গোটা দুনিয়াকে অবাক করে, সিরিয়ার এককালের 'জঙ্গি' তথা বর্তমান প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারার সঙ্গে 'করমর্দন' করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আহমেদ আল শারার যে শুধু জঙ্গি পরিচিতি রয়েছে তা নয়, সঙ্গে বেশ কিছু তথ্যে দাবি করা হচ্ছে, এককালে লাদেনের আল কায়দার সঙ্গে যোগ ছিল আল শারার। যে লাদেনের আল কায়দা আমেরিকার বুকে ৯/১১র বীভৎস জঙ্গি হানায় বহু মার্কিন নাগরিককে খুন করে। যে লাদেনকে পরে নিকেশও করে জর্জ বুশের আমেরিকা।
একদিকে, ইজরায়েল বনাম হামাস সংঘাত তুঙ্গে। সেই পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের সফরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। গত ২৫ বছরে ট্রাম্পই প্রথম মার্কিন রাষ্ট্রপতি যিনি সিরিয়ার কোনও নেতার মুখোমুখি হলেন। আর সদ্য যে সিরিয়ান প্রেসিডেন্টের তিনি মুখোমুখি হন, সেই আল শারা এককালে ছিল মার্কিন ‘ওয়ান্টেড’ লিস্টে, ছিল ইসলামিস্ট গেরিলা যুদ্ধের অন্যতম মুখ, আর সিরিয়া থেকে বাশার আল আসাদ আমলকে উৎখাত করতে এই আল শারা অন্যতম মুখ হিসাবে উঠে আসে।
সদ্য আল শারার প্রশংসা শোনা যায় ট্রাম্পের মুখে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট, তাঁরই দেশের চিহ্নিত করা এককালের ‘ওয়ান্টেড’ জঙ্গি তথা বর্তমান সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আল শারার প্রশংসায় বলেন,'একজন তরুণ আকর্ষণীয় যুবক। কঠিন যুবক। তাঁর একটি শক্তিশালী পুরনো সময় রয়েছে। খুব শক্তিশালী পুরনো সময়.. যোদ্ধা।' তিনি জানান, সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তাঁর বৈঠক ‘খুব ভালো’ হয়েছে।
( ‘কোনও টিউশন নেই, রোজ সর্বোচ্চ ২০ ঘণ্টা নিজে পড়া..’, বলছেন CBSE দশম শ্রেণির ১০০ শতাংশ প্রাপ্ত টপার)
সদ্যস সৌদির রিয়াধে, গাল্ফ কোঅপারেশন কাউন্সিলের বৈঠকের ফাঁকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেখা হয়। যা দুই দেশের কূটনীতির ক্ষেত্রে একটি তাবড় অধ্যায়। সদ্য সিরিয়া থেকে বেশ কিছু বিধি তুলে নিয়েছে আমেরিকা। শোনা যাচ্ছে, সেই প্রেক্ষাপটে সৌদির যুবরাজের অনুরোধে সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করেন ট্রাম্প। তাঁদের মধ্যে ইজরায়েলের সঙ্গে সিরিয়ার সম্পর্ক 'স্বাভাবিক' করা নিয়েও কথা হয়েছে বলে খবর। ট্রাম্প, আল শারাকে জানিয়েছেন যাতে তারা প্যালেস্তাইনের জঙ্গিদের প্রত্যর্পণ করে। তিনি শারার কাছে আবেদন জানান ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে আমেরিকার সংঘাতে, শারা যেন তাঁদের পাশে থাকেন। প্রসঙ্গত ট্রাম্পের এই কূটনৈতিক সাক্ষাৎকে সৌদি ও তুরস্ক সমর্থন জানিয়েছে। তবে তা আমেরিকা- ইজরায়েলের সম্পর্কে নয়া প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। যে ইজরায়েলের সঙ্গে সিরিয়ার সম্পর্ক তেমন ভালো নয়!
কে আহমেদ আল শারা?
সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী তাহরির আল শামের সদস্য এই আল শারা। প্রসঙ্গত, যে রিয়াধে ট্রাম্পের সঙ্গে শারার দেখা হয়েছে, সৌদির সেই রিয়াধেই জন্ম শারার। তথ্য বলছে, আল শারা, ইরাকে ২০০৩ সালের আগে আল কায়দার সদস্য ছিল। ইরাকের বিদ্রোহে সে ৩ বছর লড়েছে। আমেরিকা আল শারাকে গ্রেফতারও করেছিল। আমেরিকার ফোর্স আল শারাকে ২০০৬ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত বন্দি করেছিল। ২০১২ সালে আল কায়দার সমর্থনে আল নুসা ফ্রন্ট তৈরি করে এই আল শারা। আর তারই সঙ্গে এবার হাত মেলাতে দেখা গেল ট্রাম্পকে।