উৎপল পরাশরসীমান্ত নিয়ে অরুণাচল ও অসমের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলা। আর সেই বিতর্কের অবসান ঘটাতে বৃহস্পতিবার মউ স্বাক্ষরিত করল দুই রাজ্য। নিউ দিল্লিতে এই মউ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজুর উপস্থিতিতে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা ও অরুণাচল প্রদেশের মুখ্য়মন্ত্রী পেমা খান্দু এই মউ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন।অমিত শাহ জানিয়েছেন, ভারতে ও উত্তর পূর্বে আমরা একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত দেখতে পাচ্ছি। ১৯৭২ সাল থেকে অসম ও অরুণাচল প্রদেশের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এবার স্থায়ীভাবে সেই সমস্যা মিটে গেল। এটা একটা বড় প্রাপ্তি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্ন সফল হওয়ার পথে।তিনি জানিয়েছেন, ২০১৪ সাল থেকে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রে সরকার তৈরি হয়েছিল একাধিক এই ধরনের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। নর্থ ইস্টের একাধিক গোষ্ঠীর সঙ্গেও এই চুক্তি হয়েছে। সীমান্ত এলাকার সমস্যাকে মেটাতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।অমিত শাহ জানিয়েছেন, ৮০০০ এর বেশি বিদ্রোহী ক্যাডার অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন। তারা সমাজের মূল স্রোতে চলে এসেছেন। ২০১৪ সাল থেকে হিংসার ঘটনা প্রায় ৬৬ শতাংশ কমে গিয়েছে। সুরক্ষা বাহিনীর মৃত্যুর ঘটনা প্রায় ৭০ শতাংশ কমে গিয়েছে। হিংসায় সাধারণ মানুষের মৃত্যুর সংখ্যাও কমে গিয়েছে প্রায় ৮৩ শতাংশ।এদিকে অসম ও অরুণাচল প্রদেশের মধ্যে প্রায় ৮০৪ কিমি লম্বা সীমান্ত রয়েছে। প্রথম দিকে তাদের মধ্যে কোনও সমস্যা ছিল না। কিন্তু কালক্রমে তাদের মধ্যে সীমান্ত সংক্রান্ত সমস্যা তৈরি হতে থাকে। এরপর এক রাজ্যের সীমান্ত সংলগ্ন বাসিন্দারা অভিযোগ করতে থাকেন যে অপর রাজ্য তাদের সীমান্তের জায়গা দখল করে নিচ্ছে।এরপর ২০২১ সালে আদালতের বাইরেও আলোচনার মাধ্যমে দুই রাজ্য তাদের সীমান্ত সংলগ্ন সমস্যাগুলি মেটানোর উদ্যোগ নেয়। এই উদ্যোগে অন্যতম নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। অসমের সিএম জানিয়েছেন, ১২৩টি সীমান্ত গ্রামে এই সমস্যা ছিল। এই চুক্তি সীমান্তে স্থায়ী শান্তি আনবে। অসমের জোরহাটে অরুণাচলের কিছু জায়গা রয়েছে। আমাদের অনুরোধে সেটা তারা আমাদের দিতে চেয়েছে।অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ৫০ বছর ধরে যে সমস্যা ছিল সেটা এবার মিটল। এটা অসম ও অরুণাচল উভয়ের কাছে ঐতিহাসিক দিন। ২০০৭ এর লোকাল কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে আমাদের সীমান্তের সমস্য়া মিটছে।