জৈষ্ঠ মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে জামাইষষ্ঠী পালন করা হয়। এই তিথি অরণ্য ষষ্ঠী নামেও পরিচিত। বাংলার ঘরে ঘরে এই ষষ্ঠী পালন করা হয়। জামাইষষ্ঠীর অন্যতম আয়োজন হলো ভোজন পর্ব। মা ষষ্ঠীর পুজো🗹র সঙ্গে জামাইকে আদর আপায়ণের পর্ব জামাইষষ্ঠী নামে পরিচিত।
এক এক জায়গায় এক এক রকম নিয়মে জামাইষষ্ঠী পালন করা হয়। তবে নবদ্বীপে একটু অন্যভাবে জামাইষষ্ঠী পালন করা হয়। এখানে জৈষ্ঠ মাসের শুক্লপক্ষে মহাপ্রভুর মন্দিরে জামাইষষ্ঠী পালিত হয়। সেদিন তিনি শ্রীকৃষ্ণের অবতার নন বরং নিমাই অর্থাৎ তাদের সকলের আদরের জামাই। এই মন্দিরের সেবায়েতরা বংশ পরম্পরায় নিমাইয়ের স্ত্রী বিষ্ণুপ্রিয়ার ভাইদের উত্তর পুরুষ। প্রায় সাড়𒅌ে ৩০০ বছর ধরে শ্রী চৈতন্যদেবের বিগ্রহকে তারা জামাই হিসাবে এই দিন আপ্যায়ন করে আসছেন। স্থানীয় প্রবীণারা এই দিন নিমাই কে ষাটের বাতাস দেয়। এরপরে দেওয়া হয় নতুন পোশাক, সঙ্গে থাকে রাজসিক ভোজের আয়োজন।
রুপোর রেকাবিতে করে মরসুমী ফল, রুপোর বাটিতে ক্ষীর, রুপোর গ্লাসে জল দিয়ে প্রথমে ঘুম ভাঙ্গানো হয় মহাপ্রভুর। তারপর থাকে চিঁড়ে, মুড়কি, দই আম কাঁঠাল ও মিষ্টির ফলাহার। মধ্যাহ্ন ভোজে ෴থাকে নানা তরকারি, , থোড়, বেগুন পাতুরি, ছানার ডালনা, লাউ, চাল কুমড়ো, পোস্ত দিয়ে রাঁধা সব রকম নিরামিষ পদ। দিবানিদ্রা দেওয়ার পর বিকেলে নিমাইয়ের উত্থান ভোগে থাকে ছানা আর মিষ্টি। রাতে শয়নের এর আগে গাওয়া ঘিতে ভাজা লুচির সঙ্গে মালপোয়া আর রাবড়ি দেওয়া হয়। সবার শেষে সুগন্ধি দেওয়া খিলিপান দেওয়া হয়। এই মন্দিরে জামাইষষ্ঠীর ভোগের বিশেষত্ব হলো আম ক্ষীর। গাছপাকা আমের রস ক্ষীরের সাথে পাক দিয়ে তৈরি করা হয় এই পদ। এর সঙ্গে সেবায়েত পরিবারের ঘরে তৈরি মিষ্টি ছাড়া জামাইরুপী নিমাইয়ের মিষ্টি মুখ অসম্পূর্ণ। এভাবেই বছরের পর বছর তারা এই রীতিতে জামাইষষ্ঠী পালন করে আসছেন।