কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী নিরঞ্জন জ্যোতির সঙ্গে গতকাল বৈঠক করার কথা ছিল তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের। এই আবহে মন্ত্রী নিরঞ্জন দাবি করেন তিনি নাকি তৃণমূল প্রতিনিধি দলের জন্য আড়াই ঘণ্টা অপেক্ষা করেন গতকাল। তবে অভিষেকদের ততক্ষণে আটক করে নিয়ে গিয়েছে দিল্লি পুলিশ। এদিকে এরই মাঝে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে গিয়ে দেখা করে আসেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। দি꧂ল্লিতে সেই বৈঠক সেড়ে কলকাতায় ফেরেন শুভেন্দু। ততক্ষণে থানা থেকে অভিষেকদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে।🐲 এই আবহে তৃণমূল নেতাদের আটক হওয়া নিয়ে কলকাতায় এসে মুখ খোলেন শুভেন্দু। বলেন, 'পাঁচ জনকে যেতে বলা হয়েছিল, ৪০ জন যেতে চান। ওটা হাট না ডায়মন্ড হারবার?' শুভেন্দু জানান, তাঁর সঙ্গে মন্ত্রীর বৈঠকের পরই সময় দেওয়া হয়েছিল তৃণমূল নেতদের। এদিকে তৃণমূল নেতাদের আটক করা নিয়ে শুভেন্দু বলেন, 'আটকও করা হয়েছে, আবার বন্ড পেপারে সই করিয়ে ছেড়েও দিয়েছে। এতে আর কী।'
গতকাল দিল্লির কৃষিভবনে কী ঘটেছে? গতকাল সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে দিল্লির কৃষিভবনে গিয়েছেন তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। অভিষেক দাবি করেন, প্রথমে বেলা ১২টার সময় দেখা করার জন্য সময় দেওয়া হয়েছিল তাঁদের। পরে প্রতিমন্ত্রী জানান, তাঁর ফ্লাইট দিল্লিতে অবতরণ করবে বিকেল পাঁচটায়। এই আবহে সন্ধ্যা ৬টায় তিনি দেখা করবেন তৃণমূল প্রতিনিধিদের সঙ্গে। কিন্তু সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা বেজে গেলেও তৃণমূল প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করতে চাননি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এর আগে নাকি মন্ত্রী বিকেল ৪টের সময় বিজেপির শুভেন্দু অধিকার♔ীর সঙ্গে দেখা করে কথা বলেন। এই আবহে কৃষি ভবনের ভেতরেই ধর্নায় বসে পড়েন তৃণমূল নেতারা। এরপরই শুরু হয় ধুন্ধুমার কাণ্ড। পুলিশ চ্যাংদোলা ক𝓰রে সেখান থেকে তুলে নিয়ে যায় তৃণমূল সাংসদদের। আটক করা হয় তাদের। পরে অবশ্য রাতেই ধৃত তৃণমূল নেতাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
এদিকে এই ঘটনার পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, তাঁরা মাথা নত করবেন না। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি পোস্ট করেন অভিষেক। সেখানে দেখা যাচ্ছে, গাড়ির ফুটবোর্ডে উঠে সমর্থকদের উদ্দেশে স্লোগান দিচ্ছেন তিনি। সেই ছবিরই ক্যাপশনে তিনি ল♊েখেন, 'জমিদারদের কাছে মাথা নত করবে না বাংলা।' এদিܫকে দিল্লিতে শাহের পুলিশের হাতে 'হেনস্থার' শিকার হওয়ার প্রতিবাদে কলকাতায় কর্মসূচি পালনের ডাক দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার কলকাতায় রাজভবন অভিযানের ডাক দিয়েছেন তিনি। ওই দিন বেলা ৩টের সময় রাজভবন অভিযান হবে বলে ঘোষণা করেন অভিষেক।
অপরদিকে এই ঘটনায় বিজেপির তীব্র নিন্দা জানান তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় এক দীর্ঘ পোস্টে মমতা লেখেন, 'আজ গণতন্ত্রের জন্য একটি অন্ধকার, অশুভ দিন। বাংলার জনগণের প্রতি বিজেপির ঘৃণা, দরিদ্রদের অধিকারের প্রতি বিজেপির অবজ্ঞা দেখা গেল আজ। পাশাপাশি বিজেপি যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সম্পূর্ণ ভাবে বিসর্জন দিয়েছে, তাও প্রকাশ পেল আজ।' মমতা আরও লেখেন, 'প্রথমত, তারা নির্লজ্জভাবে বাংলার দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ হওয়া গুরুত্বপূর্ণ তহবিল আটকে রেখেছিল। এবং যখন আমাদের প্রতিনিধিদল দিল্লিতে পৌঁছে শান্তিপূ🌠র্ণভাবে প্রতিবাদ করতে চায় তখন তারা আটকায়। রাজ্যের মানুষের দুর্দশার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ আমরা। তাই আমাদের সঙ্গে নির্মমতা দেখাল কেন্দ্র - প্রথমে রাজঘাটে এবং তারপরে কৃষি ভবনে।'