভাবতেই পারছি না'।
খড়কুটো ধারাবাহিকের বড়মা অভিনেত্রী রত্না ঘোষালের দাদা শঙ্কর ঘোষাল। তবুও এই পরিণতি? বোন পাশে দাঁড়ায়নি? বর্ষীয়ান অভিনেতার কথায়, বোন অনেক জায়গায় কাজের কথা বললেও এতদিন কোনও লাভ হয়নি। গত বছরে করোনা♊য় তিনি ও তাঁর ছেলে দুজনেই কাজ হারানোয় সংসারে টান পড়েছে। সব্যসাচী-ঐন্দ্রিলা এইভাবে পাশে দাঁড়ানোয় আপ্লুত শঙ্কর ঘোষাল। অন্যদিকে পর্দার ‘সাধক বামাক্ষ্যাপা’ও গর্বের সঙ্গে বললেন- ‘আমার শহরের মাথা বিকিয়ে যেতে পারে শঙ্করদা, হৃদয় নয়'।