ওড়িশার যাজপুর জেলায় ডিনামাইট বিস্ফোরণের সাহায্যে নদীবাঁধ উড়িয়ে দিয়ে বন্যা সৃষ্টি করার জন্য বিজেডি নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলল বিজেপি। তাঁর বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির দাবি তুলে প্রতিবাদে নামল বিরোধী দল।বিজেপি রাজ্য সম্পাদক লেখাশ্রী সামন্তসিংঘরের অভিযোগ, যাজপুর জেলায় ব্রাহ্মণী নদীর শাখানদী কেলুয়ার প্রায় ৩০০ ফিট দীর্ঘ বাঁধ বিস্ফোরণে উড়িয়ে দেওয়া হয়েচে। তাঁর দাবি, ‘বিজেডি বিধায়ক প্রণব বলবন্তরায় ও তাঁর পেশায় ইঞ্জিনিয়ার মামা নরেন জেনা ওরফে বাদল জেনা এই দুষ্কর্মে সঙ্গে জড়িত। ২০১৯ সালে ২৪.৪২ কোটি টাকা খরচ করে কুড়ি ফিট চওড়া বাঁধটি মেরামত করা হয়েছিল, যাতে যে কোনও রকম বন্যা রোধ করা যায়। আসলে বাঁধ সারাইয়ের অর্থ আত্মসাৎ করতেই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে।’গুরুতর এই অভিযোগ উঠলেও এখনও পর্যন্ত সে সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করেননি বিজেডি বিধায়ক। বিজেডি-র তরফেও পোনও প্রতিবাদ জানানো হয়নি। তবে ওড়িশার জলসম্পদ দফতরের প্রধান ইঞ্জিনিয়ার জ্যোতির্ময় রথ জানিয়েছেন, কেলুয়া নদীর বাঁধ কৃত্রিম উপায়েই ধ্বংস করা হয়েছে। এর জেরে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। ঘটনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে জেলা প্রশাসন, জানিয়েছেন রথ। সেই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ওড়িশায় ৩৬ জায়গায় নদীবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে শুধু মহানদীরই ৫ জায়গায় বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে।চলতি বর্ষায় এ পর্যন্ত ওড়িশায় প্লাবনে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১০,০০০ বসতবাড়ি নষ্ট হয়েছে। রাজ্যের ২০টি জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১৪ লাখ বাসিন্দা। আকাশপথে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পরে দুর্গতদের জন্য পরিবারপিছু ৫০ কেজি চাল এবং নগদ ৫০০ টাকা ত্রাণ ঘোষণা করেছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। এ ছাড়া, গৃহীন পরিবারগুলি জন্য একটি করে পলিথিন শিট দেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন। অন্য দিকে, বিজেপির অভিযোগের পরে জারকা সেচ দফতরের সহকারি ইঞ্জিনিয়ার কামদেব দাসের দায়ের করা এফআইআর-এর ভিত্তিতে কেলুয়া নদীর বাঁধ ভাঙার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। তবে এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। ওড়িশার জলসম্পদ উন্নয়ন দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, রাজ্যের একাধিক নদী বিপদসীমার উপরে বইছে। জলস্তর নামতে কমপক্ষে ১২-১৫ ঘণ্টা সময় লাগবে বলে তাঁদের ধারণা। এর ওপর বুধবার পূর্ণিমা হওয়ায় জোয়ারের ফলে সমুদ্রে বন্যার জল ঢালার পথে বাধা সৃষ্টি হবে বলেও তাঁরা মনে করছেন।