তৃতীয়বার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায় তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অভিনন্দন জানিয়ে চিঠি লিখেছেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনও। চিঠিতে 'ধর্মীয় সম্প্রীতি' ও 'ভ্রাতৃত্ব' বজায় রাখায় মমতাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি। এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই অভিনন্দন বার্তা আদতে দিল্লিকে খুব সূক্ষ্ম ভাবে বার্তা পাঠানোর সামিল।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারংবার অভিযোগ করে এসেছেন যে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি ধর্মীয় মেরকরণের রাজনীতি করছে। এবং নিজেকে সেই সাংপ্রদায়িকতার বিরোধী নেত্রী হিসেবে তুলে ধরেছিলেন মমতা। সেই লড়াইতে বিজেপিকে অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়ে জয়ী হন মমতা। আর মোদীর এই হারে মমতাকে ঢাকার অভিনন্দন বার্তা সূক্ষ্ম ইঙ্গিত বহন করে।এর আগে সিএএ এবং এনআরসি নিয়ে বিজেপির পদক্ষেপে খুশি ছিল না বাংলাদেশ। সংসদে সিএএ পাশ হওয়ার পর বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ভারত সফর বাতিল করেছিলেন। বাংলাদেশ মানতে নারাজ ছিল সেদেশের সংখ্যালঘুরা সেখানে সুরক্ষিত নয়। এদিকে বিজেপি অভিযোগ করে বাংলাদেশ থেকে অনেক অনুপ্রবেশকারী এসে পশ্চিমবঙ্গ, অসমে বসবাস করে। ঢাকা এই দাবিও খণ্ডন করেছে। তবে বাংলা-অসমের রাজনীতিতে বিজেপির অঙ্ক অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। আর এই কারণে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও চাপে পড়তে হয় শেখ হাসিনা সরকারকে।উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন চলাকালীন বাংলাদেশে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সরকারি সফরে গেলেও সেদেশ মোদীর সফরের বিরোধিতা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ সেই সফরকালে মোদী মতুয়াদের তীর্থক্ষেত্র ওড়াকান্দিতে গিয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত সেই সফর বিজেপিকে এপার বাংলায় ভোটবাক্স ভরাতে সাহায্য করতে ব্যর্থ হয়। উল্টে মোদীর সফর ঘিরে অশান্ত হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ। সেখানে পুলিশের গুলিতে মারা গিয়েছিল বেশ কয়েকজন হেফাজত সমর্থক। শুধু তাই নয়, পশ্চিমবঙ্গে ভোট চলাকালীন বাংলাদেশের আবেগকে আঘাত করা হয়েছে বলে বিজেপির বিরুদ্ধে চাপা ক্ষোভ রয়েছে ঢাকার। বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামি লিগের একাংশও ঘরোয়া ভাবে মনে করেছে যে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর অথবা শেখ মুজিবের একশো বছরের প্রধান অতিথি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফরের অনেকটাই ঢেকে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে ভোটের মধ্যে মতুয়া মন্দির দর্শনে। এছাড়া হেফাজতের হিংসাও রয়েছে।