গত কয়েক মাসে বিরাট ঝড় বয়ে গিয়েছে দুজনের জীবনেই। সামনে আরও কিছুটা কঠিন লড়াই বাকি আর এই লড়াইয়ে ঐন্দ্রিলার হাতটা শক্ত করে ধরে রাখেছেন তাঁর ভালোবাসার মানুষ সব্যসাচী চৌধুরী মানে সকলের প্রিয় ‘বামাক্ষ্যাপা’। গত ফেব্রুয়ারি মাসে অসুস্থ হয়ে পড়েন ঐন্দ্রিলা। প্রথমে তাঁর ফুসফুসে টিউমার ধরা পড়ে, পরে জানা যায়, শরীরে ফিরে এসেছে ক্যানসার। হ্যাঁ, এর আগে একাদশ শ্রেণিতে প𒆙ড়বার সময়ও অভিনেত্রী ক্যানসার আক্রান্ত হয়েছিল। নতুন করে যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করেন ঐন্দ্রিলা। গত পাঁচ মাস ধরে সেই লড়াই জারি রয়েছে।
মে মাসে ‘জিয়ন কাঠি’র নায়িকা ঐন্দ্রিলা শর্মার ফুসফুসে বাসা বাঁধা ক্যানসারাস টিউমারটিকে নিখুঁত দক্ষতায় বাদ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। নির্দিষ্ট সময়ের অন্তরালে ঐন্দ্রিলার শারীরিক পরিস্থিতির কথা ফেসবুকের বন্ধুদের সঙ্গে ভাগﷺ করে নেন সব্যসাচী। শুক্রবার রাতে প্রেমিকার হেলথ আপডেটই শুধু দিলেন না তিনি, বরং লড়াকু এক মেয়ের জীবনের একটা টুকরো ঝলকও তুলে ধরলেন।
সব্যসাচী জানান, জুলাই মাসে ঐন্দ্রিলার ২৫ টা রেডিয়েশন চলেছে, আজ (শুক্রবার) সেই রেডিয়েশন থেরাপি-র পর্ব শেষ হল। রেডিরেশনের পাশাপাশি কেমোথেরাপিও চলছে, সেটা জারি থাকবে আগামী নভেম্বর মাস পর্যন্ত। এদিন এক মন ছোঁয়া পোস্টে প্রেমিকা ঐন্দ্রিলার আবদারের কথাও ভালোবেসে লেখেন তিনি। জানান, কেমনভাবে এই শরীর নিয়ে ‘২ ঘন্টা ধরে ঘেমেনেয়ে বিরিয়ানি রান্না করা, তারপর ধরো দুই লেজওয়ালা সন্তানদের পিছনে দৌড়ানো বা ধরো ঘরের সব জিনিসপ☂ত্র মেঝেতে নামিয়ে আবার সেগুলো গুছিয়ে তুলে রাখা’ অবলীলায় করে বেড়াচ্ছেন ঐন্দ্রিলা। কিন্তু, ‘পৃথিবীর সব থেকে দুরহ, দুঃসাধ্য কাজগুলি, এই যেমন লাইটের সুইচটা অফ্ করা, বা জানলা বন্ধ করা অথবা ধরো এক কাপ বোর্নভিটা খাওয়া। উরেব্বাবা, চোখে জল এসে যায় কষ্টে। যদি কিছু বলতে যাই তো তিনবার শুনতে হয়, আমি তো একটা ক্যান্সার পেশেন্ট, অপারেশনের রুগী। একবার ইউটিউবে দেখো গো, আমার জীবনে কত কষ্ট’।
ঐন্দ্রিলার হেলথ আপডেট দিয়ে সব্যসাচী লেখেন, ‘জুলাই মাসটা খুবই সংকটপূর্ণ ছিল। ২৫ টা রেডিয়েশন এই মাস🌳েই দেওয়া হয়েছে, এবং আজ ছিল রেডিয়েশনের শেষ দিন। একই সাথে চলেছে কেমোথেরাপি। যেহেতু সমানতালে দুটি চলছিল, বেশ কিছু ওষুধপত্রের অদলবদল ঘটে। এবং চিকিৎসার আগ্রাসনে ঐন্দ্রিলা মাঝে কি♑ছুদিন প্রচন্ড দুর্বল হয়ে পড়ে। wbc কাউন্ট অনেক কম থাকার ফলে শরীর অসার হয়ে যাচ্ছিলো, বিছানা থেকে নেমে বাথরুম যাওয়ার মতন ক্ষমতা ছিল না ওর। মায়ের সাহায্য ছাড়া কোনো কাজই করতে পারতো না। প্রসঙ্গত বলি, ওর বাবা এবং দিদি পেশায় ডাক্তার এবং মা পেশায় নার্সিং স্টাফ। এটা যে ওর জন্য কত বড় আশীর্বাদ, তা আমি বেশ বুঝি। তবে সমস্ত দুর্বলতা সামলে ও এখন সুস্থ আছে, প্রচন্ড খুশি যে রেডিয়েশন শেষ, তবে কেমো চলবে নভেম্বর অবধি’।
ঐন্দ্রিলার শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে নানান ইউটিউব চ্যানেলে প্রতিদিন কিছু ভুয়ো সংবাদ পরিবেশন করা হয়, সেই নিয়েও এদিন আক্ষেপ প্রকাশ করেন সব্যসাচী। তবে জানান গোটা বিষয়টা কত স্পোর্টিংলি নিয়ে থাকেন ‘জিয়ন কাঠি’র নায়িকা। তবুও মাঝেমধ্যে ঐন্দ্রিলার কথা নাড়িয়ে দেয় শক্ত মনের সব্যসাচীকেও। তিনি ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘কয়েকদিন আগের কথা, বাইরে পড়ন্ত বিকেলে অঝোরে বৃষ্টি পড়ছে, প্রচন্ড দুর্বল শরীর নিয়ে শুয়ে আছে জানলার ধারে, ওঠার ক্ষমতা নেই, শরীর অবশ। হঠাৎ ফো𓆉নটা আমায় দেখিয়ে হাসিমুখে বললো, এই দেখো, তিন মাস আগে, আমি সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেছি"। বুকটা কেমনজানি মোচড় দিয়ে উঠলো আমার। মানুষ এত নিচ, এত বর্বর। আমার মুখ দেখে নিজেই হেসে বললো, “আহা, রাগ করছো কেন ? এসব ভিডিও না বানালে লোকে দেখবে না তো। ওদেরও তো খেতে পড়তে হবে"। আগেও বলেছি, এমন লৌহকঠিন মনোবল আমি খুব কমই দেখেছি, তাই এখন আর অবাক হই না। কেবল বললাম, ফোনটা দাও, তুলে রাখছি। কয়েকদিন আর ঘাঁটতে হবে না। অমনি ফাটা রেকর্ডটা বাজতে আরম্ভ করলো, “এরকম করো না গো, আমি তো একটা অসুস্থ মান💞ুষ.. অপারেশনের রুগী…’