ক্রমশ উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় নিসর্গ। মৌসম ভবন জানিয়েছে, নিসর্গের স্থলভূমিতে আꦿছড়ে পড়ার স্থান এবং সময়ে কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। এখনও তা দুপুর ১ টা থেকে দুপুর ৪ টের মধ্যে মহারাষ্ট্রের রায়গড় জেলার রিসর্ট শহর আলিবাগের দক্💟ষিণে আছড়ে পড়তে পারে।
জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) ইন্সপেক্টর ম♌হেশ কুমার জানিয়েছেন, আলিবাগের দক্ষিণে মুরুদে (৫৪ কিলোমিটার) আছড়ে পড়তে পারে নিসর্গ। সেজন্য আলিবাগে মোতায়েন থাকা দুটি দলকে মুরুদে পাঠানো হচ্ছে।
বুধবার সকাল ৯ টায় মৌসম ভবনের আপডেট অনুযায়ী, সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ পূর্ব-মধ্য আরব সাগরে অবস্থান রয়েছে নিসর্গ। আলিবাগের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে 🌞১৩০ কিলোমিটার, মুম্বইয়ের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে ১৭৫ কিলোমিটার এবং সুরাতের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে ৪০০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে সেই প্রবল ঘূর্ণিঝড়।
বুধবার ভোররাতেই প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, নিসর্গের চোখের দৈর্ঘ্য মোটামুটি ৮০ কিলোমিটার। সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বেশি থাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড় আরও শক্তিশালী 🅠হয়েছে। তবে গতিবেগ কিছুটা কমেছে। আগে যেখানে হাওয়ার বেগ ঘণ্টায় ৯০-১০০ কিলোমিটার ছিল, এখন তা কমে ঘণ্টায় ৮৫-৯৫ কিলোমিটারে দাঁড়িয়েছে। সর্বোচ্চ বেগ পৌঁছে যাচ্ছে ঘণ্টায় ১০৫ কিলোমিটারে। সাধারণত স্থলভাগে আছড়ে পড়ার সময় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ থাকে ঘণ্টায় ১০০-১১০ কিলোমিটার। কখনও কখনও ঝড়ের বেগ ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার ছুঁয়ে ফেলে।
নিসর্গের সতর্কতায় আগেই মহারাষ্ট্রের উপকূলবর্তী সাতটি জেলায় রেড অ্য়ালার্ট জারি করেছে মৌসম ভবন। সেখানের মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তারইমধ্যে রত্নাগিরি জেলা, কঙ্কন উপকূলে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত রত্নাগিরিতে প্রতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৫৫ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়েছে। কঙ্কন উপকূল🐬ে ঝড়ের গতিবেগ আরও বেশি। ঘণ্টায় ৫৫-৬৫ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইছে সেখানে। কখনও কখনও ঝোড়ো হাওয়ার বেগ ঘণ্টায় ৭৫ কিলোমিটারেও পৌঁছে যাচ্ছে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথের মাঝে পড়া মুম্বই. রায়গড় এবং থানের সংলগ্ন এলাকায় অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। ওই এলাকাগুলিতে ঘণ্টায় ১১০-১১০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে। সর্বোচ্চ বেগ ১২০ কিলোমিটারে পৌঁছে যেতে পারে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, নিসর্গ স্থলভূমিতে প্রবেশ করার সময় জোয়ারের থেকেও ১-২ মিটার বেশি জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। তার জেরে মুম্বই, থানে এবং রায়গড় জেলার নীচু এলাকাগুলি জলের তলায় চলে যাবে। জোয়ারের থেকে ০.৫ᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚ𒀱ᩚᩚᩚ-১ মিটার বেশি উঁচু ঢেউয়ের কারণে রত্নাগিরি জেলায় একই পরিস্থিতি হবে।
এরইমধ্যে মঙ্গলবার পুণের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিকাল মেটেরোলজির (আইআইটিএম) গবেষকরা জানিয়েছেন, যদি নিসর্গ পূর্বাভাস অনুযায়ী চলে, তাহলে ১২৯ বছরে দ্বিতীয়বার বর্ষার আগেই মহারাষ্ট্র উপকূলে কোনও ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়বে। প্রথমবার স🌌েই ঘটনা হয়েছিল ১৯৬১ সালে মে মাসে। ১৮৯১ সাল থেকে মহারাষ্ট্র এবং পশ্চিম উপকূলের তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন বিজ্ঞানীরা। সেই সময় থেকেই সরকারিভাবে ঘূর্ণিঝড়ের উৎপত্তি তথ্য নথিভুক্ত করার কাজ শুরু হয়েছিল। সেই বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ১৮৯১ সালের পর এই প্রথম জুনে মহারাষ্ট্রে কোনও ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তে চলেছে।
আইআইটিএমের বিজ্ঞানী রক্সি ম্যাথু কোল বলেন, 'যদি গুজরাতকে বাদ দিয়ে বিবেচনা করি, তাহলে বর্ষার আগে (এপ্রিল থেকে জুন) পশ্চিম উপকূলে আছড়ে পড়া চতুর্থ ঘূর্ণিঝড় হবে নিসর্গ। এর আগে ১৯৩২ সালের মে, ১৯৪১ সালের মে এবং ১৯৬১ সালের মে মাসে এꦇরকম ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছিল। গুজরাতকে বাদ দিয়ে আমরা এটাও বলতে পারি যে পশ্চিম উপকূলে জুনে আছড়ে পড়া প্রথম ঘূর্ণিঝড় হতে চলেছে এটাই।'
তবে বর্ষার আগের ঘূর্ণিঝড় আর মোটেꦆও বিরল নয় বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের বক্তব্য, আরব সাগরে বর্ষার আগে ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা বাড়ছে। তবে সেটাই যে ট্রেন্ড হতে চলেছে, সেই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার আগে আরও কয়েক বছর পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে চািছেন বিজ্ঞানীরা। পꦫাশাপাশি সমুদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধি-সহ অনেক বিষয়ের কারণে ঘূর্ণিঝড় দ্রুত তৈরি হচ্ছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তবে কোল জানিয়েছেন, তাঁদের রিপোর্টে যে ভবিষ্যত আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, তাতে ইঙ্গিত মিলেছে বর্ষার আগে ও পরে আরব সাগরে আরও শক্ℱতিশালী ঘূর্ণিঝড় তৈরি হবে। যা মুম্বইয়ের মতো উপকূল শহরের পক্ষে যথেষ্ট চিন্তার বিষয় বলে মত ওই বিজ্ঞানীর।