বিগত কয়েকবছর ধরেই চিনা 'ঋণের ফাঁদ' নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে বিশ্বে। বিভিন্ন দেশকে অর্থ সাহায্য দিয়ে কার্যত তাদের নিজেদের বশে নিয়ে আসে চিন। গতবছরই শ্রীলঙ্কার ভয়ানক পর🌠িস্থিতি তার অন্যতম প্রমাণ। ভারতের পড়শি নেপাল, বাংলাদেশকেও এই 'ঋণের ফাঁদে' ফেলতে চায় চিন। পাকিস্তান ইতিমধ্যেই সেই ফাঁদে আর্ধেক পা দিয়ে রেখেছে 'বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে'র নামে। আর এবার দেশের আর্থিক হাল ফেরাতে চিনের থেকে ৭০০ মিলিয়ন ডলার অর্থসাহায্য নিল পাকিস্তান। যা দেখে অনেকেই চিন্তিত। প্রসঙ্গত, ১ বিলিয়ন ডলার ঋণের জন্য আইএমএফ-এর সঙ্গে ইতিমধ্যেই আ𓂃লোচনা চলছে পাকিস্তানের। এরই মাঝে চিনের থেকে টাকা নিয়ে নেওয়ায় পাকিস্তানকে নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।
অর্থমন্ত্রী ইশাক দার সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানিয়েছেন যে চিনের থেকে ৭০০ মিলিয়ন ডলা𝕴র অর্থসাহায্🎃য পেয়েছে পাকিস্তান। তিনি জানান, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তানকে এই টাকা দিয়েছে চায়না ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক। এই আবহে 'বিশেষ বন্ধু' চিনকে ধন্যবাদ জানান পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। এক নিরাপত্তা বৈঠকে শেহবাজ শরিফ বলেন, 'কয়েকদিন আগেই আমাদের এক বন্ধু রাষ্ট্র সাহায্য করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এবং সেই মতো আমাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়েও দিয়েছে তারা। এই বিষয়টি কখনও ভোলা যাবে না।' প্রসঙ্গত, এক সপ্তাহ আগেই পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রা ভাণ্ডারে রেকর্ড পতন ঘটেছিল। তাদের রিজার্ভে মাত্র ২.৯ বিলিয়ন ডলার বেঁচেছিল। তবে এখন সেই রিজার্ভ বেড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। তবে প্রশ্ন উঠেছে, আদৌ কি এই সাহায্যে পাকিস্তানের মূল সমস্যার সমাধান হবে? নাকি শুধুমাত্র চিনের বশ্যতা স্বীকার করতে বাধ্য হবে পাকিস্তান?
এদিকে পাকিস্তানের পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ডের কাছে হাত পেতেছে শেহবাজের সরকার। তবে তাও নিস্তার পাওয়া যাবে কি না🎃, তা নিয়ে নিশ্চিত নয় পাক সরকার। তবে চিনা সাহায্য পেয়ে কিছুটা চাঙ্গা পাক সরকারের মনোবল। এদিকে সম্প্রতি দেশের অর্থনীতির হাল ফেরাতে ইতিমধ্যেই মিনি বাজেট পেশ করেছে পাকিস্তান। নয়া বাজেটে আইএমএফ-এর 'শর্ত' মানতে আমজনতার ওপরে করের বোঝা চাপিয়েছে পাক সরকার। বাড়ানো হয়েছে পেট্রোল, ডিজেলের দাম। এই আবহে গত বুধবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ জানান, এবার মন্ত্রী ও সরকারি পরামর্শদাতাদের ভাতা ও যাতায়াতের খরচে কাটছাঁট করা হবে। এদিকে পাক মন্ত্রীদের দামি দামি গাড়ি ব্যবহার, বিদেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে বিমানের বিজনেস ক্লাসের টিকিট কাটার ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। এর ফলে সরকারের মোট ২০০ বিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি সাশ্রয় হবে। ভারতীয় মুদ্রায় তা প্রায় ৬০০ কোটিরও বেশি। সরকারের দাবি, সকল মন্ত্রীরা স্বেচ্ছায় এই নিয়ম মানতে রাজি হয়েছেন।
উল্লেখ্য, দেশের হাল ফেরাতে আইএমএফ-এর থেকে ১ বিলিয়ন ডলার অর্থ সাহায্য চেয়েছে পাকিস্তান। তবে সেই সংক্রান্ত চুক্তি এখনও কার্যকর হয়নি। আলোচনা এখনও চলছে। আইএমএফ-এর শর্ত মানার চেষ্টা করছে পাকিস্তান। তবে আইএমএফ-এর শর্ত নিয়ে যে পাক সরকারের মন্ত্রীদের মধ্যে অস্বস্তি রয়েছে, তা বারবার প্রকাশ্যে এসেছে। এদিকে এই সপ্তাহেই পাকিস্তানের সঙ্গে আইএমএফের চুক্তি নিয়ে আলোচনা শেষ হওয়ার কথা। এরপরই আইএমএফ সিদ্ধান্ত নেবে যে পাকিস্তানকে ঋণ দেও🌄য়া হবে কি না। তার আগেই অবশ্য চিনের থেকে অর্থসাহায্য পেয়েছে ইসলামাবাদ।