আমফানের ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া নিয়ে যে দুর্নীতি হয়েছে, তা কার্যত স্বীকার করে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে তিনিꦍ আশ্বাস দিলেন, দ্রুত সেই ভুলভ্রান্তি শুধরে নেওয়া হবে।
গত ২০ মে রাজ্য়ে আমফানে আছড়ে পড়ার পর রাজ্যের তরফে দুর্গতদের জন্য ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করা হয়। কিন্তু সেই ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কয়েক জায়গায় বিজেপির নাম জড়ালেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তৃণমূল কংগ্রেসের নাম জড়িয়েছে। অনেক জায়গায় আদতে যাঁদের ক্ষতি হয়েছে, তা✃ঁদের পরিবর্তে পাকা বাড়ির মালিক, দু'বছর আগে পান বরজ চাষ করা লোকজন টাকা পেয়েছেন। বঞ্চিত হয়েছেন প্রকৃত দুর্গতরা। তার জেরে বিক্ষোভ দেখিয়েছে আমজনতা। চাপের মুখে পড়ে কোথাও তৃণমূল নেতাকেꦿ কান ধরে দোষ স্বীকার করতে হয়েছে, কোথাও আবার ভয়ে দোষ কবুল করে নিয়েছেন। আমফানের দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। এমনকী রাজ্যকে আক্রমণ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
এই অবস্থায় সোমবার নবান্নে মুখ্য়মন্ত্রী বলেন, ‘আমফান বিপর্যয়ের টাকাটা আমরা একটু তাড়াতাড়ি পাঠিয়েছিলাম বলে কোথাও কোথাও যারা ভুলভ্রান্তি করেছিল, সেটা আমরা শুধরে নিচ্ছি এবং কেউ বঞ্চিত হবেন না। এটুকু জেনে রেখে দেবেন। এটুকু ভরসা-আস্থা আমার উপর রাখবেন।’ পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী জানান, যাঁরা আসলে ক্ষতির মুখে পড়েছেন, তাঁরা যেন বঞ্চিত না হন, সেদিকে খেয়াল রাখতে, মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকে নির্দেশ দিয়েছ༒েন।
মমতা হঠাৎ ‘স্বীকারোক্তি’-র পথ বেছে নেওয়ায় অবশ্য একেবারেই অবাক নয় রাজনৈতিক মহল। বরং বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে কাটমানি কাঁটায় বিধ্বস্🅠ত হয়েছিল তৃণমূল। তার ফায়দা তুলেছিল বিজেপি। ঠিক একইভাবে আগামী বছর বিধানসভা ভোটের আগে আমফান দুর্নীতি স্বভাবতই ঘাসফুল শিবিরে রক্তচাপ বাড়িয়েছে। দলের নীচুতলার নেতাকর্মীদের নাম যেভাবে দুর্নীতিতে জড়িয়েছে, তাতে খুব একটা স্বস্তিতে থাকবেন না কালীঘাট নিবাসী। সেজন্য বাধ্য হয়েই মমতা অনিয়ম বা দুর্নীতি কার্যত মেনে নিয়েছেন বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।
একইসঙ্গে সোমবার আমফান দুর্গতদের তাঁর উপর ভরসা রাখার আবেদন জানিয়েছেন মমতা। রাজনৈতিক মহলের মতে, মমতা বোঝাতে চাইছেন নীচুতলা থেকে দুর্নীতি হয়েছে। সেখানে তাঁর কোনও যোগ নেই। অর্থাৎ নিজের মুখেই আস্থা রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী। ঠিক যেমনটা কাটমানি বিতর্কের সময় নিজের নামে ভোট চেয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এবার সেই কৌশলেই তিনি হাঁটলেন বলে ধারণা সংশ্লিষ্ট🔯 মহলের। তবে গতবার কিন্তু সেই কৌশল কিছুটা হলেও ধাক্কা খেয়েছিল🍒, অত্যন্ত বিজেপির আসন সংখ্যা সেটাই প্রমাণ করেছে। বিধানসভা সেই একই রণনীতি কতটা কাজে দেয়, সেটা সময়ই বলবে।