নিজের সন্তানকে খুন করার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন কলকাতার মেয়ে সূচনা শেঠ। গোয়ার থানায় সূচনাকে জেরা করার সময় সেখানে গিয়ে পৌঁছেছিলেন তাঁর স্বামী ভেঙ্কটরমন পিআর। স্ত্রীর সঙ্গে নাকি থানাতেই বচসা শুরু হয় ভেঙ্কটরমনের। পুলিশের সামনেই নাকি স্ত্রীকে প্রশ্ন করেন, 'তুমি এটা কেন করলে?' জবাবে নাকি সূচনা বলেছিলেন, 'আমি এই অপরাধটা করিনি।' গোয়ার সেই থানায় উপস্থিত থাকা এক পুলিশকর্মী স্বামী-স্ত্রীর এই কথোপখতনের বিষয়ে জানান সংবাদমাধ্যমকে। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, নিজের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য উলটে স্বমীকে দোষারোপ করেন সূচনা। পুলিশকর্মীর বক্তব্য, 'সূচনা নিজের স্বামীকে বলেন, আমি যতক্ষণ পুলিশি হেফাজতে আছি, তুমি মুক্ত আছো।' এদিকে ভেঙ্কট নাকি সূচনাকে প্রশ্ন করেন, 'তুমি যদি আমাদের ছেলেকে না মেরে থাকো, তাহলে কীভাবে হল এটা?' পুলিশকর্মী জানান, দু'জনেই নিজের রাগ উগরে দেন একে অপরের ওপরে। (আরও পড়ুন: 'তাইওয়ানের স্বধীনতার পক্ষে নই', চিন বিরোধী দলের⭕ জয়ের পরই♓ বললেন বাইডেন)
আরও পড়ুন: মালেতে নিজꦇের গড়েই কাটল নাক, মলদ্বীপের গুরুত্বপূর্ণ ভোটে💧 হার মুইজ্জুর দলের
এর আগে এই মামলার তদন্তে নেমে সূচনার থেকে দোমড়ানো মোচড়ানো টিস্যু পেপারে লেখা একটা নোট উদ্ধার করেছিল পুলিশ। ৬ লাইন ল🍎েখা সেই নোটটি সূচনার সুটকেস থেকে উদ্ধার করা হয় বলে জানা গিয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, সেই নোটে লেখা ছিল, 'কোর্ট আর আমার স্বামী আমায় চাপ দিচ্ছে যাতে সন্তানকে তার হেফাজতে রাখা হয়। কিন্তু এটা আমি মেনে নিতে পারছি না। কারণ আমার প্রাক্তন স্বামী অত্যন্ত হিংস্র ধরনের। সে বাচ্চাকেও খারাপ সব স্বভাব শেখায়। আমার ভীষণ অপরাধবোধ কাজ করছে। আমি হতাশ। আমি আমার সন্তানকে খুব ভালোবাসি। কিন্তু আমি চাই না ও ওর বাবার সঙ্গে দেখা করুক।'
আরও পড়ুন: ২০২৩♏-এ টিম কুকের আয় কমল 🎃৩০০ কোটি! তাও বেতনের অঙ্কে ঘুরে যাবে মাথা
এদিকে পুলিশি ♑জেরায় সূচনা নাকি দাবি করে🤪ন, নিজের ছেলেকে খুন করার পর আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। অপরদিকে ময়নাতদন্তে জানা গিয়েছে, সূচনা নিজের ছেলেকে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করেছিলেন। এরপরই নাকি নিজের শিরা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন সূচনা। সূচনার বাঁ হাতের কব্জিতে একটি গভীর ক্ষত চিহ্নও রয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, মাইন্ডফুল এআই ল্যাব নামক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা এই সূচনা। জেরায় এআই সংস্থার সিইও দাবি করেন, ছেলের হেফাজত পাওয়া নিয়ে মামলা চলছিল। নিজের স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ করতে চাইছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: ‘আহ্বায়ক ইস্যুতে মমতার অℱবস্থান স্পষ্ট’, নীতীশের পদ প্রত্যাখ্যানের পর বলল তৃণমূল
জানা যায়, গত ৬ জানুয়ারি উত্তর গোয়ার সোল বানিয়ান গ্রান্ডে-র একটি অ্যাপার্টমেন্টে চেকইন কꦛরেছিলেন সূচনা। এরপর ৮ জানুয়ারি তিনি সেই অ্যাপার্টমেন্ট ছেড়ে দেন। তিনি সোল বানিয়ান গ্রান্ডে-র কর্মীদের তাঁর জন্য একটি ট্যাক্সি বুক করার জন্য বলেন। সেই ট্যাক্সি করে বেঙ্গালুরু যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। সেই সময় অবশ্য সোল বানিয়ান গ্রান্ডে-র কর্মীরা সূচনাকে বিমানে করে বেঙ্গালুরু যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তবে সূচনা ট্যাক্সি ডাকার ওপরই জোর দেন। ৩০ হাজার টাকা দিয়ে বেঙ্গালুরুর ট্যাক্সি ভাড়া করেন সূচনা। এদিকে সেই সময় সোল বানিয়ান গ্রান্ডে-র কর্মীরা লক্ষ্য করেন, ছেলের সঙ্গে সেখানে এলেও অ্যাপার্টমেন্ট ছাড়ার সময় তিনি একা। তাতে সন্দেহ হয় তাঁদের।
এদিকে সূচনা সেই জায়গা ছাড়ার পর হাউজকিপিং কর্মীরা সেই অ্যাপার্টমেন্টে গিয়ে র♐ক্তের দাগ দেখতে পান। এরপরই সোল বানিয়ান গ্রান্ডে-র কর্মীরা বিষয়টি জানান গোয়া পুলিশকে। এরপর গোয়া পুলিশ সেই ট্যাক্সি চালকের ফোন নম্বর জোগাড় করে তাঁকে ফোন করে। পুলিশ সূচনার সঙ্গে কথা বলতে চায়। সূচনার থেকে জানতে চাওয়া হয়, তাঁর সন্তান এখন কোথায়। জবাবে সূচনা দাবি করেন, তাঁর সন্তান এক বন্ধুর সঙ্গে আছে। একটি ভুয়ো ঠিকানাও দেন তিনি। গোয়া পুলিশ বিষয়টি বুঝতে পেরে আবার সেই ট্যাক্সি চালককে ফোন করে। এবারে ট্যাক্সি চালকের সঙ্গে কোঙ্কনি ভাষায় কথা বলে পুলিশ। যাতে সূচনা তাঁদের কথোপকথন বুঝতে না পারে। ট্যাক্সি চালককে চিত্রদুর্গ পুলিশꦿ থানায় যেতে নির্দেশ দেয় গোয়া পুলিশ। এরপর ট্যাক্সি চালক সূচনার অজ্ঞাতেই পুলিশ থানায় গিয়ে হাজির হয়। সেখানে চিত্রদুর্গ থানার পুলিশ সূচনাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারির সময় সূচনার কাছ থেকে একটি ব্যাগ পাওয়া যায়। তাতেই ছিল তাঁর ছেলের মৃতদেহ। পরে জেরার জন্য সূচনাকে গোয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।