আমাজন, ওলা, জোমাটোর মতো প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে অনলাইন লেনদেনের উপর সারচার্জ আরোপের একটি বিল অনুমোদন করল রাজস্থান মন্ত্রিসভা। এটি চুক্তিভিত্তিক কর্মী বা গিগকর্মীদের জন্য কল্যাণমূলক সুবিধা তহবিল দেওয়া হয়। এই ধরনের প্রকল্প দেশের মধ্যে প্রথম নিল রাজস্থান।গিগ কর্মীদের সংখ্যা ভারতে আনুমানিক দেড় কোটি। ক্রমবর্ধমান এই সেক্টরে কর্মী সংখ্যাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে পাঁচটি রাজ্যে নির্বাচন, এরই সঙ্গে আগামী বছরে দেশজুড়ে সাধারণ নির্বাচন। এর আগে বিভিন্ন রাজ্যের সরকার নানান জনমোহিনী কল্যাণমূলক প্রকল্প নিয়ে আসছে।রাজস্থান রাজ্য বিধানসভা সোমবার প্ল্যাটফর্ম-ভিত্তিক গিগ শ্রমিকদের জন্য কল্যাণমূলক বিল অনুমোদন করেছে, যার অধীনে অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলি লেনদেনের উপর ২ শতাংশ পর্যন্ত সারচার্জ সংগ্রহ করবে। শ্রমিক ও সরকারি প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বোর্ড গঠন করা হবে। এই বোর্ডের পরিচালনায় শ্রমিকদের কল্যাণ তহবিলে অর্থ জমা হবে।রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট একটি বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এই আইনের মাধ্যমে গিগ কর্মীদের স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।’ অর্থনীতিতে বিশাল অবদান থাকা সত্ত্বেও গিগ শ্রমিকদের বর্তমান শ্রম আইনের আওতায় আনা হয়নি। এই নিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বারংবার গিগ শ্রমিকরা বিক্ষোভ প্রদর্শনও করেছেন।এই বিলটি কার্যকর হলে রাজ্যের ৪ লক্ষ গিগ কর্মী উপকৃত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। সংশিষ্ট প্ল্যাটফর্মের বিরুদ্ধে গিগ কর্মীদের অভিযোগের ক্ষেত্রে বিচার করার ক্ষমতা সহ একটি ট্রাইব্যুনাল গঠনের বিধান রয়েছে এই বিলে। গিগ কর্মীরা রাজস্থান বিধানসভার এই বিলকে স্বাগত জানিয়েছেন। লক্ষ লক্ষ গিগ শ্রমিকের আন্দোলনের জয় হিসেবেই দেখছেন তাঁরা।জাতীয় স্তরে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকার ২০২০ সালে একটি নতুন সামাজিক নিরাপত্তা কোড সহ শ্রম আইন সংশোধন করার জন্য সংসদের অনুমোদন পেয়েছিল, তবে কিছু কোম্পানি ও ইউনিয়নের বিরোধিতায় তা বাস্তবায়িত হয়নি। প্রসঙ্গত, চলতি মাসেই কংগ্রেস শাসিত কর্ণাটক সরকার গিগ কর্মীদের জন্য বিনামূল্যে বিমা কভারেজ ঘোষণা করেছে। এবার রাজস্থান বিধানসভায় পাস হল এই বিল।গিগ ওয়ার্কারদের অ্যাসোসিয়েশনগুলি সরকারকে আবেদন জানিয়েছে জাতীয় পর্যায়ে ন্যূনতম মজুরি, নির্দিষ্ট শ্রম ঘণ্টা এবং সামাজিক নিরাপত্তার সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য পদক্ষেপ নিতে। গিগ শ্রমিকদের নেতা সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমরা আশা করছি নির্বাচনের আগে, মোদী সরকার গিগ কর্মীদের সুযোগ-সুবিধার জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ নেবেন।’