HTLS 2022: মহিলারা চাইল꧟ে সবকিছুই করতে পারেন। তাঁদের মনের ইচ্ছাটাই সেক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত꧟্বপূর্ণ। হিন্দুস্তান টাইমস লিডারশিপ সামিট ২০২২-এ যোগ দিয়ে এমনটাই জানালেন Nykaa-র প্রতিষ্ঠাতা সিইও ফাল্গুনী নায়ার।
HTLS 2022: মহিলারা চাইলে সবকিছুই করতে পারেন। তাঁদের মনের ইচ্ছাটাই সেক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। হিন্দুস্তান টাইমস লিডারশিপ সামিট ২০২২-এ যোগ দিয়ে এমনটাই জানালেন Nykaa-র প্রতিষ্ঠাতা সিইও ফাল্গুনী নায়ার। বর্তমানে দেশে ধনীতম স্বনির্মিত উদ্যোক্তা তিনি। ভারত তথা এশিয়ার অন্যতম বড় প্রসাধনী ই-কমার্স সংস্থা নাইকা।কীভাবে পথ চলা শুরু?
এদিন ভিডিয়ো কনফারেন্সে আলাপচারিতায় ফাল্গুনী জানালেন, অন্যদের দেখেই নিজের স্টার্ট আপ করার কথা ভাবতাম। আসলে ইচ্ছেটা শুরু থেকেই ছিল। তবে নিজের ব্যবসা গড়ে তোলাটা একেবারেই সহজ নয়। আমার ক্ষেত্রেই প্রথমে সঠিক প্রযুক্তির প্রয়োগ করা বেশ কঠিন🌠 ছিল। এরপর পুরো ভাবনা, পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করা। এরপর আসে সঠিক পরিষেবা প্রদান করার চ্যালেঞ্জ। যে কোনও স্টার্ট আপেরই প্রথম ২-৩ বছর অত্যন্ত কঠিন। এগুলিই আগামিদিনের জন্য অনেক কিছু শিখিয়ে দেয়।
ফাল্গুনী জানান, প্রথম দিকে নাইকার সাফল্যের পিছনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ ছিল। বিউটি প্রোডাক্টের সংখ্যা অনেক। তাই সেগুলি কিনে এরপর সঠিকভাবে সাপ্লাই চেন ম্যানেজমেন্ট, ওয়্যারহাউজ নিয়ন্ত্রণ, ভারতে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড আনা, সেই অজানা ব্র্যান্ড ভারতে জনপ্রিয় করা বেশ কঠিন ছিল। এর জন্য মূলত ডিজিটাল মার্কেটিং, ইনফ্লুয়েন্সার কমার্সকেই হাতিয়ার করেছিল নাইকা। আরও পড়ুন: Nykaa: ৫০ বছর♏ে বয়সে চাকরি ছেড়ে ব্যবসা, আ🥀জ দেশের ধনীতম মহিলা ফাল্গুনী
কীভাবে বোঝেন কোন প্রোডাক্ট আনবেন, বিক্রি করবেন?
ফাল্গুনী জানালেন, এই প্রশ্নের একটাই উত্তর। গ্রাহকরা যেটা চান। কোন ব্র্যান্ড চাই, তা ওঁর🔥া নিজেরাই আমাদের🅠 জানান। এখন সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে আমরা সহজেই গ্রাহকদের সঙ্গে যুক্ত হতে পারি।
একটি উদাহরণ দিয়ে তিনি জানালেন, বরেলিতে আমাদের অফলাইন দোকান খোলা হয়েছিল। আর তার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে ১০০-২০০ কমে🥀ন্ট এসেছিল। অনেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, তাঁদের শহরে আমাদের আসতে ❀বলছেন। সেগুলিও আমরা খুঁটিয়ে দেখি, পর্যালোচনা করি। গ্রাহকরাই আমাদের জানিয়ে দেন।
প্রসাধনীর ই-কমার্সই যে করবেন, সেই সিদ্ধান্ত কীভাবে নিলেন?
আমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকতাম। সেখানে প্রসাধনীর ব্যবসার সম্ভাবনা বুঝতে পেরেছিলাম। সমস্ত ডিপার্টমেন্টাল স্টোরেই বিশাল বিউটি সেকশন থাকত। এছাড়াও জাপান ও কোরিয়ার মতো দেশে প্রসাধনীর বাজার বিশাল। এদিকে সেই সময়ে ভারতে তার তুলনায় কিছুই ছিল না। বাড়ির কাছের স্থানীয় দোকানে সেভাবে কিছুই নেই। ভাল অপশনই পেতেন না গ্রাহকরা। সেটা দেখেই বুঝলাম যে বাজারে ജএকটি ফাঁক আছে। এছাড়া আমি সেই সময়ে মার্কিন মুলুকে ই-কমার্সেরও উত্থান দেখছিলাম। ফলে সেখান থেকেই এই দুইটির মেলবন্ধন করার ভাবনা মাথায় আসে।
প্রথমে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন?
ফাল্গুনীর কথায়, 🎃তখন অনেক ব্র্যান্ডই ভারত ছেড়ে চলে যাচ্ছিল। প্রসাধনীর বাজার ভাল নয়। আমাকে অনেকেই বারণ করেছিলেন। বলেছিলেন ই-কমার্সই যদি করতে হয়, তবে ইলেকট্রনিক্স, ফ্যাশান নিয়ে করো। আমি যদিও আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। তবে ভারতীয় গ্রাহকদের প্রসাধনী ব্যবহারের বিষয়ে সচেতনতার প্রসার করারও দরকার ছিল। সেগুলিও করতে হয়♓েছে।
নতুন প্রজন্মই সাফল্যের ভিত
মিলেনিয়ালদের দৌলতেই নাইকার এই সাফ🐼ল্য। এমনটাই বললেন তিনি। ফাল্গুনী জানালেন, নতুন প্রজন্ম সোশ্যাল মিডিয়া, অনলাইনে নতুন অভিজ্ঞতার জন্য একেবারে তৈ🐻রি ছিল। তাদের জন্যই এই বিপুল বৃদ্ধি। আমরা কোনও নিয়ম মেনে মেনে চলিনি। একসময়ে বিউটি মানেই দামী আর সাধারণ প্রসাধনীর একটি বিভেদ ছিল। কিন্তু আমি স্থির করেছিলাম যে একই প্ল্যাটফর্মে দু'টোই বিক্রি করব। কারণ এখন যার অল্প বয়স, তার আয় সময়ের সঙ্গে বাড়বে। একইসঙ্গে তার ক্রয়ক্ষমতাও বাড়বে।
চাকরি ছাড়তে ভয় লাগেনি
কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাঙ্কে ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কার হিসাবে দুর্দান্ত চাকরি করতেন ফাল্গুনী। ফলে তাঁর মত পদে থেকে হঠাত্ চাকরি ছেড়ে ব্যবসায় নামা মোটেও সহজ ছিল না। ফাল্গুনী নিজেও সেই কথা জানালেন। তিনি বললেন, ২-২.৫ বছর লেগেছিল চাকরি ছাড়তে। আমার মেয়ে আমাকে অনেক অনুপ্রেরণা দিয়েছিল। সেই সময়ে ‘এথিকা’ নামের কবিতা পরেছিলাম। তাতে লেখা ছিল যে য⛦াত্রাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। গন্তব্য নয়। সেই মানসিকতা থেকেই শুরু করেছিলাম।
বাজে খরচ নয়
মাত্র ১,০০০ স্কোয়ারফিটেরও কম স্থান নিয়ে ছোট্ট অফিস। সেন্ট্রাল মুম্বইয়ের অতি সাধারণ স্থান থেকেই ব্যবসা শুরু করেছিলেন ফাল্গুনী। তিনি জানান, কম ꦬখরচেই শুরু করেছিলাম। বেশি টাকা নষ্ট করিনি। আসলে যে কোনও স্টার্টআপেরই সেটা মেনে চলা উচিত্ এবং প্রয়োজন। একেবারে কম খরচ করতে হবে। কারণ প্রথম কয়েক বছরে ব্যবসা দাঁড় করাতে সময় লাগে। 🐻এই সময়ে অতিরিক্ত খরচ করলে লোকসান বাড়বে।
কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রেও একেবারে নতুন প্রজন্মকে অগ্রাধ🐈িকার দিয়েছিলেন ফাল্গুনী। সেই সময়ে নতুন অল্পবয়সী স্নাতকদের নিয়োগ করেছেন। ফাল্গু🍃নী জানান, ছেলেমেয়ের বন্ধুদেরও চাকরি দিতাম। সবাই কম বয়সী। মজা করে বলতাম, কেউ ভুল করে ঢুকে পড়লেই চাকরিতে নিয়ে নেব।
শুরুটা অনেক কঠিন
নাইকার শুরুটা কিন্তু মোটেও সহজ ছিল না। সেই সময়ে মাসে ৩০০-৪০০ অর্ডারও হত না। ৩-৪ মাস পরে অবশ্য সংখ্যাটা কিছুটা বাড়ে।সেই সময়ে দিনে ৬০-৬৫ অর্ডার আসতে শুরু করে। এদꦍিকে এত ডেলিভারি করার জন্য তাঁরা মোটেও তৈরি ছিলেন না। মুম্বইতে তখন গণেশ পুজো। ফাল্গুনী জানান, এরই মধ্যে তিনি, তাঁর মেয়ে সমস্ত অর্ডার প্রেরণের ব্যবস্থা করেꦆন। রাত ৩টে পর্যন্ত অফিসে থাকতে হত বলেও জানান ফাল্গুনী।
এমনও হয়েছে যে কাস্টমার কল নিতাম। 𝐆অর্ডার না পৌঁছনোয় লোকে রেগে থাকতেন। সেগুলি সামাল দিতাম, জানালেন তিনি। এরপরেই অবশ্য দ্রুত হারে অর্ডা♔র বাড়তে থাকে। এক সময়ে বেড়ে দিনে ১০০টি অর্ডারে পৌঁছে যান।
আর এখন নাইকার দেশজুড়ে মোট ৩৩টি ওয়্যারহাউজ। ৯৫% জিপꦏ কোডেই সংস্থা ডেলিভারি করে। দেশের মোট ৫৮টি শহরে দোকান। মুম্বই, দিল্লি, ব্যাঙ্গালুরুতে অফিস। মাসে ২০ লক্ষ অর্ডার সম্পন্ন করে নাইকা।
ফাল্গুনী জানান, তিনি ও তাঁর পরিবার আগামিদিনেও এভাবেই এগিয়ে যেতে চান। আগামী ৪-৫ বছরে ভারতে প্রসাধনী সংস্থা হিসাবে আরও শিকড় শক্ত করতে চান তিনি। চিরসবুজ ফাল্গুনী জানান, তাঁর এই কাজ করতে এতটা ভাল লাগে যে, কাজ বলেই মনে হয় না। আরও পড়ুন: ❀Top 10 richest women: ভারতের ১০ ধনীতম মহিলা ব্যবসায়ীদের চেনেন?
একইসঙ্গে দেশের মেয়🙈েদের পড়াশোনায় সাহায্য করা, অনুপ্রেরণা জোগাতে চান ফাল্গনী। নতুন নতুন প্রসাধনী সংস্থায় বিনিয়োগও করছেন। তিনি বলেন, ‘আমা✨দের বুঝতে হবে যে, মহিলাদের আটকে রাখার মতো কিছু থাকতে পারে না। মহিলাদের নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে। নিজের পড়াশোনা, প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটি জায়গা পৌঁছতে হবে। কেউ যদি সেনাবাহিনীতেও যেতে চান, তাঁকে সেটা একেবারে অন্তর থেকে চাইতে হবে। এই ইচ্ছাটাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’