আর কয়েক ঘণ্টা পরেই ফাঁসিকাঠে ঝুলতে চলেছে নির্ভয়াকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত চার আসামি। বৃহস্পতিবার সকালে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সেরে নিল তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষ।শুক্রবার ভোর ৫.৩০ মিনিটে তিহাড়ের ৩ নম্বর জেলে একসঙ্গে ফাঁসিতে ঝুলবে নির্ভয়াকাণ্ডে দণ্ডিত মুকেশ সিং, অক্ষয় ঠাকুর, পবন গুপ্তা ও বিনয় শর্মা। জেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বুধবার জেলের ভিতরের ফাঁসিকোঠায় ডামি ব্যবহার করে ফাঁসির মহড়া সেরে নেওয়া হয়েছে। এ দিন সকালে আর একবার ফাঁসির প্রস্তুতি সরেজমিনে দেখে নিয়েছেন জেল আধিকারিকরা। বিকেলে আরও এক দখা পরীক্ষা করে নেওয়া হবে ফাঁসির খুঁটিনাটি।বিহারের বক্সার থেকে আনা ১০টি ফাঁসির দড়ি পাকা কলা ও ঘি মাখিয়ে ফের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তিহাড় জেলে উপস্থিত রয়েছেন মীরাটের বাসিন্দা ফাঁসুড়ে পবন জল্লাদ। প্রিতি ফাঁসির জন্য তিনি পাবেন ১৫,০০০ টাকা। ফাঁসিমঞ্চে তাঁর সঙ্গে উপস্থিত থাকবেন তিহাড়ের জেল সুপার এবং চিকিৎসক। ফাঁসি পর্ব সম্পূর্ণ হবে সকাল ৬.৩০ মিনিটের মধ্যে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেল আধিকারিক জানিয়েছেন, এ দিন বিকেলে চার দণ্ডিত আসামির সঙ্গে তাঁদের শেষ ইচ্ছা জানতে চেয়ে কথা বলবেন জেল সুপার। শেষ ইচ্ছা জানাতে হবে জেল সুপারকে লেখা আসামির চিঠি মারফৎ।চার ফাঁসির আসামিকে তিন নম্বর জেলে ফাঁসিকোঠার পাশে পৃথক সেলে রাখা হয়েছে। প্রত্যেক বন্দির উপর নজর রাখার জন্য মোতায়েন রয়েছেন ২-৩ জন রক্ষী।জানা গিয়েছে, বুধবার বিকেল পর্যন্ত স্বাভাবিক থাকলেও রাত থেকে চারজনই জেলরক্ষীদের কথাবার্তা বন্ধ করে দিয়েছে। মৃত্যুদণ্ড রুখতে তাদের যাবতীয় আইনি প্রচেষ্টা শেষ হয়ে যাওয়ার পরে রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দও তাদের প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করে দেওয়ার পরে ফাঁসি এড়াবার আর কোনও পথ খোলা নেই ৪ আসামির সামনে।উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে দিল্লিতে চলন্ত বাসের ভিতরে আরও দুই জনের সঙ্গে বছর তেইশের প্যারামেডিক ছাত্রীরে গণধর্ষণের পরে নৃশংস শারীরিক অত্যাচার করে এই চার জন। তার জেরে দুই সপ্তাহ পরে সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে মারা যান ‘নির্ভয়া’ নামে পরিচিত তরুণী।অভিযুক্ত ৬ আসামির মধ্যে নাবালক হওয়ার দরুণ এক অপরাধী তিন বছর জুভেনাইল হোমে বন্দি থাকার পরে মুক্তি পায়। ঘটনায় অভিযুক্ত রাম সিং জেলের ভিতরে পরে আত্মঘাতী হয়। বাকি চার অভিযুক্তর ফাঁসির আদেশ আগামিকাল সকালে কার্যকর হবে তিহাড় জেলে।এর আগে তিহাড়ে ফাঁসি কার্ষকর হয়েছিল ২০০১ সালে সংসদ হামলায় অভিযুক্ত কাশ্মীরের বাসিন্দা আফজল গুরুর।