দেশজুড়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ চালু করা হয়েছে। তা শুনে প্রথমে উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন মতুয়ারা। কিন্তু যত সময় যেতে শুরꦗু করল তত তাঁরা বুঝতে পারলেন এসবের পিছনে আছে অন্য খেলা। নাগরিকত্ব চলে যাবে না তো? এখন এই প্রশ্নই তাঁদের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া থেকে শুরু করে এখন কোচবিহারেও একই আতঙ্ক দানা বেঁধেছে। এটা রাজবংশী প্রধান জেলা। এখানের নমঃশূদ্রদের মধ্যেও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। দু’দিন আগে শান্তনু ঠাকুরদের সংগঠন ‘অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের’ দেওয়া পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে বেশ কিছু মানুষ ভিড় জমান। বনগাঁর ঠাকুরবাড়িতে তাঁরা জানান, নতুন আইনের নিয়ে সংশয় ও উদ্বেগ আছে। তার জন্যই তাঁরা এই কার্ড সংগ্রহ করতে এ👍সেছেন।
সত্যিই কি কোথাও ধোঁয়াশা রয়েছে? এই বিষয়টি নিয়ে মানুষের মধ্যে চর্চা এখন তুঙ্গে উঠেছে। তবে শান্তনু ঠাকুর বলেন, ‘১৯৭১ থেকে ২০১৪ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে যাঁরা আমাদের দেশে এসেছেনꦜ, তাঁদের নাগরিকত্বের আবেদন করতে হবে। কারণ তখনকার ইন্দিরা–মুজিব চুক্তি অনুযায়ী, ভারতে আসা মানুষ উদ্বাস্তু ও শরণার্থী। তাঁরা ভোট দিতে পারলেও ভারতের প্রকৃত নাগরিক নন।’ এই মন্তব্যে আরও সংশয় বাড়ল। তাহলে এত বছর ধরে বসবাস করে শেষে পথে বসতে হবে! শান্তনু ঠাকুরের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এই মানুষজন ভারতের নাগরিক বলে কোনও নথি নেই। তাই তাঁরা উদ্বাস্তু।
এদিকে সামনে লোকসভা নির্বাচন। যাঁদের উদ্বাস্ꦐতু বলা হচ্ছে তাঁরা তো ভোট দেবেন। তাহলে কি তাঁরা নাগরিক নন? এমন প্রশ্নও উঠছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলেছেন, এসব কেন্দ্রীয় সরকারের ভাঁওতা। সিএএ পোর্টালে আবেদন করলেই আগে নাগরিকত্ব চলে যাবে। সুতরাং সম্পত্তি এবং চাকরি হারাতে হবে। তারপর নথি যাচাই করে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। সেটা🐎 যে দেওয়া হবেই এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই। মুখ্যমন্ত্রীর এই কথার পর মতুয়ারা সংশয়ে পড়ে গিয়েছে। এই আবহে নিজেদের পালে হাওয়া টানতে শান্তনু ঠাকুর কার্ড দিয়ে রাখছেন। যদিও এই কার্ড সরকারি নথি নয়। এই কারণে সমস্যা দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘আদালতের নির꧑্দেশ কি খেলার জিনিস?’ পুলিশ কমিশনারকে ভর্ৎসনা বিচারপতি মান্থার
অন্যদিকে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে এখন বেশিরভাগ মানুষই চাইছেন এই সিএএ বাতিল করা হোক। মতুয়াদের কথায়, ‘আমরা চেয়েছিলাম, ২০১৪ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে মতুয়া উদ্বাস্তু মানুষজনকে কোনওরকম শর্ত ছাড়া নাগরিক ঘোষণা করা হোক। এখানে নিঃশর্ত ন🅰াগরিকত্বের কথা বলা নেই। তাই উদ্বেগের মধ্যে আছি। আবেদন করার আগে সকলে মিলে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেব।’ এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর বলেন, ‘অমিত শাহꦉরা বলছেন, নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দিচ্ছি। সেক্ষেত্রে এত শর্ত কেন? ৯ রকম নথি দিতে হবে। এত নথি কার কাছে আছে?’
এছাড়া অন্যান্য রাজ্য থেকেও আওয়াজ উঠতে শুরু করেছে। সকলেরই দাবি, ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়া যায় না। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হাবড়ায় সভা করতে এসে এই কথা বলে গিয়েছেন। কদিন আগেই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ 🏅দেওয়া মুকুটমণি অধিকারী বলেন, ‘মতুয়ারা বরাবরই নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবিদার ছিলেন। বিজেপির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রী💞য় সরকার কালা কানুন পাশ করে মতুয়াদের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করেছে। এখন নতুন আইন পাশ করে বাড়তি জটিলতা বাড়িয়েছে। যাঁরা অন্য দেশ থেকে কার্যত এক কাপড়ে এদেশে চলে এসেছিলেন, তাঁদের কাছে নথি কেমন করে থাকা সম্ভব?’