সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুসারে, ব্যক্তি যদি সঠিকভাবে শ্রাদ্ধ ও তর্পণ না করেন, তাহলে পিতৃপুরুষ মোক্ষ লাভ করেন না। এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে পিতৃপুরুষরা রাগান্বিত হলে পরিবারের উন্নতি থেমে যায় এবং প্রতিটি কাজে বাধা আসতে শুরু করে।
পিতৃ তর্পণ করে পিতৃপুরুষের পুজো করলে তাঁরা প্রসন্ন হন এবং তাদের আশীর্বাদ সমগ্র পরিবারের উপর থাকে।
মাতৃ নবমী পিতৃপক্ষের সময় দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তিথির অন্যতম একটি। মাতৃ নবমীর সময়, যাদের মা, ঠাকুরমার প্রয়াণ হয়েছে সেই সকল পূর্বপুরুষদের জন্য শ্রাদ্ধ করা হয়।
এই বছর নবমী তিথি ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ এ পড়ছে। সর্বপিত্রী অমাবস্যার দিনে শ্রাদ্ধ করা হয় সেই সমস্ত পূর্বপুরুষদের জন্য যাদের মৃত্যু তিথি জানা নেই। এ বছর তা পড়ছে ২ অক্টোবর।
পিন্ড দানের গুরুত্ব: ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, পূর্বপুরুষদের পিন্ড দান নিবেদন করলে পূর্বপুরুষের আশীর্বাদ পাওয়া যায়।
পুরাণ অনুসারে, পিতৃপক্ষের সময়, তিন প্রজন্মের পূর্বপুরুষরা স্বর্গ ও পৃথিবীর মধ্যে পিতৃ লোকে বাস করেন। এ সময় পিতৃপুরুষদের শ্রাদ্ধ করলে তারা মোক্ষ লাভ করে স্বর্গে যান। এতে ঘরে পিতৃ দোষের সমস্যা দূর হয় এবং সুখ শান্তি আসে।
ব্রহ্ম বৈবর্ত পুরাণ অনুসারে, দেবতাদের খুশি করার আগে, মানুষের উচিত তার পূর্বপুরুষদের খুশি করা।
হিন্দু জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, পিতৃ দোষকে সবচেয়ে গুরুতর দোষ হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
এটা বিশ্বাস করা হয় যে এই সময়কালে, যমরাজ পূর্বপুরুষদের কিছু সময়ের জন্য মুক্ত করেন যাতে তারা তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে নৈবেদ্য গ্রহণ করতে পারে।
শ্রাদ্ধে তিল, চাল, যব ইত্যাদিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। শ্রাদ্ধে তিল ও কুশের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি।
শ্রাদ্ধের সময় পূর্বপুরুষদের নিবেদন করা খাবার পিন্ডি আকারে নিবেদন করতে হবে। পুত্র, ভাই, নাতি, প্রপৌত্র এবং মহিলাদেরও শ্রাদ্ধ করার অধিকার রয়েছে।