এবার নদী ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। উত্তরবঙ্গের তিস্তা, জলঢাকা এবং নানা নদীর জলস্তর নেমেছে। আর তারপরই এমন আশঙ্কা করতে শুরু করেছেন নদীর তীরবর্তী গ্রামের বাসিন্দারা। জলপাইগুড়ির কলাবাড়িতে ডায়না এবং ধূপগুড়িতে ডুডুয়া নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতির খবর পেয়েই সেখানে সেচমন্ত্রীকে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে সূত্রের খবর। আর তারপরই আজ, বুধবার উত্তরবঙ্গ সফরে আসছেন সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। নাগাড়ে বৃষ্টি কমলেও বর্ষা চলছে। তাই বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় শিলিগুড়িতে সতর্ক করা হয়েছে প্রশাসনকে।
অতীতের অভিজ্ঞতা অত্যন্ত খারাপ উত্তরবঙ্গের মানুষজনের। বর্ষা দাপট দেখালেই সব হারাতে হয় তাঁদের। সেটা সিকিমের হরপা বান থেকে শুরু করে বাঁধ ভেঙে বানভাসী পরিস্থিতি তৈরি হওয়া। এসব অভিজ্ঞতা রয়েছে উত্তরবঙ্গের মানুষজনের। তিস্তা নদী ফুলে উঠতেই সিঁদুরে মেঘ দেখেন তাঁরা। এই নদী কালিম্পং, দার্জিলিং জেলা এবং জলপাইগুড়ি ও মেখলিগঞ্জ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তবে এখন এই নদীর জলস্তর কমেছে। একই ছবি দেখা গিয়েছে জলঢাকা, ডায়না, কোচবিহার তোর্সা, রায়ডাক, মানসাই এবং শিলিগুড়ির মহানন্দা নদীর ক্ষেত্রে। সেচ দফতর সূত্রে খবর, পাহাড়ে বৃষ্টির তীব্রতা কমেছে। তাই নদীগুলির জলস্তর নামছে।
আরও পড়ুন: দিঘা পুলিশ হলিডে হোম–ইন্সপেকশন বাংলো বুকিং দেদার বাড়ছে, কেন এমন ঘটছে?
কিন্তু নদীগুলির জলস্তর নামলেও নদীর পাড়, বাঁধে ভাঙন ধরার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যেই কলাবাড়িতে ডায়না নদীর পাড়ে ভাঙন ধরার জেরে আশঙ্কা বাড়তে শুরু করেছে। অন্যান্য নদীর দিকেও তাই খেয়াল রাখতে হচ্ছে। আর গোটা বিষয়টি নিজে গিয়ে সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বলে সূত্রের খবর। তাই সেচ মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া সেখানে ছুটেছেন। এই বিষয়ে সেচ দফতরের উত্তর–পূর্ব ডিভিশনের চিফ ইঞ্জিনিয়ার কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক বলেন, ‘ডায়না নদীতে বোল্ডার দিয়ে পাড় বাঁধানোর কাজে নামা হয়েছে। ধূপগুড়িতে ডুডুয়ার পাড় যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে মেরামত করা হয়েছে। আর অন্য কোনও নদীতে ভাঙন এখনও দেখা দেয়নি।’
নবান্ন সূত্রে খবর, আজ বুধবার কলকাতা থেকে শিলিগুড়িতে আসছেন সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। এই শিলিগুড়ি থেকে এসে সেচমন্ত্রী শিলিগুড়ি স্টেট গেস্ট হাউসে দার্জিলিং, কালিম্পং জেলা প্রশাসন, পুলিশ এবং সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তারপর উত্তরবঙ্গের নদী এবং বাঁধের অবস্থা, সিকিম ও ভুটানের আবহাওয়া ও তার জেরে যদি দুর্যোগ পরিস্থিতি তৈরি হয় সেটা নিয়ে আলোচনা করবেন। এরপরে সেচ মন্ত্রী আলিপুরদুয়ার জেলায় যাবেন। সেখানে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন। বৃহস্পতিবার মানস ভুঁইয়া জলপাইগুড়িতে আসবেন। তিস্তা এবং অন্যান্য নদী পরিদর্শন করে শুক্রবার কলকাতায় ফিরবেন। আর রিপোর্ট দেবেন মুখ্যমন্ত্রীকে।