নিজের ৪ বছরের পুত্র সন্তানকে খুন করার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন বেঙ্গালুরু ভিত্তিক আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সংস্থার সিইও সূচনা শেঠ। কলকাতা যোগ থাকা এই মহিলাকে মঙ্গলবার আদালতে পেশ করা হয়েছিল। তাঁকে ৬ দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয় আদালতের তরফ থেকে। এদিকে পুলিশি জেরায় সূচনা নাকি দাবি করেন, নিজের ছেলেকে খুন করার পর আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। অপরদিকে ময়নাতদন্তে জানা গিয়েছে, সূচনা নিজের ছেলেকে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করেছিলেন। এরপরই নাকি নিজের শিরা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন সূচনা। সূচনার বাঁ হাতের কব্জিতে একটি গভীর ক্ষত চিহ্নও রয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, মাইন্ডফুল এআই ল্যাব নামক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা এই সূচনা। জেরায় এআই সংস্থার সিইও দাবি করেন, ছেলের হেফাজত পাওয়া নিয়ে মামলা চলছিল। নিজের স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ করতে চাইছিলেন তিনি। (আরও পড়ুন: CU, রামকౠৃষ্ণ মℱিশনে পড়াশোনা সূচনার! নিজের ছেলেকে খুন করা এই AI সংস্থার CEO কে?)
জানা যায়, বেশ কয়েকদিন ধরে উত্তর গোয়ার ক্যান্ডোলিমে একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া করে নিজের সন্তানের সঙ্গে থাকছিলেন সূচনা। মনে করা হচ্ছে, সেই অ্যাপার্টমেন্টেই ছেলেকে খুন করেন সূচনা। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, গত শনꩲিবার উত্তর গোয়ার সোল বানিয়ান গ্রান্ডে-র একটি অ্যাপার্টমেন্টে চেকইন করেছিলেন সূচনা। এরপর সোমবার তিনি সেই অ্যাপার্টমেন্ট ছেড়ে দেন। তিনি সোল বানিয়ান গ্রান্ডে-র কর্মীদের তাঁর জন্য একটি ট্যাক্সি বুক করার জন্য বলেন। সেই ট্যাক্সি করে বেঙ্গালুরু যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। সেই সময় অবশ্য সোল বানিয়ান গ্রান্ডে-র কর্মীরা সূচনাকে বিমানে করে বেঙ্গালুরু যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তবে সূচনা ট্যাক্সি ডাকার ওপরই জোর দেন। ৩০ হাজার টাকা দিয়ে বেঙ্গালুরুর ট্যাক্সি ভাড়া করেন সূচনা। এদিকে সেই সময় সোল বানিয়ান গ্রান্ডে-র কর্মীরা লক্ষ্য করেন, ছেলের সঙ্গে সেখানে এলেও অ্যাপার্টমেন্ট ছাড়ার সময় তিনি একা। তাতে সন্দেহ হয় তাঁদের।
এদিকে সূচনা সেই জায়গা ছাড়ারꦜ পর হাউজকিপিং কর্মীরা সেই অ্যাপার্টমেন্টে গিয়ে রক্তের দাগ দেখতে পান। এরপরই সোল বানিয়ান গ্রান্ডে-র কর্মীরা বিষয়টি জানান গোয়া পুলিশকে। এরপর গোয়া পুলিশ সেই ট্যাক্সি চালকের ফোন নম্বর জোগাড় করে তাঁকে ফোন করে। পুলিশ সূচনার সঙ্গে কথা বলতে চায়। সূচনার থেকে জানতে চাওয়া হয়, তাঁর সন্তান এখন কোথায়। জবাবে সূচনা দাবি করেন, তাঁর সন্তান এক বন্ধুর সঙ্গে আছে। একটি ভুয়ো ঠিকানাও দেন তিনি। গোয়া পুলিশ বিষয়টি বুঝতে পেরে আবার সেই ট্যাক্সি চালককে ফোন করে। এবারে ট্যাক্সি চালকের সঙ্গে কোঙ্কনি ভাষায় কথা বলে পুলিশ। যাতে সূচনা তাঁদের কথোপকথন বুঝতে না পারে। ট্যাক্সি চালককে চিত্রদুর্গ পুলিশ থানায় যেতে নির্দেশ দেয় গোয়া পুলিশ। এরপর ট্যাক্সি চালক সূচনার অজ্ঞাতেই পুলিশ থানায় গিয়ে হাজির হয়। সেখানে চিত্রদুর্গ থানার পুলিশ সূচনাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারির সময় সূচনার কাছ থেকে একটি ব্যাগ পাওয়া যায়। তাতেই ছিল তাঁর ছেলের মৃতদেহ। পরে জেরার জন্য সূচনাকে গোয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এদিকে সূচনার লিঙ্কডইন প্রোফাইল অনুযায়ী, তিনি হারভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেছেন। ডেটা সায়েন্সে তাঁর ১২ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে।