হাসপাতালে কোভিড রোগীদের দুর্দশার অভিযোগ পেয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলার শুনানির করল ত্রিপুরা হাই কোর্ট। সেই সঙ্গে এই বিষয়ে রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ত্রিপুরা সরকারকে হলফনামা পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হল।প্রধান বিচারপতি অখিল কুরেশি ও বিচারপতি শুভাশিস তলাপাত্রকে নিয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ তার নির্দেশে জানিয়েছে, কোভিড পরীক্ষায় পজিটিভ প্রমাণিত রোগী ও তাঁদের আত্মীয়দের সরকারি হাসপাতালে হেনস্থার খবর স্থানীয় সংবাদপত্রে সবিস্তারে প্রকাশিত হয়েছে। সংবাদে জনস্বাস্থ্য পরিষেবার বেশ কিছু খামতি প্রকাশ্যে এসেছে। আদালত মনে করছে, এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ এবং আক্রান্তদের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার বিষয়ে রাজ্য সরকারের ভূমিকা সম্পর্কে পর্যালোচনা এবং প্রশাসনের কাছে তার ব্যাখ্যা চাওয়ার এটাই সঠিক সময়। জানা গিয়েছে, ত্রিপুরা সরকারকে হলফনামায় রাজ্যে মোট অ্যাক্টিভ কোভিড রোগীর সংখ্যা, কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র এবং সেই সঙ্গে সেখানে কর্মরত চিকিৎসা কর্মী ও প্যারামেডিক্যাল কর্মীর সংখ্যা, চিকিৎসক, প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো, চিকিৎসক, রোগী ও রোগীর আত্মীয়দের মধ্যে যোগাযোগ সংকট সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, কোভিড রোগী ভরতির জন্য কোনও বেসরকারি হাসপাতালকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে কি না এবং সরকারি কোভিড চিকিৎসাকেন্দ্রগুলির মানোন্নয়নে বরাদ্দ তহবিলের বিস্তারিত বিববরণও হলফনামায় অন্তর্ভুক্ত করতে রাজ্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সরকারি রিপোর্টে বলা হয়েছে, কোভিড রোগীদের জন্য সারারাজ্যে মোট ২,৮৬৫টি শয্যা রয়েছে, যার মধ্যে আগরতলার বৃহত্তম হাসপাতাল গোবিন্দ বল্লভ পন্থ হাসপাতালে রয়েছে ২৪০টি শয্যা। এই হাসপাতালে মোট ১৯টি ভেন্টিলেটর রয়েছে বলেও দাবি রাজ্য সরকারের। হাই কোর্ট মন্তব্য করেছে, এই মুহূর্তে শয্যাসংখ্যার তুলনায় হাসপাতালে কোভিড রোগীর সংখ্যা বেশি রয়েছে।রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব জেলা হাসপাতালগুলি ঘুরে কোভিড রোগীদের আগরতলায় না পাঠিয়ে সেখানেই চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য কর্তৃপক্ষকে আর্জি জানিয়েছেন। এ ছাড়া সম্প্রতি দশ জন চিকিৎসা আধিকারিক ও একজন আইএএস আধিকারিক-সহ বিশেষ করোনা দলও গঠন করেছে রাজ্য সরকার। সেই সঙ্গে শুরু হতে চলেছে কোভিড চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগের ব্যবস্থাও।