পশ্চিমবঙ্গের আমফান বিধ্বস্ত পরিবারের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে অর্থ ট্রান্সফার করার সিদ্ধান্তের পিছনে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্ꦦযোপাধ্যায়ের প্রভাব দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। 🦋;
শুক্রবার রাজ্যের ৫ লাখ আমফান আক্রান্ত পরিবারের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পরিবারপিছু ২০,০০০ টাকা জমা দেওয়ার ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ছাড়াও মনরেগা প্রকল্পের বকেয়া বেতন বাবদ প্রতি পরিবারকে ২৮,০০০ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন মুখ্যমন্ত্র🅺ী।
এই বিষয়ে রাজ্যের সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী তথা শীর্ষস্থানীয় তৃণমূল নেতা তাপস রায় বলেন, ‘বেশ কিছু কাল যাবৎ নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় এই কথাই বলছিলেন। এমনকি এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকেও তিনি অনুরূপ পরামর্শ দেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর পরামর্শ মেনে তা বাস্তবে প্রয়োগ করেছেন। কেন্দ্র ও অন্যান্য রাজ্যগুলিও এই পরামর্শ মানতে বাধ্য হবে, কারণ এটাই একমাত্র রাস্ত♏া।’
২০১৯ সালে নোবেল সম্মানে ভূষিত হন ভারতীয়-আমেরিকান অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গেই এই পুরস্কার লাভ কဣরেন তাঁর স্ত্রী এস্থার ডাফলো এবং মাইকেল ক্রেমার। কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের প্রতি অভিজিতের পরামর্শ ছিল, দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা করতে মোট জনসংখ্যার ৬০%-এ থাকা দরিদ্র নাগরিকদের হাতে নগদ দিতে হবে। প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর সঙ্গে আ🌸লোচনায় তিনি বলেছিলেন, ‘অর্থনীতির হাল ফেরাতে সবচেয়ে সহজ উপায় হল খরচের হার বাড়ানো। এর দ্বারা অর্থনীতি চাঙ্গা হয়।’
করোনা সংক্রমণ অতিমারি মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা কমিটির প্রধান হিসেবে এর আগেই অভিজিৎ বিনায়ককে বসিয়েছেন মমতা। ওই কমিটিতে রয়েছেন WHO-এর প্রাক্তন আঞ্লিক ডিরেক্টর স্বরূপ সরকার, আমেরিকার প্রাক্তন সিডিসি টম ফ্রাইডেন, বিশ𒁃্ব ব্যাঙ্কের অর্থনীতিবিদ যিষ্ণু দাস এবং বিনামং সংস্থার প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব জেভিআর প্রসাদ রাও প্রমুখ।
কলকাতার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থনীতি বিভাগের প্রধান মৌসুমি দত্ত জানিয়েছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই উদ্যোগ খুবই ভালো। যাঁরা দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁদের হাতে অর্থ আসা দরকার। নোবেলজয়ী অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বেশ কয়েকজন অর্থনীতিবিদ এই পরামর্শই দিয়ে আসছেন। যে হেতু রাজ্🍌য সরকারের উপদেষ্টা কমিটির প্রধান অভিজিৎ স্বয়ং, সেই কারণে তাঁর পরামর্শ রাজ্য সরকার গ্রহণ করতেই পারে।’
যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছে রাজ্যের বিরোধী গোষ্ঠী। ভারতীয় জনতা পার্টির জাতী🐠য় সম্পাদক রাহুল সিনহা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘এর আগেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত তা দেওয়া হয়নি। সমস্ত ক্ষেত্রে তাঁর সরকার চূড়ান্ত ব্যর্থ হওয়ার পরে এখন লোকের হাতে টাকা দিয়ে তাঁদের মন জয় করার আশা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদি কোভিড-এই লোকে মারা যায়, তা হলে টাকা দিয়ে কী করবে?’
হাতে নগদ দেওয়া ছাড়াও দুর্যোগ মোকাবিলায় খাদ্যপণ্য সংগ্রহের উদ্দেܫশে ৩-৬ মাসের জন্য অভাবীদের অস্থায়ী রেশন কার্ড মঞ্জুর করার পরামর্শও দিয়েছেন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়।