গোপাল দলপতির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নমিনি হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়। বড়বাজারের একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে আরমান নামে অ্যাಞকাউন্ট খোলেন গোপাল দলপতি। আর সেখানে হৈমন্তীকে নমিনি করেছিলেন গোপাল দলপতি ওরফে আরমান। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন𒅌্ত ওই অ্যাকাউন্টের নমিনি ছিলেন হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায় বলে তদন্তকারী সংস্থার দাবি। আর ইডির চাঞ্চল্যকর দাবি, নিয়োগ দুর্নীতির কয়েক হাজার কোটি টাকা ‘রহস্যময়ী’র হেফাজতে গচ্ছিত রয়েছে।
এদিকে গোপাল দলপতি বা হৈমন্তীদেবী—কারও হদিশ এখনও পায়নি তদন্তকারী সংস্থা। তবে অফিসাররা জানতে পেরেছেন, মডেল–অভিনেত্রী হিসেবে পরিচিত ওই যুবতীর সঙ্গে রাজ্যের শাসকদলের প্রভাবশালী অংশের ভাল যোগাযোগ রয়েছে। স্বামী গোপাল দলপতির সঙ্গে মিলে তিনি একডজন কোম্পানি খুলেছিলেন। সেগুলির মাধ্যমে নিয়োগ দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করা হয়েছে। কেনা হয়েছে একাধিক জমি ও✤ ফ্ল্যাট। আর হৈমন্তীর মা দাবি করছেন, গোপাল দলপতির সঙ্গে মেয়ের বিয়ে হলেও পরে ডিভোর্স হয়ে যায়।
অন্যদিকে বেহালায় হৈমন্তী ও গোপালের ফ্ল্যাটেও গিꦯয়ে দরজা তালাবন্ধ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। আর ফ্ল্যাট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দাবি করছেন, জানুয়ারি মাসের শেষেও দেখা গিয়েছিল গোপাল–হৈমন্তীকে। পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরের বাসিন্দা গোপাল দমদমে অঙ্কের টিউশন শুরু করেন। সেই সূত্রে শিক্ষা জগতের কিছু কর্তাদের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। বিভিন্ন কোর্সে ভর্তি করিয়ে দেওয়া বা সার্টিফিকেট পাইয়ে দেওয়ার নাম করে তিনি টাকা তুলতে শুরু করেন। আর্থিক অবস্থা একটু ভাল হলে তিনি দমদম ছেড়ে বেহালায় চলে আসেন। সেখানে তাঁর সঙ্গে কুন্তল, তাপস মণ্ডল –সহ নিয়োগ দুর্নীতির মাথাদের পরিচয় হয়। ২০১৬ সাল থেকে পুরোপুরি ‘দুর্নীতি’তে💝 নেমে পড়েন গোপাল। চাকরিপ্রার্থীদের থেকে কোটি কোটি টাকা তোলেন তিনি। সেই টাকা গচ্ছিত রাখা হতো হৈমন্তীর কাছে।
ইডি তদন্তে নেমে তথ্য পেয়েছে, বড়বাজারে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে এই টাকা রাখার জন্য অ্♌যাকাউন্ট খোলেন গোপাল। ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত অ্যাকাউন্টের নমিনি ছিলেন হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়। এমনকী কেন্দ্রীয় বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রকের অধীনে রেজিস্ট্রার অফ কোম্পানিসের নথিতে উল্লেখ আছে একটি কোম্পানির নাম— হৈমন্তী অ্যাগ্রো প্রোডাক্টস প্রাইভেট লিমিটেড। ২০১৩ সালের মার্চ মাসে তৈরি হওয়া এই কোম্পানির ডিরেক্টর পদে দু’জন রয়েছেন। প্রথম নাম হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের। আর দ্বিতীয় নাম গোপাল দলপতির। অফিসের ঠিকানা ডালহৌসি। ইডির দাবি, তাঁরা বিয়ে করে টালিগঞ্জে ফ্ল্যাট কিনে থাকতেন। গোপালের অবশ্য এটি দ্বিতীয় বিয়ে। গোপালের সঙ্গে পরিচয়ের পর রকেটের গতিতে উত্থান হয় হৈমন্তীর। শাসকদলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা কাজে লাগিয়ে টলিউডে জায়গা করেন তিনি। অভিনয় করেন ‘অচেনা উত্তম’, ‘জাল’ এবং ‘আনটোল্ড’ নামে তিনটি ছবিতে। নিয়োগ দুর্নীতির টাকায় সিনেমা প্রযোজনার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন হৈমন্তী। এই বিপুল অর্থের উৎস সন্ধানে নেমেছেন তদন্তকারীরা।