গতকাল গভীর রাত থেকে দাউ দাউ করে জ্বলতে দেখা গিয়েছিল ইউক্রেনের জাপোরিঝঝিয়ায় অবস্থিত ইউরোপের সর্ববৃহৎ পারমাণবিক পাওয়ার প্ল্যান্ট৷ সেই পারমাণবিক প্ল্যান্টটি এবার পুরোপুরি রুশ কবজায় চলে গেল। এর আগে ইউক্রেনের উত্তরে অবস্থিত চেরনোবিল দখল করেছিল রুশ বাহিনী। এবার মহাদেশের সবচেয়ে বড় পাওয়ার প্ল্যান্ট নিজেদের দখলে নিল রাশিয়া। এর আগে রুশ বিদেশমন্ত্রী সার্গেই ল্যাভরভের ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ’ মন্তব্য ঘিরে পরমাণু যুদ্ধের শঙ্কা ছড়িয়েছে বিশ্বে। রুশ বিদেশমন্ত্রী মন্তব্য করেছিলেন, ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হতে তাতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার হবেই।’ এদিকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার অভিযোগ ছিল যে তারা পারমাণবিক অস্ত্র যোগারের চেষ্টা করছে। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনে অবস্থিত পারমাণবিক চুল্লিগুলি পরপর দখল করছে রাশিয়া।ইউক্রেনের দক্ষিণে নাইপার নদীর তীরে অবস্থিত এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ইউক্রেনের মোট বিদ্যুতের চাহিদার এক চতুর্থাংশ মেটানো হয়৷ এই পারমাণবিক পাওয়ার প্ল্যান্টে রুশ হামলার পরই ইউক্রেনের তরফে চেরনোবিলের বিভীষিকাময় স্মৃতি তুলে ধরা হয়েছিল। চেরনোবিলেই ১৯৮৬ সালে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছিল, যার প্রভাবে পূর্ব ইউরোপ জুড়ে তেজস্ক্রিয় পদার্থ ছড়িয়ে পড়েছিল।ইউক্রেনের দাবি, এই প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ ঘটলে তা হবে চরম বিপর্যয়ের৷ চেরনোবিলের কথা মনে করিয়ে ইউরোপকে ঘুম থেকে উঠতে বলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ইউরোপের দেশগুলির উদ্দেশে এক ভিডিয়ো বার্তায় জেলেনস্কি রাশিয়াকে ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ বলে অভিহিত করেন। জেলেনস্কি এদিন বলেন, ‘মানব জাতির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একটি সন্ত্রাসী দেশ পারমাণবিক সন্ত্রাসের পথে হাঁটছে। রাশিয়ান প্রচার অতীতে বিশ্বকে পারমাণবিক ছাইয়ে ঢেকে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল। এখন এটি শুধু একটি সতর্কতা নয়। এটা বাস্তব।’তিনি আরও বলেন, ‘ইউরোপকে জেগে উঠতে হবে। ইউরোপের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে এখন আগুন লেগেছে। রাশিয়ান ট্যাঙ্কগুলি পারমাণবিক ব্লকগুলিতে গুলি করছে। এই ট্যাঙ্কগুলি থার্মাল ইমেজার দিয়ে সজ্জিত। তারা জানেন যে তারা কীসের দিকে গোলাবর্ষণ করছে। যারা চেরনোবিল শব্দটি জানেন তাদের সম্বোধন করছি, এর জেরে লক্ষাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কয়েক হাজার লোককে সরিয়ে নিতে হয়েছিল এবং রাশিয়া সেই ঘটনারই পুনরাবৃত্তি করতে চায়।