যত কাণ্ড কাকদ্বীপে। ভোটার তালিকায় নাম সংযোজন – বিয়োজনে বেনিয়ম করায় দিন কয়েক আগেই এক সহকারী সিস্টেম ম্যানেজারকে সাসপেন্ড করেছে নির্বাচন কমিশন। সেই কাকদ্বীপে এবার উঠল টাকা দিয়ে ভোটার তালিকায় নাম তোলার অভিযোগ। কাকদ্বীপের বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, তৃণমূল নেতাদের টাকা দিলেই নাম উঠছে ভোটার তালিকায়। পালটা স্থানীয় বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরার অভিযোগ, এতে তৃণমূল জড়িত নয়। প্রশাসনিক আধিকারিকদের কারসাজিতে চলছে এই দুর্নীতি।
অভিযোগ, কাকদ্বীপ বিধানসভা কেন্দ্রের ৩টি পঞ্চায়েতে গত ৩ বছরে ভোটারের সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তদন্তে উঠে এসেছে যে এই ৩ পঞ্চায়েতে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ভোটার তালিকায় নাম তোলা হয়েছে। এরকম ১৩০ জনকে চিহ্নিতও করেছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মীরা। কমিশনের ৩ কর্মীকে শোকজ করা হয়েছে। সাসপেন্ড করা হয়েছে একজনকে। কিন্তু তাতেও বিতর্ক থামছে না।
বাংলাদেশ থেকে এসে কাকদ্বীপে বসবাসকরীদের একাংশের অভিযোগ, তাঁরা ২০ – ২৫ বছর আগে বিবাহসূত্রে ভারতে এলেও তাদের নাম এখনও ভোটার তালিকায় ওঠেনি। উলটে যারা তৃণমূল নেতাদের টাকা দিয়েছেন তাদের কয়েক বছরের মধ্যে ভোটার তালিকায় নাম উঠে গিয়েছে। তৃণমূল নেতাদের ১০ হাজার টাকা দিলেই কয়েক মাসের মধ্যে ভোটার তালিকায় নাম উঠে যাচ্ছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা।
ভোটার তালিকায় টাকার বিনিময়ে নাম তোলা হচ্ছে বলে স্বীকার করে নিলেও তাতে দলীয় নেতা-কর্মীদের যোগ মানতে চাননি কাকদ্বীপের তৃণমূল বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরা। তিনি বলেন, একটা দুষ্টচক্র প্রশাসনিক আধিকারিকদের একাংশের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এই কাজ করছে। কারা এই কাজ করছে তা দেখার দায়িত্ব প্রশাসনের। যাদের নাম তালিকায় তোলা হচ্ছে তারা এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সরকারি সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে। সরকারি সুযোগ সুবিধা পাওয়ার সঙ্গে নাগরিকত্ব বা ভোটার তালিকায় নাম থাকার কোনও সম্পর্ক নেই। বিজেপির অভিযোগ খারিজ করে তিনি বলেন, আমরা সবাই সনাতনী হিন্দু। সনাতনী এটা ওটা এসব সংকীর্ণ স্বার্থের সঙ্গে এর কোনও যোগ নেই।
পালটা বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলপন্থী সরকারি কর্মচারী সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাকদ্বীপসহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বেছে বেছে হিন্দু ভোটারদের নাম ভোটার তালিকা থেকে কাটা হচ্ছে। তৃণমূলের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে বলে এই কাজ করছে তারা।