পুরনো নিয়মেই নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিল ভারতীয় রেল। আটটি রেলওয়ে সার্ভিসকে মিশিয়ে যে 'ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ম্যানেඣজমেন্ট সার্ভিস' (IRMS) চালু করা হয়েছিল, তা থেকে কার্যত ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে পুরনো মডেলেই ফিরে গেল। ২০১৯ সালের আগে যেভাবে দুটি আলাদা পরীক্ষার মাধ্যমে অফিসারদের নিয়োগ করা হত, সেভাবেই এই বছর থেকে নিয়োগ করা হবে। অর্থাৎ প্রাক-কোভিড মহামারীর সময়ের মতো সিভিল এবং ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়োগ পরীক্ষা ফিরে আসছে। ইতিমধ্যে 'সিভিস সার্ভিসেস এক্সাম' (CSE) এবং 'ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস এক্সাম'-র (ESE) মাধ্যমে রেলওয়ে অফিসারদের নিয়োগ করার সিদ্ধান্তে অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
কিন্তু ২০১৯ সালে যে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছিল, সেখান থেকে ‘ইউ-টার্ন’ নেওয়া হল কেন? সংশ্লিষ🐻্ট মহলের মতে, রেলের আমলাতন্ত্রে দীর্ঘদিন ধরে যে দফতরের ধারা চলে আসছিল, তাতে ইতি টানতে IRMS চালু করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। যা রেলের নিয়োগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন হিসেবে বিচার করা হচ্ছিল।
‘নয়া’ নিয়মে নিয়োগের ক্ষেত্রে সমস্যা
তবে সেই নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নতুন অফিসার পেতে গিয়ে রীতিমতো সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছিল রেলকে। সেপ্টেম্বরের গোড়াতেও প্রথম ব্যাচের অফিসাররা ট্রেনিং করছিলেন। তার জেরে এমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল যে দৈনন্দিন কাজকর্ম চালানোর জন্য অবসরপ্রাপ্তদের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হয়েছিল রেল কর্তৃপক্ষ। সেভাবে সাময়িকভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়াꦐর পরিকল্পনা করা হলেও দীর্ঘমেয়াদি ক্ষেত্রে ওরকমভাবে জোড়াতাপ্পি দিয়ে কাজ চালানো দুষ্কর ছিল। আর তাই পুরনো নিয়মেই ফিরে গিয়েছে রেল।
শূন্যপদ পূরণের উপরে জোর
কী কারণে সেই 'ইউ-টার্ন' নেওয়া হয়েছে, তা অবশ্য পুরোপুরি খোলসা করা হয়নি। গত শনিবার কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মিবর্গ দফতরের তরফে রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যানকে পাঠানো চিঠিতে জানানো হয়েছে, গত ৩ অক্টোবর রেল মন্ত্রক𝐆 যে সুপারিশ করেছিল, সেটা বিবেচনা করে 'সিভিস সার্ভিসেস এক্সাম' (CSE) এবং 'ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস এক্সাম'-র (ESE) মাধ্যমে নিয়োগের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। আর সেক্ষেত্রে যে টেকনিকাল এবং নন-টেকনিকাল পোস্টে পর্যাপ্ত কর্মীর অভাব আছে, সেটাও যে বিবেচনা করা হয়েছে, তা কর্মিবর্গ দফতরের তরফে জানানো হয়েছে।
তড়িঘড়ি পদক্ষেপ রেলের
ক🃏র্মিবর্গ দফতরের অনুমোদন পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রেল মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, ইতিমধ্যে ২০২৫ সালের জন্য 'ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস এক্সাম'-র (ESE) নিয়ম জারি করে দিয়েছে টেলিকমিউনিকেশন মন্ত্রক। আবেদন জমা দেওয়ার শেষদিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ৮ জানুয়ারি। সেই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যাতে রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়োগ করতে পারে, সেই অনুরোধ জানানো হয়েছে। প্রার্থীদের কথা বিবেচনা করে আবেদনের সময়সীমা বাড়ান✤োর অনুরোধও করেছে রেল মন্ত্রক।
‘নয়া’ নিয়ম বাতিল হয়নি, দাবি সরকারের
সেইসবের মধ্যেই কর্মিবর্গ দফতরꦬের তরফে এটা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, ২০১৯ সালের মন্ত্রিসভা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, সেটাকে মোটেও লঙ্ঘন করা হচ্ছে না। যদিও সেই ব্যাখ্যার প্রসঙ্গে রেলওয়ে আধিকারিকদের বক্তব্য, এখন যে প্রক্রিয়ায় নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেটা পুরনো দিনের মতোই। এটা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে পুরো ‘ইউ-টার্ন’ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।