যুক্তরাষ্ট্রে ধৃত খলিস্তানি জঙ্গি হরপ্রীত সিং ওরফে হ্যাপি পাসিয়াকে নিয়ে মুখ খুললেন ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) প্রধান কাশ প্যাটেল। সোমবার কাশ আশ্বাস🍎 দিয়েছেন যে পঞ্জাবে হামলায় জড়িত সন্ত্রাসী হরপ্রীত সিংকে গ্রেফতারির পরে 'ন্যায়বিচার করবে'। এদিকে কাশ তদন্তকারী দলের প্রশংসা করেন। সঙ্গে জানান, এফবিআই স্যাক্রামেন্টো ভারতের সঙ্গে সমন্বয় করেই তদন্ত চালিয়েছে এই মামলায়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই নিয়ে কাশ প্যাটেল লেখেন, 'গ্রেফতার: হারপ্রীত সিং, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসকারী বিদেশি সন্ত্রাসী দলের সদস্য সে। আমরা বিশ্বাস করি, ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, উভয় দেশেরই পুলিশ স্টেশনে একাধিক হামলার পরিকল্পনায় জড়িত ছিল সে। এফবিআই স্যাক্রামেন্টো ভারতের সাথে সমন্বয় করে তদন্♔তটি পরিচালনা করেছে। সকলে চমৎকার কাজ করেছে এবং এই ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে। সহিংসতাকারীরা যেখানেই থাকুক না কেন - এফবিআই তাদের খুঁজে বের করꦛার কাজ অব্যাহত রাখবে।'
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ক্যালিফোর্নিয়ার স্যাক্রামেন্টো থেকে গ্রেফতার হয় খলিস্তানি জঙ্গি হরপ্রীত সিং ওরফে হ্যাপি পাসিয়া। তার সম্পর্কে এফবিআই জানিয়েছে, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) এবং খালিস্তানি জঙ্গি সংগঠন বব্বর খালসা ইন্টারন্যাশনালের (বিকেআই) সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছিল হরপ্রীত সিং। হরপ্রীত সিং অবৈধভাবে আমেরিকায় প্রবেশ করেছিল। এফবিআই 🦹এবং ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের এনফোর্সমেন্ট অ্যান্ড রিমুভাল অপারেশনস (ইআরও) ইউনিট যৌথভাবে তাকে গ্রেফতার করে। এফবিআই জানিয়েছে, হরপ্রীত সিং দীর্ঘদিন ধরে বার্নার ফোন এবং এনক্রিপ্টেড মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে নিজের পরিচয় গোপন করছিল।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, গত দু'বছরে পঞ্জাবে ১৪টি গ্রেনেড হামলা, একটি আইইডি বিস্ফোরণ এবং একটি আরপিজি (রকেট চালিত গ্রেনেড) হামলা সহ অন্তত ১৬টি সন্ত্রাসবাদী ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিল হরপ্রীত সিং। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে অমৃতসরের গুমতলা পুলিশ ফাঁড়ির কাছে কার্বুরেটর-ভিত্তিক আইইডি ব্যবহার করে এক সিনিয়র পুলিশ অফিসারের গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল এই হ্যাপি। তার আগে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে চণ্ডীগড়ের সেক্টর ১০-এ এক অবসরপ্রাপ্ত পঞ্জাব পুলিশ অফিসারকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলাতেও নাম উঠে আসে হ্যাপির। এই মামলায় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) হ্যাপিকে ধরিয়ে দেওয়ার জ🐈ন্যে ৫ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। এদিকে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ দাবি করেছে, মহাকুম্ভের সময় হামলার ছক কষেছিল এই হ্যাপি।
হরপ্রীত সিংয়ের অপরাধমূলক কর্মজীবন জগ্গু ভগবানপুরিয়া গ্যাং দিয়ে শুরু হয়েছিল, তবে পরে তিনি পাকিস্তান-ভিত্তিক সন্ত্রাসী হরবিন🅠্দর সিং সান্ধু ওরফে রিন্ডার সঙ্গে হাত মেলায়। এই সময়ে, বব্বর খালসা একটি গুরুত্বপূর্ণ অপারেটর হিসাবে বিবেচিত হয়। তারা একসাথে পঞ্জাবে মদ মাফিয়া, ব্যবসায়ী এবং হিন্দু নেতাদের নিশান👍া করে চাঁদাবাজির একটি সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক স্থাপন করেছিল। নেটওয়ার্কটি অগ্নিসংযোগ, গুলি এবং ভয় দেখিয়ে অর্থ সংগ্রহ করত। পঞ্জাব পুলিশের রিপোর্টে হরপ্রীতের মার্কিন সহযোগী গুরদেব সিং জয়জল পেহলওয়ান এবং গুরপ্রীত সিং ওরফে গোপী নওয়ানশাহরিয়া এবং জার্মানির স্বরণ সিং ওরফে জীবন ফৌজীর নামও রয়েছে। হরপ্রীত সিংয়ের গ্রেফতারির পর তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রত্যর্পণের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। পঞ্জাব পুলিশ এবং এনআইএ প্রয়োজনীয় নথি মার্কিন সংস্থাগুলির কাছে পাঠিয়েছে। ভারত সরকার আশা করছে যে তাকে শীঘ্রই ভারতে প্রত্যর্পণ করা সম্ভব হবে।