লোকসভায় বিলের পক্ষে ভোট দেওয়ার পর ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি। তার আগেই ফের অবস্থান বদলের ইঙ্গিত দিল শিব সেনা। রাজ্যসভায় বিলটির সমর্থনের জন্য দুটি শর্ত পূরণের দাবি জানাল তারা।গতকাল সকালে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধিতায় সুর চড়িয়েছিল শিব সেনা। রাতেই অবস্থান পালটে বিলের পক্ষে ভোট দেন দলের সাংসদরা। তখনই শিব সেনার অবস্থান বদল নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। যদিও সেনা সাংসদ অরবিন্দ সাওয়ান্ত বলেন, "দেশের স্বার্থে আমরা বিলের সমর্থন করেছি।" মহারাষ্ট্রে সেনার দুই জোটসঙ্গী কংগ্রেস ও এনসিপি এনিয়ে অবশ্য মুখ খোলেনি। কিন্তু, দুপুরেই ফের অবস্থান থেকে কিছুটা সরে দাঁড়ান সেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। তিনি জানান, সেনার দাবিমতো সরকার যদি নতুন নাগরিকদের (বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আগত ছটি ধর্মের মানুষ) প্রথম ২৫ বছর ভোটদানের অধিকার প্রদান না করে তবেই বিলের পক্ষে সংসদের উচ্চকক্ষে ভোট দেবেন দলের সাংসদরা। পাশাপাশি, শ্রীলঙ্কা থেকে আগত শরনার্থীদের কী সম্ভাবনা রয়েছে, সেদিকও বিবেচনা করার দাবি জানান উদ্ধব।সেনা প্রধান বলেন, “এই বিষয়গুলি স্পষ্ট না হলে আমরা বিলে সমর্থন জানাব না। যদি কেউ এই বিলের জন্য আতঙ্কিত হন, তাহলে তাঁর সংশয় অবশ্যই কাটানো উচিত। ওরা আমাদের নাগরিক, তাই তাঁদের প্রশ্নেরও উত্তর দিতে হবে।”বিজেপিকে আক্রমণ করে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "কেউ বিলের বিরোধিতা করলেই তিনি যে দেশদ্রোহী হবেন, এমন ভাবাটা ওদের (বিজেপির) ভ্রম। রাজ্যসভায় বিলে আমরা কয়েকটি পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছে। এটা ভ্রান্ত ধারণা যে, একমাত্র বিজেপি একমাত্র দেশের বিষয়ে চিন্তিত।"প্রসঙ্গত, রাজ্যসভায় বিজেপির কাছে পর্যাপ্ত সংখ্যা নেই। ২৪৫ আসন বিশিষ্ট কক্ষে বিজেপির হাতে রয়েছে ৮৩ জন সাংসদ। সঙ্গে জেডিইউয়ের ছয়, অকালি শিরোমণি দলের তিন, এলজেপি ও আরপিআই(এ)-র একজন করে সাংসদ রয়েছেন। ১১ জন মনোনীত সদস্য-সহ এনডিএ-র পক্ষে রয়েছেন ১০৫ জন। বিজেপির হিসেব অনুযায়ী, রাজ্যসভায় আপাতত ২৩৮ জন রয়েছেন। ফলে ১২০ জন সাংসদের সমর্থন পেলেই তাঁরা বিল পাশ করাতে পারবেন। সেজন্য এআইডিএমকে (১১), বিজেডি(৭), ওয়াইএসএআর কংগ্রেস (২) ও তেলুগু দেশম পার্টির (২) সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছে গেরুয়া শিবির। তাদের আশা, লোকসভার মতো চারটি দলই রাজ্যসভায় বিলের পক্ষে ভোট দেবে। সেক্ষেত্রে অন্য কোনও দলের মুখাপেক্ষী হয়ে বসে থাকতে হবে না। অন্যদিকে, শিবসেনার হাতে রয়েছে তিনজন সাংসদ। ওই চারটি দলের ভোট পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে মত রাজনৈতিক মহলের।