জৈষ্ঠ মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে জামাইষষ্ঠী পালন করা হয়। অন্যান্য রীতিনীতির মধ্যে ষষ্ঠী পালনের ক্ষেত্রেও বাঙাল ঘটির ভেদাভেদ রয়েছে। ষষ্ঠী উপাসনার ক্ষেত্রে বাঙাল বাড়িতে পুজোর ডালির নাম মুঠা আর ঘটি ব🍬াড়িতে পুজোর ডালির নাম বাটা ।
হলুদ ও সরষের তেলে ডোবানো সুতোকে বাঙালরা ডাকেন বানা তবে ঘটি বাড়িতে বানা শব্দের ꦰতত চল নেই ।ঘটি বাড়ির নিয়ম অনুসারে ষষ্ঠী তিথিতে উপোস ভঙ্গের পর সবাই নিরামিষ খাবেন। শুকনো আঁচে নাড়িয়ে নেওয়া চিঁড়ের উপর ঘন ক্ষীরের প্রলেপ গাছ পাকা আম দিয়ে খাওয়া হয়।
নিয়ম-কানুন আদর আপ্যায়নের ক্ষেত্রে ঘটি বাড়িতে জাম🐟াইষষ্ঠীর ভোজ🐈ের আয়োজন হয় অন্য দিন। জামাই ষষ্ঠী ভোজন ছাড়া অসম্পূর্ণ। এখন নিয়মে অনেক পরিবর্তন এসেছে। আগে জামাইষষ্ঠীর অনুষ্ঠানে মাংস ভক্ষণ নিষিদ্ধ ছিল। তবে তালিকায় ছিল মাছ কারণ হিন্দু ধর্মে মাছ মঙ্গল চিহ্ন। তাই ঘটি বাড়িতে এখনো শুভ কাজে মাংসের বদলে মাছ কে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
কলকাতার বিখ্যাত মল্লিক ব๊াড়িতে জামাইষষ্ঠীর প্রীতিভোজে মাংস 🍌থাকে না, তার বদলে তাতে থাকে তোপসে পোনা চিংড়ির অবাধ গতি। শেষ পাতে ক্ষীরের যোগ্য সঙ্গত দেয় আম লিচু ও তাল শাঁস।
রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের পরিবারে জামাইষষ্ঠীর আয়োজন ছিল কিংবদন্তির পর্যায়ে। এখানে জামাইদের আদর-আপ্যায়নের পাশাপাশি বরণ করা হতো মহার্ঘ্য উপঢৌকন দিয়ে, আড়ম্বরে কম যেতেন না জামাইরাও। এই পরিবারের এক কর্তার মেয়ে অন্নপূর্ণা দেবীর স্বামী ঋষিকেশ মুখোপাধ্যায় ছিলেন বৈঁচির রাজা। নানা মসলা দিয়ে সাজা পান মুখে না পুড়লে তার চলতো না। তার পানিরꦺ খিলি গাঁথা হতো সোনার লবঙ্গ দিয়ে। প্রত্যেকবার পান খাওয়ার পর সেই লবঙ্গ পানথেকে ছুড়ে ফেলতেন তিনি। এদিক ওদিক পড়ে থাকা সেই সোনার লবঙ্গ কুড়িয়ে নিত রাজবাড়ির খুদে সদস্যরা।
জামাই ষষ্ঠী পালনের রীতিনীতি নিয়ে হেরফের আছে। জেলা ভেদে বরিশালি পরিবার এই রীতিনীতি থেকে ব্যতিক্রমের বাইরে ছিল। কারণ বরিশাল জেলায় জামাইষষ্ঠী পালনের প্রচলন ছিলনা। ফলে বরিশালের জামাইরা শাশুড়ির হাতের সেবা যত্ন থেকে বঞ্চিতই থাকতো। তবে ভোজন পর্বে বাঁধাꦜ ছিল না। জামাইকে ঠকাতেই কোন এক বনেদি পরিবারের গিন্নির ফরমাইসে হুগলির সূর্য মোদক বানিয়েছিলেন জলভরা তাল শাঁস। নতুন মিষ্টি দেখে আগ্রহ ভরে যেই জামাই কামড় বসিয়েছে সেই নতুন পাঞ্জাবী তার মাখামাখি হয়েছে গাঢ় রসে। বাংলার জামাইদের কাছে জামাইষষ্ঠী পরম বিলাসের।
এবছর জামাইষষ্ঠী ১০ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ (বাংলা) ২৫ শে মে (ইংরেজ🎀ি) বৃহস্পতিবার। ষষ্ঠী তিথি শুরু হচ্ছে ৩টে ২৮ মিনিট রাত্তির ১০ই জৈষ্ঠ ১৪৩০। ষষ্ঠী তিথি শেষ হচ্ছে ৫ টা ২৬ মিনিট বিকেল ১১ই জৈষ্ঠ ১৪৩০।